ফের ২৬ হাজার ছাড়াল সেনসেক্স

আগের দিন ৫৭৫ পয়েন্ট বাড়ার পরে এ দিন সেনসেক্স উঠল আরও ৪৮৫.৫১ পয়েন্ট। অর্থাৎ দু’দিনের লেনদেনে এই সূচকের বৃদ্ধি হাজার পয়েন্টে ছাড়িয়ে গেল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৬ ০৩:৩৭
Share:

আরও চাঙ্গা হল শেয়ার বাজার। বৃহস্পতিবারও বড় মাপের উত্থান হল সূচকের।

Advertisement

আগের দিন ৫৭৫ পয়েন্ট বাড়ার পরে এ দিন সেনসেক্স উঠল আরও ৪৮৫.৫১ পয়েন্ট। অর্থাৎ দু’দিনের লেনদেনে এই সূচকের বৃদ্ধি হাজার পয়েন্টে ছাড়িয়ে গেল। সেনসেক্স ফের পেরিয়ে গেল ২৬ হাজার পয়েন্ট, থামল ২৬,৩৬৭ পয়েন্টে, যা গত সাত মাসে সবচেয়ে বেশি। সেনসেক্সের সঙ্গে সমান তালে বেড়ে নিফ্টিও আবার ঢুকে পড়ল ৮০০০-এর ঘরে। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের ওই সূচক এ দিন ১৩৪.৭৫ পয়েন্ট বেড়ে থিতু হয় ৮০৬৯.৬৫ অঙ্কে।

শেয়ারের পাশাপাশি এ দিন বেড়েছে টাকার দামও। ডলার লেনদেনের ক্ষেত্রে টাকার দাম ১৬ পয়সা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বিদেশি মুদ্রার বাজার বন্ধের সময়ে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৬৭.১৭ টাকা।

Advertisement

বেশ কিছু দিন পরে ফের শেয়ার বাজার দ্রুত চাঙ্গা হতে শুরু করল কেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পিছনে রয়েছে একাধিক কারণ:

এক, এ বার বর্ষা ভাল হবে বলে বেসরকারি সংস্থা স্কাইমেট এ দিন নতুন করে পূর্বাভাস দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, এ বার বৃষ্টি হবে গড়ের তুলনায় অনেকটাই বেশি। মনে রাখতে হবে গত ২ বছর বছর বর্ষা ভাল হয়নি। তাই এ বার ভাল বর্ষার ইঙ্গিত শেয়ার বাজারকে উৎসাহিত করছে।

দূই, অসমে বিজেপি জেতার ফলে অনেকেই আশায় বুক বেঁধেছেন যে, আর্থিক সংস্কারের পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিতে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার জোরকদমে এগোবে। পণ্য-পরিষেবা কর বিলটি এ বার সংসদে পাশ হবে বলে প্রায় সকলেই আশা করছেন। পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদে এই বিল পাশ করানোর ব্যাপারে ইতিবাচক ভূমিকা নেবেন বলে জানানোয় শেয়ার বাজার মহল বিশেষ খুশি।

তিন, গত আর্থিক বছরে বিভিন্ন শিল্প ও বাণিজ্যিক সংস্থার চতুর্থ ত্রৈমাসিকের আর্থিক ফলাফল যতটা খারাপ হবে বল মনে করা হয়েছিল, ততটা হয়নি। বরং বেশ কিছু ক্ষেত্রে ফলাফল বেশ উৎসাহ জুগিয়েছে শেয়ার বাজারে। যেমন, লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো। চতুর্থ ত্রৈমাসিকে তাদের নিট মুনাফা আগের বারের থেকে ১৮.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় এ দিন সংস্থার শেয়ার দর এক লাফে ১৪ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। ভাল আর্থিক ফল করেছে আইটিসি-সহ আরও বেশ কিছু নামী সংস্থাও। যা শেয়ার বাজারকে চাঙ্গা করার রসদ জুগিয়েছে।

চার, শেয়ার বাজার ওঠার পিছনে তাৎক্ষণিক যে-কারণটি কাজ করেছে, সেটি হল, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়া। ব্রিটেনের বাজারে উন্নত মানের পেট্রোলিয়াম ব্রেন্ট ক্রুডের দাম চলতি আর্থিক বছরে এই প্রথম ব্যারেল প্রতি ৫০ ডলার ছাড়াল।

পাঁচ, এই সব বিষয় অনুধাবন করেই ভারতের বাজারে ফের লগ্নির বহর বাড়িয়েছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলিও। গত দু’দিনেই ওই সব সংস্থা ঢেলেছে ১০৭৪ কোটি টাকা। পিছিয়ে নেই ভারতীয় আর্থিক সংস্থাগুলিও। দু’দিনে তারাও প্রায় সমপরিমাণ (১০৭৫ কোটি টাকা) লগ্নি করেছে।

ছয়, এ দিন ছিল আগাম লেনদেনের সেট্লমেন্টের দিন। যে-সব লগ্নিকারী হাতে শেয়ার না-থাকা সত্ত্বেও তা বিক্রি করে রেখেছেন, তাঁরা এই দিন হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত হতে শেয়ার কিনতে নেমে পড়েন। যা সূচকের পারাকে উপরের দিতে উঠতে সাহায্য করেছে।

শেয়ার বাজারে এবার ক্রমশ ‘বুল’-দের দখলে .যাবে বলে মনে করছেন স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান এবং বাজার বিশেষজ্ঞ কমল পারেখ। তবে তিনি বলেন, ‘‘শুধু দু’টি বিষয় নিয়ে আমি চিন্তিত। প্রথমত, ডলারের সাপেক্ষে টাকার দামের পতন। দ্বিতীয়ত, আমেরিকায় ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার বাড়ানো। যদিও তার সম্ভাবনা কম। তা ছাড়া সেটা হলেও আমার বিশ্বাস, শেয়ার বাজারে তার নেতিবাচক প্রভাব হবে সাময়িক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন