সৈয়দ শামসুল হক। ফাইল চিত্র।
জবাব দিয়ে দিয়েছেন লন্ডনের ডাক্তাররা। আত্মীয় বন্ধুদের মন খারাপ। কিন্তু তিনি অবিচল। যে জন্মায় তাকে মরতেই হয় একদিন। কিন্তু মরার আগে মরে যাওয়ার মানুষ সৈয়দ শামসুল হক নন।
ফুসফুসে কর্কট রোগের ছোবল বসেছে অনেক দিন আগেই। উন্নত চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশের সব্যসাচী লেখক গিয়েছিলেন লন্ডনের হাসপাতালে। কিন্তু লাভ হয়নি খুব একটা। সেখানেও চিকিত্সকরা জানিয়ে দিয়েছেন, আর কিছু করার নেই। তিন মাস পর তাই ফিরে এলেন দেশে।
‘নুরলদীনের সারাজীবন’, ‘বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগণ’, ‘বৈশাখে রচিত পঙতিমালা’র লেখকের শরীরের এই খবরে খুব স্বাভাবিক ভাবেই গোটা বাংলাদেশের মন খারাপ। মুষড়ে আছেন শিল্প সাহিত্য জগতে তাঁর অসংখ্য ভক্তের দল।
সৈয়দ শামসুল হকের স্বাস্থ্যের অবনতির কথা ফেসবুকে পোস্ট করে জানিয়েছেন বাংলাদেশের শিল্প সাহিত্যের আর এক দিকপাল নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু।
দেশে ফেরার পথে হিথরো বিমানবন্দরে সৈয়দ শামসুল হক। ছবি: অনুজিত সরকার।
নাসিরউদ্দিন ইউসুফ লিখেছেন- “বাংলা শিল্প সাহিত্য সাংস্কৃতিক ইতিহাসের প্রধানতম এ কবি নাট্যকার বিজয়ীর মত ফিরলেন মৃত্যু পরোয়ানা মাথায় নিয়ে । চোখে অশ্রু, মুখে নুতন নাটক লেখার প্রত্যয় নিয়ে ধীরে অপেক্ষমান বিমানে আরোহন লক্ষ্যে অদৃশ্য হলেন প্রিয় হকভাই।। পেছনে আমরা মন খারাপ করে হিথরো বিমানবন্দরে পড়ে থাকলাম । কানে তখনও বাজছে তাঁর শেষ কথা- ‘নূতন নাটক লিখছি... নাম শেষ যোদ্ধা’।” গাড়িতে ফেরার পথে নাসিরউদ্দিন ইউসুফের মোবাইলে হক ভাইয়ের মেসেজ- তোমার সাথে নাটক করব।
শুক্রবার গভীর রাতে লন্ডনে নাসিরউদ্দীন ইউসুফকে ফোন করলে তিনি আনন্দবাজারকে বললেন- “হক ভাই তার মনের শক্তিতে একটুও ভাঙেননি। সে কারণেই আশা- হক ভাইয়ের কলম চলমান থাকবে। অসুখ যতো বড়োই হোক- হক ভাই হাল ছাড়ার মানুষ নন।”
কবি এখন কাটাতে চান নিজ বাসভূমে। জল-কাদায় নিমগ্ন বাংলাদেশেই। বন্ধু আর স্বজনদের সান্নিধ্যে। তবে সব কিছুর উপর তো নিজের লেখা। ক্যানসারকে চ্যালেঞ্জ করে আরও অনেক কাল চলবে তাঁর কলম। দুই বাংলায় ছড়িয়ে থাকা তাঁর অনুরাগীদের এটাই প্রার্থনা।
আরও পড়ুন:
চিঠি লিখে ঢাকার রাস্তায় তিন কোটির গাড়ি রেখে গেল কে?