Coronavirus

ফের ধস নামল বিমর্ষ বাজারে

বিশেষজ্ঞদের দাবি, অন্যান্য দেশের মতো ভারতের বাজারেও লগ্নিকারীরা বিমর্ষ। সন্ত্রস্তও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২০ ০৫:০২
Share:

লগ্নিকারীদের মাথায় হাত।—ছবি এএফপি।

করোনাভাইরাসের জেরে বিশ্ব জুড়ে আর্থিক মন্দা নেমে আসার আশঙ্কা টুঁটি টিপে ধরেছে শেয়ার বাজারের। শুক্রবারের ১৩২৫ পয়েন্ট উত্থানের রেশ ধুয়েমুছে দিয়ে সোমবার ফের ২৭১৩.৪১ পয়েন্ট (৭.৯৬%) নেমে গিয়েছে সেনসেক্স। নিফ্‌টি পড়েছে প্রায় ৭৫৮.৮০ পয়েন্ট (৭.৬১%)। ফলে ভারতের বাজার থেকে মুছে দিয়েছে লগ্নিকারীদের ৭.৬২ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ। ঠিক এই ভাবেই করোনা-ত্রাসে বিশ্ব জুড়ে হোঁচট খেয়েছে সব দেশের সমস্ত শেয়ার বাজার। আমেরিকা ও ব্রাজিলের শেয়ার সূচকে এতটাই ধস নামে যে, লেনদেন বন্ধ হয়ে যায় দু’জায়গাতেই।

Advertisement

যে-সেনসেক্স নতুন বছর শুরু করেছিল ৪১,৩০৬.০২-এ পা রেখে এবং জানুয়ারিতেই লেনদেনের মাঝে ৪২ হাজার পেরিয়ে গিয়েছিল, তা-ই এ দিন আবার ফিরেছে ৩১ হাজারের ঘরে। থেমেছে ৩১,৩৯০.০৭ অঙ্কে। নিফ্‌টি-ও নাগাড়ে পড়ার জেরে দাঁড়িয়েছে ৯১৯৭.৪০-এ। মাস দুয়েক আগে ১২ হাজার পেরোনোর পরে যার পাখির চোখ ছিল ১৩ হাজার।

বিশেষজ্ঞদের দাবি, অন্যান্য দেশের মতো ভারতের বাজারেও লগ্নিকারীরা বিমর্ষ। সন্ত্রস্তও। প্রশ্ন উঠেছে, দিনের পর দিন লগ্নিতে বিপুল লোকসান থেকে অব্যাহতি মিলবে কবে? বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে-র দাবি, ভাইরাস সমস্যা যে অর্থনীতির দফারফা করে ছাড়বে, তার পূর্বাভাস আসছে একের পর এক। যেখানে ফের আর্থিক মন্দার ভয়ও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। সেটা সত্যি হলে কিন্তু শেয়ার বাজারকে আরও খারাপ দিন দেখতে হতে পারে বলে সতর্ক করছেন তিনি।

Advertisement

উদ্বেগ

• বিশ্বের সব শেয়ার বাজার পড়ল। ধস ভারতে। আমেরিকা ও ব্রাজিলের বাজার খোলার (ভারতীয় সময় সন্ধ্যেয়) পরে সেখানেও ধস। কিছু সময় বন্ধ রাখতে হয় লেনদেন।
• দেশের বাজারে লগ্নিকারীরা হারালেন ৭.৬২ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ।
• ডলারের নিরিখে ফের হুড়মুড়িয়ে পড়ল টাকার দাম। এক ডলার ৫০ পয়সা উঠে হল ৭৪.২৫ টাকা।
• বিশ্ব বাজারে বিপুল ধাক্কা (১২%) তেলে। ব্রেন্ট ক্রুড ব্যারেলে ৩০ ডলারের নীচে নামল।

অনেকেরই দাবি, একে ভারতের অর্থনীতি ঝিমুনির কবলে। করোনা-কামড়ে এ বার তাতে পড়েছে খাঁড়ার ঘা। আমদানি, রফতানি তো ভুগবেই। ব্যবসা ধাক্কা খাবে দেশের মধ্যেও। এই আশঙ্কারই প্রতিফলন সূচকে। বাজার মহল বলছে, লগ্নিকারীরা শেয়ার ধরে রাখতে সাহসই পাচ্ছেন না। বিশেষত অন্যান্য দেশের সূচকগুলিকে ধাক্কা খেতে দেখে। নাগাড়ে লগ্নি তুলে নিচ্ছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলিও। এ দিনও তারা ভারতে বেচেছে ৩,৮০৯.৯৩ কোটি টাকার শেয়ার।

শেয়ার ব্যবসায়ী বিধান দুগার বলেন, ‘‘সমস্যা দ্রুত মেটার লক্ষণ নেই। বরং তা আরও গভীর হতে পারে। করোনার জেরে অর্থনীতির যা ক্ষতি হয়ে চলেছে, তা আগামী দিনে বিশ্ব জুড়ে আর্থিক ক্ষেত্রে মন্দা ডেকে আনতে পারে বলেও আতঙ্কে ভুগছেন লগ্নিকারীরা। সে জন্যই শেয়ার বিক্রির ধুম।’’ তাঁর দাবি, ‘‘অভিজ্ঞতা বলে, এমন সমস্যা কাটিয়ে উঠতে বাজারের অন্তত ছ’মাস লাগে। কিন্তু এ সমস্যার তো শেষ হওয়ার নামই নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন