অমিত মিত্র। —নিজস্ব চিত্র
খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে সোমবার জমির সমস্যার কথা তুলেছিল ছোট-মাঝারি শিল্প। তার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে সেই ছোট-মাঝারি শিল্পের সম্মেলনেই রাজ্যের অর্থ তথা শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্রের আশ্বাস, তাদের জন্য তৈরি হচ্ছে আরও ৩০টি শিল্প তালুক। শিল্পোদ্যোগীদের জমির সমস্যা তাতে মিটবে বলে তাঁর আশা।
সোমবার এই সম্মেলনের প্রথম দিনে কয়েক জন শিল্পোদ্যোগী মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, জমির সমস্যার কথা। অনেকে আবার বলেন, জমি পাওয়ার পরেও তা আটকে থাকছে নানা ছাড়পত্রের গেরোয়। ওঠে লাল ফিতের ফাঁসের সমস্যার কথাও।
এ দিন অমিতবাবু জানান, ২,০০০ একরে আরও ৩০টি তালুক হচ্ছে। তাতে জমি পাওয়া আরও সহজ হবে। বস্তুত, রাজ্য ছোট শিল্পোন্নয়ন নিগমের অধীনে এই শিল্পের জন্য ৫৩টি তালুক আছে। তবে শিল্পমহলের অভিযোগ, শুধু তালুক তৈরিই যথেষ্ট নয়। অনেক তালুকের পরিকাঠামো খারাপ। তাতেও নজর দেওয়া জরুরি। মুখ্যমন্ত্রীর সামনে বেহালা শিল্প তালুকের প্রতিনিধির অভিযোগ ছিল, সেখানে চড়া হারে ভাড়া বাড়ছে। মমতা বলেন, তা করা চলবে না।
কথা মেনে
• মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মাথায় রেখে প্রতি মাসের একটি সোমবার ছোট-মাঝারি শিল্প দফতরের জেলা কেন্দ্রের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স প্রধান সচিবের।
• ভূমি, বিদ্যুৎ এবং পরিবেশ দফতরের কর্তাদের পাশাপাশি সেখানে উপস্থিত থাকবেন শিল্প প্রতিনিধিরাও।
• শিল্পমহলের প্রশ্নের জবাব দিতে ‘ইন্টারঅ্যাক্টিভ ওয়েবসাইট’।
প্রতিশ্রুতি
• রাজ্যে গ্রামাঞ্চলে নতুন উদ্যোগের হাব ৩০০টি।
• দু’হাজার একর জমিতে ৩০টি নতুন শিল্প তালুক।
• ইঞ্জিনিয়ারিং, গয়না, বস্ত্র, চর্ম, হস্তশিল্প ইত্যাদির রফতানি বাড়াতে মউ সই।
• ছোট সংস্থার শেয়ার ছাড়ার পথ সুগম করতে বিএসই, এনএসই-র সঙ্গেও মউ সই।
• এ রাজ্যের শিল্পোদ্যোগীদের ১১৩ কোটি টাকার বরাত আমেরিকা, জার্মানি, ফ্রান্স-সহ নানা দেশের প্রতিনিধিদের।
এই শিল্পকে সাহায্য করতে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ মেনে একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথা এ দিন জানান শিল্পমন্ত্রী। যেমন, মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিব-সহ কর্তাদের জেলায় যাওয়ার কথা বলেছিলেন। এ দিন কর্তাদের জেলার আধিকারিক ও শিল্পমহলের সঙ্গে বৈঠকের দিনক্ষণ স্থির করা হয়েছে। রফতানি বাড়াতেও হাত মেলানো হচ্ছে শিল্পের সঙ্গে।
সমবায় ব্যাঙ্কগুলি থেকেও এই শিল্পকে ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অমিতবাবু এ দিন জানান, এ নিয়ে শীঘ্রই সমবায় দফতরের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
রাজ্যে শিল্পায়নের জন্য পার্ক তৈরির কথা জানান শিল্পমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ছোট ও মাঝারি শিল্পের (চর্ম, ফাউন্ড্রি, হোসিয়ারি ও বস্ত্র) জন্য রাজ্যে যে পার্কগুলি হচ্ছে, তা দেশের মধ্যে বৃহত্তম। পাশাপাশি খড়্গপুর, পানাগড়-সহ বিভিন্ন পার্ক তৈরি হয়েছে বড় শিল্পের জন্য। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, অনেক পার্কই তৈরি হয়েছে আগের সরকারের আমলে।