Manipal Hospitals

প্রস্টেট ক্যানসার হওয়া মানেই মৃত্যু নয়, সমাধান রয়েছে বিশেষজ্ঞদের হাতেই

প্রস্টেট ক্যানসার একটি মারণরোগ, বিশ্ব জুড়ে প্রায় ৬ শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন। ভারতে প্রতি ১ লক্ষ পুরুষে ১০ থেকে ১১ জন এতে আক্রান্ত হন।

এবিপি ডিজিটাল ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:২৭
Share:

প্রস্টেট ক্যানসার (প্রতীকী চিত্র)

যত দিন যাচ্ছে প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এই ক্যানসার নিয়ে সচেতনতটা বৃদ্ধি পাওয়া জরুরি। সম্প্রতি মণিপাল হাসপাতাল, ঢাকুরিয়ার চিকিৎসকেরা একত্রিত হয়ে এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা, প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকরণ এবং সময়মতো চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন কনসালট্যান্ট অনকোলজিস্ট এবং ইউরো অনকোলজিস্ট বাস্তব ঘোষ, সিনিয়র কনসালট্যান্ট, রেডিয়ো অনকোলজিস্ট সৌমেন বসু এবং কনসালট্যান্ট মেডিকেল অনকোলজিস্ট, আশুতোষ দাগা।

প্রস্টেট ক্যানসার একটি মারণ রোগ, বিশ্ব জুড়ে প্রায় ৬ শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন। ভারতে প্রতি ১ লক্ষ পুরুষে ১০ থেকে ১১ জন এতে আক্রান্ত হন। “সেই কারণে আমার মনে হয় যে এই ধরণের আলোচনা এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করার যে প্রয়াস তা অনেক বেশি জরুরি। যাতে কি না আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করতে পারি এবং তাতে তাদের সফলভাবে চিকিৎসা করতে পারি, যাতে রোগ নিরাময় করা সম্ভব হয়”, জানালেন চিকিৎসক বাস্তব ঘোষ।

কিন্তু এই প্রস্টেট ক্যানসার কী ভাবে সহজে শনাক্ত করা যায়?

চিকিৎসক আশুতোষ দাগা বলেন, “এই রোগের নির্দিষ্ট কোনও উপসর্গ থাকে না। সমস্যা তখনই হয় যদি কোনও উপসর্গই না বোঝা যায় তাহলে আগে থেকে শনাক্ত করব কী ভাবে। ক্যানসার আগে থেকে শনাক্তকরণের জন্য স্ক্রিনিং একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু সমস্যা হল প্রস্টেট ক্যানসারের স্ক্রিনিং খুব বেশি প্রতিষ্ঠিত নয়।”

তিনি জানান ৫০ থেকে ৭০ বছরের পুরুষদের জন্য পিএসএ ব্লাড টেস্ট প্রস্টেট ক্যানসার স্ক্রিনিংয়ের সহজতম উপায়গুলির একটি।

বিশদে জানতে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করে ভিডিয়োগুলি দেখুন:

প্রস্টেট ক্যানসার নিয়ে আলোচনায় চিকিৎসক বাস্তব ঘোষ, সৌমেন বসু এবং আশুতোষ দাগা

কিন্তু ‘পিএসএ’ যদি বেশি হয় তা হলে তার পরের ধাপ কী?

চিকিৎসক সৌমেন বসু বলেন, “পিএসএ যদি বেশি থাকে তা হলে সবসময়েই একজন ইউরোলজিস্ট অথবা ইউরো অনকোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ‘পিএসএ’ বেশি থাকা মানেই ক্যানসার নয়, সেই কারণে ইউরোলজিস্ট যিনি দেখছেন তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন পরবর্তী ধাপ কী হবে। সেখানে কিছু রেডিয়োলজিক্যাল পরীক্ষা থাকতে পারে। যদি উনি মনে করেন বায়োপসি প্রয়োজন তা হলে তা করতে হবে।”

তাই ‘পিএসএ’ বেশি হলেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ভারতে ‘পিএসএ’ বাড়ার সাধারণ কারণ হিসেবে অনেক সময় প্রস্টেট ইনফেকশন দেখা যায়।

চিকিৎসক বসু বলেন, “যখন দেখা যায় যে রোগটি থেকে ঝুঁকি অনেক বেড়ে গেছে অথবা শরীরে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে তখন লোকাল ট্রিটমেন্ট দিয়ে রোগীকে সারানো যায় না। তখন আমাদের এমন কিছু ওষুধ দিতে হয় যেটা সারা শরীরে কাজ করে।”

এর মধ্যে হরমোন থেরাপির সঙ্গে সঙ্গে সার্জারিও রয়েছে। তবে নতুন ও আধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে এখন রোগ নির্ণয় করা অনেক সহজ হয়েছে। রেডিয়েশন থেরাপির ক্ষেত্রেও অনেক উন্নতি হয়েছে। আগে যেখানে কোবাল্ট মেশিন ব্যবহার করা হত, এখন ‘আরটি’, ‘আইজিআরটি’ এবং ‘ভিএমএটি’-এর মতো আধুনিক পদ্ধতিতে ক্যানসারকে আরও নির্ভুল ভাবে চিহ্নিত করা যায়।

স্টেজ ৪ প্রস্টেট ক্যানসারের ক্ষেত্রে হরমোন থেরাপি মূল চিকিৎসা, যা প্রায়শই কেমোথেরাপি বা ওরাল ট্যাবলেটের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ‘ট্রিপলেট থেরাপি’ অর্থাৎ হরমোন থেরাপি, কেমোথেরাপি ও ওরাল ওষুধ মিলিয়ে চিকিৎসায় ভাল ফল পাওয়া যাচ্ছে।

নতুন চিকিৎসা যেমন, ‘ওলাপারিব’ এবং ‘লুটেশিয়াম-ভিত্তিক নিউক্লিয়ার মেডিসিন’, সেইসব রোগীদের ক্ষেত্রেও আশাজনক ফল দিচ্ছে যাঁদের ক্ষেত্রে প্রচলিত চিকিৎসা কাজ করছে না। প্রস্টেট ক্যানসারের ক্ষেত্রে যদি তা স্টেজ ৪ হয় এবং যদি অনেকগুলি ওষুধ ব্যর্থ হয় তা হলেও কিছু না কিছু চিকিৎসা আছে। যার ফলে প্রস্টেট ক্যানসার আক্রান্ত রোগীরাও একটি সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন উপভোগ করতে পারেন।

এই প্রতিবেদনটি ‘মণিপাল হাসপাতাল’-এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন