কলকাতাতেও ডানা মেলবে এয়ার এশিয়া

কলকাতাকে ঘাঁটি করতে চায় এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া। সংস্থার দাবি, আগামী বছরের শুরুতেই কলকাতায় ন্যূনতম দু’টি বিমানকে রেখে এখান থেকে দিল্লি, বেঙ্গালুরু, গোয়ার মতো শহরে উড়ান চালাবে তারা। কলকাতার সঙ্গে আকাশপথে যোগ করার জন্য ভাবা হতে পারে অন্য কোনও শহরের নামও।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৬ ০৭:২৮
Share:

পর্যটন মেলায় অমর অ্যাব্রল ও আবীর চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

কলকাতাকে ঘাঁটি করতে চায় এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া। সংস্থার দাবি, আগামী বছরের শুরুতেই কলকাতায় ন্যূনতম দু’টি বিমানকে রেখে এখান থেকে দিল্লি, বেঙ্গালুরু, গোয়ার মতো শহরে উড়ান চালাবে তারা। কলকাতার সঙ্গে আকাশপথে যোগ করার জন্য ভাবা হতে পারে অন্য কোনও শহরের নামও।

Advertisement

টাটা গোষ্ঠীর সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে গত দু’বছর ধরে ভারতের আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে এয়ার এশিয়া। মালয়েশিয়ার এই বিমান সংস্থা সস্তার পরিষেবা দেওয়ার জন্য জনপ্রিয়। ভারতের আকাশেও তারা ইন্ডিগোর মতো সস্তার বিমান সংস্থাকে প্রতিযোগিতার মুখে ফেলেছে। দু’বছর ধরে ভারতের আকাশে উড়লেও এখনও কলকাতার মাটি ছোঁয়নি এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া। অথচ বেঙ্গালুরুকে ঘাঁটি করে তারা গোয়া, দিল্লি, চণ্ডীগড়ের মতো শহরের পাশাপাশি গুয়াহাটিতেও উড়ান চালাচ্ছে।

কলকাতায় যেখানে সস্তার বিমানযাত্রীর সংখ্যা সব চেয়ে বেশি, যে কারণে ইন্ডিগো সব চেয়ে বেশি ব্যবসা পাচ্ছে কলকাতা থেকে, সেখানে সস্তার উড়ান নিয়ে কলকাতায় এত দেরি কেন?

Advertisement

প্রশ্ন শুনে হেসে এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়ার সিইও অমর অ্যাব্রল বললেন, ‘‘পরিকল্পনা তো আছেই। কলকাতা আমাদের জন্য বড় বাজার। এক দিকে উত্তর-পূর্ব ভারতে যাওয়ার গেট। অন্য দিকে, আন্তর্জাতিক ভাবে দেখলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মূল প্রবেশদ্বার। কিন্তু কিছু পরিকল্পনা করতে হচ্ছে কলকাতায় আসার আগে।’’

তবে প্রতিটি ব্যবসার কিছু গোপন দিক থাকে। পরিকল্পনা তারই একটি অঙ্গ। সে কারণেই কথাটা খোলসা করে ভাঙলেন না অমর। জানালেন, এই মূহূর্তে তাদের হাতে রয়েছে ৬টি এয়ারবাস ৩২০ বিমান। এ বছরের শেষে চলে আসবে আরও দু’টি। তার পরে সোজা কলকাতায়। সঠিক সময় বলতে না চাইলেও আকারে-ইঙ্গিতে জানিয়েছেন, সামনের বছরের গোড়াতেই কলকাতাবাসী সস্তার এই উড়ানকে পেয়ে যাবেন দোরদোড়ায়।

এ বছর আনন্দবাজার পত্রিকা যে পর্যটন মেলা ‘ট্যুরিস্ট স্পট’-এর আয়োজন করেছে, সেখানেই হাত মিলিয়েছে এয়ার এশিয়া। শুক্রবার সকালে স্বভূমিতে সেই পর্যটন মেলার উদ্বোধনেই পাওয়া গেল অমরকে। আদতে দিল্লির ছেলে। বহুদিন বিদেশে কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন সম্প্রতি। মালয়েশিয়ায় এয়ার এশিয়ার মূল যে সংস্থা, তার সঙ্গে ছিলেন গত দু’বছর। এ বছরের এপ্রিলে তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়ার।

শুক্রবার পর্যটন মেলার উদ্বোধনে নিজের সংস্থার কথা উল্লেখ করে অমর বলেন, ‘‘আমরা সস্তার টিকিট বিক্রি করি, কারণ আমরা চাই প্রত্যেকে বিমান পরিষেবার সুযোগ পান। আর আমাদের বিমানে যিনি এক বার উঠেছেন, নিশ্চিত করে বলতে পারি, তিনি বারবার ফিরে আসবেন আমাদের কাছে।’’

এ দিনের মেলায় আনন্দবাজার গোষ্ঠীর এমডি দীপঙ্কর দাস পুরকায়স্থ বলেন, ‘‘সামনেই দুর্গাপুজো। ফলে এখনই বেড়ানোর পরিকল্পনা করার সময়! তিন দিনের এই পর্যটন মেলা ভ্রমণপ্রিয় বাঙালিকে তাতে অনেকটাই সাহায্য করবে। এ নিয়ে অষ্টম বার আমরা পর্যটন মেলার আয়োজন করছি। আগামী বছর এই মেলাকে আন্তর্জাতিক একটি রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’’

এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়ার সঙ্গে যৌথ ভাবে আনন্দবাজার পত্রিকার এই পর্যটন মেলায় হাত মিলিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া’-ও। সেখানে নিজেদের পর্যটনের পসরা নিয়ে বসেছে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীর, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গনা, রাজস্থান, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, ছত্তীসগঢ়, দিল্লি, সিকিম, অসমের মতো রাজ্য। রয়েছে এসওটিসি, কক্স অ্যান্ড কিংস, টমাস কুক, ক্লাব সেভেনের মতো ট্রাভেল এজেন্টরা। মেক মাই ট্রিপ-এর মতো ট্রাভেল পোর্টালও এসেছে। সাধারণ ভাবে যে সব স্থান পর্যটনের জন্য ইতিমধ্যেই জনপ্রিয়, সেখান থেকে বেরিয়ে নতুন নতুন স্পটের সন্ধান দিচ্ছে তারা।

সিকিমের পর্যটন দফতরের অফিসার এন পি ভুটিয়া জানান, উত্তর সিকিম চিরকালই বাঙালিদের প্রিয়। কিন্তু এ বার তারা দক্ষিণ সিকিমের বেশ কিছু জায়গাকেও জনপ্রিয় করতে চাইছেন। যার মধ্যে রাবাংলা বাঙালির কাছে আগেই পরিচিত। সঙ্গে যোগ হয়েছে সিদ্ধেশ্বর ধাম। হিসেব দিয়ে ভুটিয়া জানান, মে মাসে এই সিদ্ধেশ্বর ধামে ৭০ হাজার পর্যটক এসেছেন।

পর্যটন মেলার উদ্বোধনে অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে দেখা যায় অভিনেতা আবীর চট্টোপাধ্যায়কে। যিনি উদ্বোধনের মঞ্চে বলেন, ‘‘আমাকে কাজের সূত্রে ঘুরতে হয় ঠিকই। কিন্তু ছুটি নিয়ে বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সঙ্গে ঘোরার মজাটাই আলাদা। বাঙালিরা এমনিতেই ঘুরতে ভালবাসেন। এ ধরনের যে কোনও উদ্যোগকেই তাই স্বাগত জানাতে হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন