সিলমোহর: চড়া শুল্কের ইস্তাহারে সইয়ের পরে ট্রাম্প। ছবি: এপি।
ট্রাম্পের চড়া শুল্কের কড়া সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যেই বাণিজ্য-যুদ্ধের মেঘ ঘনিয়েছে বিশ্ব জুড়ে। কর বসলে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি আগেই দিয়ে রেখেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইউ), চিনের মতো অনেকে। কিন্তু সে সব হেলায় উড়িয়ে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে যথাক্রমে ২৫ এবং ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানোর নির্দেশে শেষ পর্যন্ত সই করেই দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যা কার্যকর হবে ১৫ দিনের মধ্যে।
মার্কিন প্রশাসনের দাবি, চিন থেকে বাজারে ঢোকা সস্তার বিপুল জোগান রোখাই এর মূল লক্ষ্য। এই পদক্ষেপ জরুরি ছিল অনৈতিক বাণিজ্য আটকানোর জন্যও। আর ট্রাম্পের দাবি, চিন, ভারতের মতো দেশ যদি আমদানি শুল্কের ক্ষেত্রে আমেরিকার সঙ্গে সাযুজ্য রাখতে না পারে, তবে পারস্পরিক কর বসানোর পথে হাঁটার শপথ রাখতেই হবে তাঁকে। তাঁর অভিযোগ, ওই সব দেশ যদি মার্কিন পণ্যে যথাক্রমে ২৫% বা ৭৫ শতাংশের মতো শুল্ক বসাতে পারে আর আমেরিকা কিচ্ছু না, তা হলে পারস্পরিক করের আওতায় এ বার উভয় পক্ষই এক রকম কর বসাবে। এ দিন যার প্রথম পর্ব শুরু হল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
আপাতত মেক্সিকো ও কানা়ডা বাদে সব দেশই এর আওতায় থাকায়, ট্রাম্প শুল্ক নিয়ে কার্যত ফুঁসছে গোটা দুনিয়া। যার হাত ধরে আরও দানা বেঁধেছে বাণিজ্য-যুদ্ধের আশঙ্কা। এমনকী মেক্সিকো, কানাডাও উত্তর আমেরিকা অবাধ বাণিজ্য চুক্তি (নাফটা) নিয়ে আলোচনা সম্পূর্ণ হওয়া পর্যন্তই শুধু এর বাইরে থাকবে।
করের কোপ
• ইস্পাতের উপর ২৫% এবং অ্যালুমিনিয়ামে ১০% আমদানি শুল্ক বসানোর সরকারি ঘোষণায় সই ট্রাম্পের
• কার্যকর হবে ১৫ দিনের মধ্যেই
• আপাতত বাদ শুধু কানাডা ও মেক্সিকো
• তবে ট্রাম্প কিছুটা নরম হয়ে জানান, অন্য দেশও ছাড় চাইলে আলোচনায় বসতে রাজি
• প্রেসিডেন্টের দাবি, এই সিদ্ধান্ত মার্কিন উৎপাদনকারীদের বাঁচাতেই
পাল্টা হুমকি
• আমেরিকার সিদ্ধান্তকে তুলোধোনা চিনের
• বেজিংয়ের হুঙ্কার, এই শুল্ক বিশ্ব বাণিজ্যে বড় আক্রমণ
• ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আক্ষেপ, আমেরিকার ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য সহযোগী হওয়ায় তাদের বাদ দেওয়া উচিত ছিল
• রফতানি মার খেলে মার্কিন পণ্যে পাল্টা কর বসানোর তালিকা তৈরি, হুমকি ব্রাসেলসের
• জাপানের বার্তা, ধাক্কা খাবে তাদের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক
• বাণিজ্য বিতর্ক মেটানোর ভুল পথ এটা, সমালোচনা ব্রিটেনের
• নিজেদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করা হবে, জানালেন ব্রাজিলের বিদেশমন্ত্রীও
• ফ্রান্সের দাবি, এ ধরনের পদক্ষেপ নিতান্তই দুঃখজনক
• শুল্ক থেকে তারা ছাড় পেলেও তা ফেরাতে চাপ দেবে তারা, জানাল কানাডা
দিল্লির দাবি
• রফতানিকারী হিসেবে ভারতের উপরে অবশ্যই এর কিছু প্রভাব পড়বে
তবে করের কড়া কোপ মারার দিনে তুলনায় একটু নরম ট্রাম্প। জানিয়েছেন, কোনও দেশ এই শুল্কে ছাড় চাইলে আলোচনার টেবিলে বসতে পারে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে। ফলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, আসলে এ ভাবে দরাদরির মাধ্যমে ভারত, চিন-সহ বিভিন্ন দেশে ঢোকা মার্কিন পণ্যে করের হার কমিয়ে নেওয়ার কৌশলই নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।