দর বাড়িয়েই বঙ্গে ফিরল বিয়ার

সরকার এর পর ফেব্রুয়ারির গোড়ায় পুরনো দাম কমিয়ে, শুল্ক ৩০.৫% থেকে বাড়িয়ে ৪২.৭% ধার্য করে। তাতেই বোতল পিছু দাম বাড়ে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয় কোনও ভাবেই এর চেয়ে দাম কমানো হবে না।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০২:০৪
Share:

গরম এসে গেলেও বাজারে বিয়ার ছিল না। এ বার রাজ্য জুড়ে প্রায় মাস দুয়েকের সেই সঙ্কট কাটতে চলেছে। আগামী দিন সাতেকের মধ্যে চালু ব্র্যান্ডের সমস্ত বিয়ারই খুচরো দোকানে পাওয়া যাবে বলে দাবি করেছে আবগারি দফতর। তবে তা আর আগের দামে মিলবে না। গড়পড়তায় বোতল পিছু তা প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টাকা বাড়বে। যেমন, ১১০ টাকার বিয়ারের বোতল কমবেশি ১৪০ টাকা দরে কিনতে হবে বলে জানিয়েছেন আবগারি কর্তারা।

Advertisement

আবগারি দফতর গত ১০ জানুয়ারি বিয়ারের উপর শুল্ক অনেকখানি বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছিল। এর জেরে কিছু ক্ষেত্রে বোতল পিছু দাম ১১০ থেকে বেড়ে ২১০ টাকায় দাঁড়িয়েছিল। ক্রেতারা এত দাম দিতে রাজি হবেন না, এই আপত্তি তুলে রাজ্যের প্রধান তিন বিয়ার প্রস্তুতকারক সংস্থা ২০ জানুয়ারি থেকে উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। ফলে মদের দোকান, বার, রেস্তরাঁয় তার সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

সরকার এর পর ফেব্রুয়ারির গোড়ায় পুরনো দাম কমিয়ে, শুল্ক ৩০.৫% থেকে বাড়িয়ে ৪২.৭% ধার্য করে। তাতেই বোতল পিছু দাম বাড়ে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয় কোনও ভাবেই এর চেয়ে দাম কমানো হবে না।

Advertisement

সরকারি প্রস্তাব মেনে ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে একটি উৎপাদক সংস্থা সরবরাহ চালু করলেও, বাকি দুই সংস্থা কারখানা বন্ধই রেখেছিল। বাংলার বিয়ার বাজারের প্রায় ৭০ ভাগ ওই দুই সংস্থার দখলে থাকায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়। রাজ্য থেকে কার্যত উধাও হয়ে যায় ওই পানীয়। সরকারের রাজস্বও কমতে থাকে। আবগারি দফতরের হিসেব, ২০১৭ সালের ফ্রেব্রুয়ারিতে বিয়ার বেচে ১২৩ কোটি আয় হয়েছিল। এ বার প্রায় দু’মাসের সঙ্কটে সরকার অন্তত ১৫০ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে। আবগারি কর্তাদের একাংশের মতে, মার্চ-এপ্রিল-মে, তিন মাসেই বিয়ারের বিক্রি হয় সব চেয়ে বেশি। গত বছর মার্চে রাজ্যে ১.২০ কোটি লিটার বিয়ার বিক্রি হয়েছিল। ২০১৭-র এপ্রিলে ১.৯১ কোটি লিটার। অথচ এ বার ফেব্রয়ারি-মার্চে কোথাও তা প্রায় ছিলই না।

এক আবগারি কর্তার কথায়, ‘‘আমরা তো দুধের দাম বাড়াইনি। দাম বাড়ানোর ফলে যদি বিয়ার পানের প্রবণতা কমে, তা সমাজের জন্য ভালই। তাই বিয়ার উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিকে ডেকে বলা হয়েছিল, দাম বাড়িয়েই বাজারে এর সরবরাহ চালু রাখতে হবে। শেষে তারা তা মেনে নেওয়ায় আর সঙ্কট নেই।’’

সূত্রের খবর, সরকারি চাপে অন্য দুই সংস্থাও ১৭ মার্চ থেকে উৎপাদন ও সরবরাহ শুরু করেছে। ফলে খুচরো দোকানগুলিতে পর্যাপ্ত বিয়ার পৌঁছনো এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement