Crude Oil

দাম নামছে অশোধিত তেলের, অপেক্ষা দেশে

সোমবারের হিসাবে সার্বিক ভাবে তা প্রায় ২৪ ডলার কমেছে। কিন্তু এই মাস চারেকে ভারতে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম এক জায়গায় থমকে দাঁড়িয়ে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:০০
Share:

বিরোধীদের অভিযোগ, তেলের দাম এখন নিয়ন্ত্রিত হয় ভোটের দিনক্ষণ অনুযায়ী, বিশ্ব বাজারের দরের ভিত্তিতে নয়। ফাইল ছবি

বিশ্ব জোড়া হাজারো সংশয়ের মেঘ ফের অশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুডকে টেনে নামাল ব্যারেল প্রতি ৮৮.৫০ ডলারে। ৮২.৭৯ ডলারে নামল আমেরিকার অশোধিত তেল ডব্লিউটিআই। তার পরেই প্রশ্ন উঠল, আমদানির খরচ কমার এই সুবিধা দেশের মানুষের কাছে কবে পৌঁছে দেবে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি। গত প্রায় চার মাস ধরে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে চলেছে। পরিসংখ্যান বলছে, সোমবারের হিসাবে সার্বিক ভাবে তা প্রায় ২৪ ডলার কমেছে। কিন্তু এই মাস চারেকে ভারতে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম এক জায়গায় থমকে দাঁড়িয়ে। বিরোধী শিবিরের অবশ্য দাবি, অনুকূল এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে মাঠে নামতে পারে মোদী সরকার। গুজরাতে বিধানসভার ভোট আসছে। উৎসবের মরসুমে দাম কমিয়ে কৃতিত্ব দাবি করতে পারে তারা।

Advertisement

রাতের দিকে অশোধিত তেলের দাম কিছুটা বাড়তে দেখা যায়। ব্রেন্ট ঘোরাফেরা করতে থাকে ৯১ ডলারের আশেপাশে। ডব্লিউটিআই-ও ৮৫ ডলার ছাড়ায়।

সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, বেশ কিছু দিন ধরেই ১০০ ডলারের নীচে ব্রেন্ট। মাঝে-মধ্যে ৯০ ডলারেও নেমে আসছে। কিন্তু পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমার নামগন্ধ নেই। অথচ বিশ্ব বাজারে দাম বাড়লে দেশে তার প্রভাব পড়ে চোখের পলকে। সম্প্রতি ভারত ৮৮ ডলারে তেল আমদানি করছে (৮ সেপ্টেম্বরের বাস্কেট অনুযায়ী) জানার পরে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছিল কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, তেলের দাম এখন নিয়ন্ত্রিত হয় ভোটের দিনক্ষণ অনুযায়ী, বিশ্ব বাজারের দরের ভিত্তিতে নয়। না হলে অবিলম্বে পেট্রল-ডিজ়েল লিটারে ১৫ টাকা এবং রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দাম অন্তত ১৫০ টাকা কমানো উচিত।

Advertisement

রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা সূত্রের অবশ্য দাবি, কিছু দিন আগেও চড়া দামে অশোধিত তেল কিনতে হচ্ছিল তাদের। কিন্তু দেশে দাম বাড়ানো হয়নি মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে। ফলে বিপুল লোকসান গুনেছে তারা। এখন আমদানি খরচ কমায় সেই লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার পালা চলছে।

ব্রোকার সংস্থাগুলির একাংশের মতে, এ সপ্তাহেই আমেরিকার ফেডারাল রিজ়ার্ভ মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের তাগিদে বিপুল হারে সুদ বাড়াতে পারে। এর জেরে মন্দায় পড়তে পারে সে দেশ। ইউরোপেও মন্দার আশঙ্কা। এ সবের প্রভাব পড়বে গোটা বিশ্বের অর্থনীতিতে। তুলনায় সুরক্ষিত মুদ্রা হিসাবে বিবেচিত ডলারের দাম আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা। এমন পরিস্থিতিতে চাহিদা কমার আশঙ্কাতেই দাম কমছে অশোধিত তেলের।

সম্প্রতি ভারত পেট্রোলিয়ামের সিএমডি অরুণ কুমার সিংহ বলেন, বিশ্ব বাজারে দাম উল্লেখযোগ্য ভাবে না কমলে দেশে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমার সম্ভাবনা কম। তাঁর দাবি ছিল, অশোধিত তেল এত দ্রুত (দৈনিক প্রায় ৫-৭ ডলার) ওঠানামা করছে যে, তার ভিত্তিতে দেশে দামে অদলবদল সম্ভব নয়। সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, জ্বালানিতে সুরাহা পেতে আর কতদিন অপেক্ষা করতে হবে সাধারণ মানুষকে? ততদিনে ফের ব্রেন্ট চড়তে শুরু করবে না তো!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন