অনাদায়ি ঋণে নিশানা শীর্ষ ব্যাঙ্ককে, প্রশ্নের মুখে এ বার জেটলিরও

অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব জোড়া মন্দার পরে অর্থনীতিকে কৃত্রিম ভাবে চাঙ্গা দেখাতে ব্যাঙ্কগুলিকে যথেচ্ছ ধার দিতে বলেছিল তৎকালীন সরকার। মূলত সেই কারণেই ব্যাঙ্ক-ঋণে বৃদ্ধির হার ১৪%  থেকে বেড়ে হয় ৩১%।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৮ ০২:১৫
Share:

রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে নিশানা অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির। ছবি: পিটিআই।

সাত দিন আগেই প্রশ্নটি তুলেছিলেন কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া (সিএজি) রাজীব মহর্ষি। মঙ্গলবার সেই একই প্রশ্নে ইউপিএ সরকারের পাশাপাশি রিজার্ভ ব্যাঙ্ককেও নিশানা করলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তাঁর জিজ্ঞাসা, ২০০৮ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ব্যাঙ্কগুলি যখন দেদার ধার দিচ্ছিল, তখন কী করছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক? ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে কেন্দ্রের যখন প্রায় প্রতিদিন কথার লড়াই চলছে, তখন খোদ অর্থমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরে তা আরও তেতো হওয়ার সম্ভাবনা।

Advertisement

এই যুক্তিতে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমেছে কংগ্রেস। মুখপাত্র আনন্দ শর্মার অভিযোগ, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতো একটি স্বাধীন, স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানকে পরিকল্পিত ভাবে নাগাড়ে আক্রমণ করে চলেছে মোদী সরকার। যা একেবারেই কাঙ্ক্ষিত নয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব জোড়া মন্দার পরে অর্থনীতিকে কৃত্রিম ভাবে চাঙ্গা দেখাতে ব্যাঙ্কগুলিকে যথেচ্ছ ধার দিতে বলেছিল তৎকালীন সরকার। মূলত সেই কারণেই ব্যাঙ্ক-ঋণে বৃদ্ধির হার ১৪% থেকে বেড়ে হয় ৩১%। কিন্তু তা করতে গিয়ে এমন বহু প্রকল্পে ঋণ দেওয়া হয়েছিল, যেখান থেকে তা আর ফেরত পাওয়া যায়নি। তারই খেসারত হিসেবে ওই সময়ে অনুৎপাদক সম্পদ ২.৫ লক্ষ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৮.৫ লক্ষ কোটি ছুঁয়েছিল বলে তাঁর অভিযোগ। এখানেই শীর্ষ ব্যাঙ্কের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জেটলি। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘জানি না রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কী করছিল! তারাই তো ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রক।’’

Advertisement

যে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের স্বাধীনতাকে মর্যাদা দেয় না, তাদের ফল ভুগতে হয় বলে সম্প্রতি সাবধান করেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্য। এর পরেই অর্থমন্ত্রী মনে করিয়ে দিয়েছিলেন নিয়ন্ত্রকের নমণীয় হওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা। তার পর থেকে দু’তরফের কথার লড়াই চলছেই। সেই প্রেক্ষিতে জেটলির কথা বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে কেন্দ্রের সংঘাত নতুন নয়। ইউপিএ জমানায় প্রাক্তন গভর্নর ওয়াই ভি রেড্ডি, ডি সুব্বারাওয়ের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রকের তাল ঠোকাঠুকি হয়েছে। রঘুরাম রাজনের সঙ্গে মোদী সরকারের মতের ফারাকের কথাও বহুল প্রচারিত। কিন্তু সমস্ত কিছুর পরেও এ বার যে ভাবে দু’পক্ষ খোলাখুলি তোপ দাগছে, তাতে আখেরে অর্থনীতির ক্ষতির সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন