Coronavirus

লকডাউনে বন্ধকীর বোলবোলাও

মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা জুড়ে সোনার নাকছাবি ও আংটির বাজার পরিচিত সারা দেশে। বছরে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার লেনদেন চলে।

Advertisement

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

বেলডাঙা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৪৮
Share:

প্রতীকী ছবি

লকডাউনের ছায়ায় ঘোর স্তব্ধতার মাঝেও হাতে নগদের সংস্থান চাইছেন সাধারণ মানুষ। আর, তার জেরে নিশ্চুপে নতুন করে ফুলেফেঁপে উঠছে বন্ধকীর কারবার।

Advertisement

মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা জুড়ে সোনার নাকছাবি ও আংটির বাজার পরিচিত সারা দেশে। বছরে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার লেনদেন চলে। করোনার গ্রাসে কারবার আপাতত থমকে। কিন্তু আড়ালে বেড়ে উঠেছে বন্ধকী-ব্যবসা।

বেলডাঙা স্বর্ণশিল্পী সমিতির সম্পাদক অভিমন্যু কর্মকারও মানছেন লকডাউনের আবহে বন্ধকী কারবারের রমরমার কথা। তাঁর দাবি, “ছোট সোনা ব্যবসায়ীদের অনেকেই বন্ধকী কারবার করছেন। কারণ, সোনা বন্ধক দিয়ে নগদ নিতে ইচ্ছুকদের একাংশ তাঁদের মরসুমি খদ্দের। ফলে টাকা না-দিলে বিভিন্ন পরবে ব্যবসা ধাক্কা খাবে যে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: নেটে বিক্রি, জোর ভারসাম্যেই

বেলডাঙার বাসিন্দা রাধারানি বিশ্বাস বলছেন, “স্বামী কেরলে আটকে। তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম অবস্থা। সোনার নোয়া বাঁধা রেখে ১১,০০০ টাকা পেয়েছি। চাল-আনাজ-আটা তো কিনতে হচ্ছে। টাকা পাব কোথায়!’’ মাসিক ৩% সুদ দেওয়ার চুক্তিতে শামিমা খাতুন বাধ্য হয়েছেন বালা বন্ধক দিতে। বলছেন, ‘‘ছেলের কাপড়ের দোকান বন্ধ। স্বামী পক্ষাঘাতে কাবু, ১১ জনের সংসার টানতে হবে। ওষুধ কিনতেই ফতুর হয়ে যাচ্ছি। গ্রাম থেকে ব্যাঙ্ক ১৪ কিমি দূরে, যাব কী করে? তাই বালা বন্ধক রাখলাম। হাজার সাতেক পেয়েছি, তাতেই চালাতে হবে সংসার।’’

লকডাউন শুরুর মুখে ভিন্‌ রাজ্য থেকে বহু পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন জেলায়। তড়িঘড়ি কাজ ছেড়ে আসায় নগদের সংস্থান করতে পারছেন না তাঁরাও। ফলে স্ত্রী-মায়ের গয়না বন্ধক রেখে টাকা ধার নেওয়া ছাড়া গতি নেই। তবে এই বন্ধকী কারবারের আইনি সাক্ষ্য না থাকায়, যিনি ধার দিচ্ছেন বা যিনি নিচ্ছেন— দু’পক্ষেরই ঝুঁকি থাকছে। রাধারানি বলেন, ‘‘জানি, ঝুঁকি আছে। কিন্তু টাকা নেই, সংসার চালাতে কে ধার দেবে।’’

বেলডাঙার সোনা কারবারি গৌতম সিংহ বলেন, “অনেকেই বন্ধকী ব্যবসা করছেন। মানুষও স্বস্তিতে। সুযোগ পেলে কে নীতির কথা মাথায় রাখে!’’

আরও পড়ুন: অফিস সরাবে কোল ইন্ডিয়া, আন্দোলনের হুমকি কর্মীদের

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন