সেল-চিঠিতে ‘বিভ্রান্তি’ এএসপিতে

চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশিকা জারি করে জানায়, ২০১৮-র ১৪ ফেব্রুয়ারি কারখানার কৌশলগত বিলগ্নিকরণের জন্য যে আগ্রহপত্র চাওয়া হয়েছিল, তা নাকচ করা হয়েছে। সিটু প্রথম থেকেই সিদ্ধান্তের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:৪৯
Share:

অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের (এএসপি)।—ফাইল চিত্র।

অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের (এএসপি) কৌশলগত বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত নাকচের কথা জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু, যে দিন তা নাকচের কথা জানানো হয়েছিল, সেই দিনই সেল দু’টি স্টক এক্সচেঞ্জকে চিঠি দিয়ে জানায়, সরকারের অনুমোদন নিয়ে ফের নতুন করে বিলগ্নিকরণের আগ্রহপত্র চাওয়া হবে! মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেলের সেই চিঠির কথা প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা।

Advertisement

চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশিকা জারি করে জানায়, ২০১৮-র ১৪ ফেব্রুয়ারি কারখানার কৌশলগত বিলগ্নিকরণের জন্য যে আগ্রহপত্র চাওয়া হয়েছিল, তা নাকচ করা হয়েছে। সিটু প্রথম থেকেই সিদ্ধান্তের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তারা জানায়, ৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও নীতি আয়োগের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করে ৯০ হাজার কোটি টাকা জোগাড় করা হবে। তার জন্য নির্দিষ্ট করা ৩৫টি কারখানার মধ্যে এএসপি-ও আছে। আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব ওই দিন জানান, বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত নাকচ করা হয়েছে, এটা কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী নিজে না ঘোষণা করা পর্যন্ত বিষয়টির বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে প্রশ্ন থাকবেই। তবে আইএনটিইউসি ও বিএমএস খানিকটা হলেও আশার আলো দেখতে শুরু করে।

পরিস্থিতি বদলায় মঙ্গলবার। ওই দিন সন্ধ্যায় চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারিই মুম্বই স্টক এক্সচেঞ্জ ও ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে সেলের পাঠানো চিঠি প্রকাশ্যে আসে। সেখানে সেল জানায়, এএসপি-র কৌশলগত বিলগ্নিকরণের জন্য আগ্রহপত্র চাওয়ার প্রক্রিয়া ফের শুরু হয়েছে। সরকারের অনুমোদন নিয়ে দ্রুত নতুন করে আগ্রহপত্র চাওয়া হবে।

Advertisement

এর পরেই ক্ষোভ ছড়ায় শ্রমিকদের মধ্যে। বুধবার দুর্গাপুর পূর্বের সিপিএম বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়ের নেতৃত্বে কারখানার গেটের সামনে মিছিল ও বিক্ষোভ কর্মসূচি নেওয়া হয়। বিধায়ক বলেন, ‘‘দুর্গাপুরের মানুষকে সাময়িক বিভ্রান্ত করে ফের নতুন করে এএসপি বিক্রির জন্য তোড়জোড় করছে কেন্দ্রীয় সরকার। আমরা এর প্রতিরোধ করব।’’ সিটু নেতা সৌরভ দত্ত বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’’

আইএনটিইউসি নেতা বিকাশ ঘটক এ দিন বলেন, ‘‘সামান্য আশার আলো দেখা গিয়েছিল। কিন্তু যা শুনছি, তাতে আর ভরসা থাকছে না।’’ আইএনটিটিইউসি নেতা অশোক কুণ্ডুর বক্তব্য, ‘‘আমরা আগেই বলেছিলাম, কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রীর কাছ থেকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের ঘোষণা শুনতে চাই।’’ ওই তিনটি শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বই জানিয়েছেন, কৌশলগত বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

বিএমএস নেতা অরূপ রায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘আগ্রহপত্র চাওয়ার প্রক্রিয়া নাকচের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল সরকারি স্তরে। কিন্তু স্টক এক্সচেঞ্জে চিঠি দিয়েছে সেল। একই দিনে দু’রকম সিদ্ধান্ত হতে পারে না। কোথাও গোলমাল রয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি বিশদে জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন