এ বার ইউনাইটেড স্পিরিটস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রফার পথে হাঁটতে চান সংস্থার প্রাক্তন কর্ণধার বিজয় মাল্য। সে ক্ষেত্রে দিয়াজিও-র সঙ্গে সংঘাতের পথে না-গিয়ে সমঝোতার রাস্তাই পছন্দ তাঁর।
মাল্য বলেছেন, মুখোমুখি আলোচনা করেই সমস্যা মিটিয়ে নিতে আগ্রহী িতনি। তাঁর কথায়, ‘‘চুক্তি অনুযায়ী আমাকে ইউনাইটেড স্পিরিটস (ইউএসএল)-এর পরিচালন পর্ষদে ডিরেক্টর ও চেয়ারম্যান পদে বহাল রাখতে দিয়াজিও দায়বদ্ধ। বিষয়টি দিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলব।’’
বিশ্বের বৃহত্তম মদ প্রস্তুতকারক ইউএসএল এখন দিয়াজিও-র হাতে। বিজয় মাল্যের কিংফিশার এয়ারলাইন্স ঘোরতর আর্থিক সঙ্কটে পড়ে শেষ পর্যন্ত ২০১২-র অক্টোবরে বসে যায়। তার জেরেই মাল্যকে বিপুল সম্পদ বেচে দিতে হয়। এর মধ্যে ছিল ইউএসএলের মালিকানা হস্তান্তর। ৫৫% শেয়ার কিনে ব্রিটিশ বহুজাতিক দিয়াজিও ওই মালিকানা হাতে নেয়, যদিও পরিচালন পর্ষদে ডিরেক্টর এবং সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে এখনও রয়েছেন মাল্য।
এই অবস্থায় গত সপ্তাহে ইউএসএলের পর্ষদ থেকে মাল্যকে সরে যেতে বলেন দিয়াজিও কর্তৃপক্ষ। সংস্থার এই প্রাক্তন মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বেআইনি ভাবে কিংফিশার এবং ইউবি গোষ্ঠীর অন্যান্য সংস্থায় প্রায় ১,৩৩৭ কোটি টাকার তহবিল ঋণ বাবদ পাইয়ে দিয়েছেন। মাল্য অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে নিজের পদ ছাড়তে অস্বীকার করেছেন। বরং চেয়ারম্যান হিসেবে ‘স্বাভাবিক’ কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে এককাট্টা তিনি। এমনকী মাল্য বলেছেন, একজন ডিরেক্টরকে পরিচালন পর্ষদ থেকে সরাতে পারেন শুধু শেয়ারহোল্ডাররা।
মাল্য পদ না-ছাড়লে শেয়ার হোল্ডাররাই যাতে তাঁকে সরাতে উদ্যোগী হন, সেই আর্জি জানিয়েছে ইউএসএল-ও। এই পরিপ্রেক্ষিতেই মাল্য দিয়াজিও-র সঙ্গে ইউএসএলের চুক্তির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘‘দিয়াজিও আজই এক বিবৃতি দিয়ে স্পষ্ট করেছে যে, আমাকে সংস্থায় রাখতে তারা দায়বদ্ধ।’’ তবে, দিয়াজিও সূত্রে খবর, তারা চুক্তির উল্লেখ করলেও স্পষ্ট জানিয়েছে, মাল্য ও তাঁর গোষ্ঠীর ইউ বি হোল্ডিংস দিয়াজিও-র কোনও তহবিল সরালে বা তা ফেরত না-দিলে তাঁকে পদে বহাল রাখা সংক্রান্ত চুক্তি আর খাটবে না।
এ দিকে, সেবি তহবিল সরানোর অভিযোগ খতিয়ে দেখছে। কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রক, ইউএসএল ও সংস্থার প্রাক্তন, বর্তমান অডিটরদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনুসন্ধান চালাবে তারা। ইউএসএল ২০১৩-’১৪ অর্থবর্ষে ৪৪৮৮.৭৭ কোটি টাকার নিট লোকসান করায় কর্তৃপক্ষ ইউবি গোষ্ঠীর কিছু সংস্থাকে বিপুল ঋণ দেওয়া নিয়ে তদন্ত শুরু করে। তার জেরেই তহবিল সরানোর ঘটনা প্রকাশ্যে আসে ও মাল্যকে সরার নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্ত রিপোর্টের প্রতিলিপি এবং প্রাইসওয়াটারহাউস কুপার্স-এর ফরেনসিক রিপোর্ট বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে পাঠিয়েছে ইউএসএল। সংস্থার পর্ষদ আগেই জানিয়েছে, মাল্যর প্রতি ‘আস্থা হারিয়েছে’ বলেই তারা তাঁকে সরে যেতে বলেছে।