ই-কমার্সের ভরসা সেই পাড়ার দোকান

নেট-বাজারে ক্রেতার হাতে পণ্য পৌঁছে দিতে হবে প্রত্যাশিত সময়সীমার মধ্যেই। পুজো, দীপাবলির মতো উৎসবই হোক, বা বার্ষিক ‘সেল’। অর্ডার জোগাতে চাই সঠিক ঠিকানায় জিনিস পৌঁছে দেওয়ার পরিকাঠামো।

Advertisement

গার্গী গুহঠাকুরতা

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৭ ০৯:০০
Share:

ক্রেতার হাতে জিনিস পৌঁছে দিতে এ বার পাড়ার মুদিখানা বা মনোহারী দোকানই নেট-বাজারের রথী-মহারথীদের আস্থাভাজন।

Advertisement

নেট-বাজারে ক্রেতার হাতে পণ্য পৌঁছে দিতে হবে প্রত্যাশিত সময়সীমার মধ্যেই। পুজো, দীপাবলির মতো উৎসবই হোক, বা বার্ষিক ‘সেল’। অর্ডার জোগাতে চাই সঠিক ঠিকানায় জিনিস পৌঁছে দেওয়ার পরিকাঠামো। আর এই সার কথা বুঝেই পাড়ার ছোট দোকানের কদর বাড়ছে অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্টের মতো ই-কমার্স সংস্থার কাছে। এই সব দোকানির সঙ্গে ক্রেতার ঘরোয়া সম্পর্কের উপর ভরসা রেখেই ‘ডেলিভারি’ বা পণ্য পৌঁছে দেওয়ার পরিকাঠামোর শেষ ধাপ সাজাচ্ছে তারা। নিয়মিত যোগাযোগের ফলে ক্রেতার নাম-ধামের মতো তথ্য জানেন ওই সব দোকানি। জিনিস পৌঁছে দেওয়ায় সেটাই কাজে আসবে বলে মনে করছে নেট বিপণি।

এই ভরসাকে পুঁজি করেই অ্যামাজন দেশ জুড়ে ১২,৫০০ ছোট দোকানের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ফেলেছে। ২০১৫ সালে তা ছিল ২,৫০০। সংস্থার দাবি, প্রতিটি দোকান দিনে ৩০ থেকে ৪০টি পণ্য ডেলিভারি করে। এই তালিকায় বড় জায়গা করে নিয়েছে কলকাতা। এ শহরে ৩৫০টি দোকানের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে জেফ বেজোসের সংস্থা অ্যামাজন। বিশ্ব জুড়ে ১৩ লক্ষ ৫৯,৮০০ কোটি ডলার ব্যবসা করা সংস্থা উত্তর-পূর্ব ভারতেও ১০০টি দোকানের মাধ্যমে প্রত্যন্ত জায়গায় জিনিস পৌঁছে দিচ্ছে।

Advertisement

ভারতে সংস্থার অন্যতম কর্তা অখিল সাক্সেনার দাবি, মুর্শিদাবাদ, আলিপুরদুয়ার থেকে শুরু করে ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়ার মতো জায়গায় জিনিস পৌঁছতে এ সব দোকান অপরিহার্য হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় দোকানটির ২ থেকে ৪ কিলোমিটারের মধ্যে যে-সব ঠিকানা রয়েছে, সেখানেই জিনিসপত্র পৌঁছে দিচ্ছে তারা।’’

২০১৬ সালে ২০০ কোটি ডলারের বেশি ব্যবসা করা সংস্থা ফ্লিপকার্ট কিছু দিন আগেই এই বাণিজ্যিক কৌশল নিয়েছে। সংস্থার মুখপাত্রের দাবি, বরাবরই তাঁরা ‘ডেলিভারি’র উপরে জোর দিয়েছেন। নিজস্ব ডেলিভারি সংস্থা ‘ইকার্ট’ও সেই লক্ষ্যেই তৈরি। ২০১৫ সালে কিছু পাড়ার দোকান ও ওষুধের দোকানের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে ইকার্ট।

এই জোট ব্যবসায়িক লাভের কারণেও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তথ্য পরিসংখ্যান বলছে, এই ‘লাস্ট মাইল ডেলিভারি’ বা ক্রেতার হাতে পৌঁছে দেওয়ার শেষ ধাপেই গোটা ‘ডেলিভারি’ প্রক্রিয়ার ৯০% খরচ হয়। পাড়ার দোকানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেই খরচে রাশ টানতে চাইছে ই-কমার্স সংস্থাগুলি।

দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের শহরে ব্যবসা ছড়ানোর জন্য আরও জরুরি হয়ে উঠছে ডেলিভারির এই নতুন ছক। সমীক্ষা অনুযায়ী আগামী ৫ বছরে ছোট শহর থেকে ব্যবসা ১৭% বাড়বে। ২০২০ সালে এ সব শহর থেকেই মোট ব্যবসার ৪০% আসবে। কিন্তু বাড়বে পৌঁছে দেওয়ার ঝক্কিও, যা সামাল দিতে ছোট দোকানের কাঁধে ভর করেই এগোতে চায় নেট-বাজার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement