লোগো এবং নাম লেখার ধরনে কয়েক দশক আগে আমূল পরিবর্তন আনে স্টেট ব্যাঙ্ক। লোগোকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল বলে তখন জানিয়েছিল সংস্থা।
এখন যে নীল রঙের লোগো দেখা যায়, তা শুরু হয় ১৯৭১ সাল থেকে।
১৯৫৫ সাল নাগাদ শক্ত শিকড় ও চারপাশে অনেকগুলি শাখার একটি বটগাছের লোগো ছিল এই ব্যাঙ্কের। পরবর্তীতে তাতে বল আনে ২০০ বছরের পুরনো এই ব্যাঙ্ক।
ব্যাঙ্কের লোগো সাধারণত নামের সঙ্গে মিল রেখে তৈরি। কিন্তু এক্ষেত্রে আকাশি রঙের লোগোটি তালার ছিদ্রের মতো দেখতে, যাতে চাবি গলানো হয়।
নিরাপত্তা দেবে এই ব্যাঙ্ক, তা মাথায় রেখেই এই লোগো তৈরি করেছেন ডিজাইনার শেখর কামাথ।
আগে ব্যাঙ্কে টাকা লেনদেনে টোকেন ব্যবহার হত। এই টোকেন থেকেও অনুপ্রাণিত হন শেখর।
লোগোটি গুজরাতের কাঁকারিয়া হ্রদের ‘এরিয়াল ভিউ’-র অনুকরণে তৈরি, এমন তত্ত্বও প্রচলিত ছিল। কিন্তু কামাথ তা নিজেই বাতিল করে দিয়েছেন।
১৯৪৪ সালে মু্ম্বইয়ে জন্ম শেখরের। জে জে স্কুল অব আর্টের ছাত্র ছিলেন তিনি। দাদাও শিল্পী ছিলেন। তাঁর হাত ধরেই প্রবেশ বিজ্ঞাপণী সংস্থায়। এর পর তরুণ ডিজাইনার হিসাবে লন্ডনে কাজ শুরু করেন শেখর। দু’বছর লন্ডনে শিক্ষানবিশীর পরই তিনি ফিরেন ভারতে।
বটগাছের লোগোটি তত দিনে আরও অনেকে অন্য নানা ক্ষেত্রে ব্যবহার শুরু করেছে। মূল লোগোতে কি হোলে একটু কম ফাঁক ছিল। রং ছিল কালো। এ ক্ষেত্রে রাখা হল নীল গোলক। এটি শক্তির প্রতীক।
শেখরের বন্ধু ইভান শেরমায়েফ চেজ ম্যানহাটন ব্যাঙ্কের লোগোর ডিজাইন করেছিলেন পরবর্তীতে। যেটির সঙ্গে এসবিআই লোগোর মিল আছে।
শেখর বলেন, স্মৃতিতে সহজেই ধরা থাকে কিছু লোগো। এসবিআই লোগোও সেরকমই। এটা এতটাই সাধারণ যে, মাটির দেওয়ালে আঁকা যায়, পেরেক, সুতো দিয়েও তৈরি করা যায় এটি।
১৮০৬ সালের ২ জুন প্রতিষ্ঠিত হয় ব্যাঙ্ক অব ক্যালকাটা। সেটি বদলে হয় ব্যাঙ্ক অব বেঙ্গল। ব্যাঙ্ক অব বম্বে (১৮৪০), ব্যাঙ্ক অব মাদ্রাজ (১৮৪৩) তৈরি হয় পরে। এই তিনটি ব্যাঙ্কের কাছেই ছিল কাগজে ছাপানো মুদ্রা তৈরির ক্ষমতা।
১৯২১ সালে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা বদলে সব মিলে যায়। নাম হয় ইম্পেরিয়াল ব্যাঙ্ক। ১৯৫৫ সালের ১ জুলাই ভারতের স্বাধীনতার পর এটির নাম বদলে দাঁড়ায় এসবিআই, ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক।