ভিন্ রাজ্য থেকেও মেটানো যাবে বিদ্যুৎ, টেলিফোন বা কেব্ল টিভি-র মতো বিভিন্ন ধরনের পরিষেবার বিল। এ জন্য নেট পরিষেবা থাকারও দরকার নেই। অনুমোদিত ব্যাঙ্কের শাখায় গিয়ে টাকা জমা দিলেই হল। সেই ব্যাঙ্কের গ্রাহক না-হলেও চলবে। আবার নেট ব্যাঙ্কিং পরিষেবাতেও নিজের অ্যাকাউন্ট থেকেই সমস্ত বিলই মেটাতে পারবেন গ্রাহক। ওই ব্যাঙ্কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরিষেবা সংস্থার গাঁটছড়া না-থাকলেও। সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী মাসেই এই ব্যবস্থা চালু হওয়ার কথা।
যে-কোনও সময়ে, দেশের যে-কোনও প্রান্ত থেকেই বিভিন্ন পরিষেবার বিল সহজে মেটানোর পথ খুঁজতে ‘ভারত বিল পেমেন্ট সিস্টেম’ (বিবিপিএস)-এর মতো একটি সার্বিক পরিকাঠামো গড়ার কথা আগেই জানিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। ৮০টিরও বেশি আবেদন খতিয়ে দেখে অবশেষে ৩৫টি ব্যাঙ্ক এবং ৭টি ‘এগ্রিগেটর’ (যেমন পেটিএম বা অক্সিজেন) সংস্থাকে এই ব্যবস্থায় যুক্ত হওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছে আরবিআই। তাদের বলা হচ্ছে ‘ভারত বিল পেমেন্ট অপারেটিং ইউনিট’ (বিবিপিওইউ)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এখন ৯০ শতাংশেরও বেশি বিল মেটানো হয় ওই ৪২টি ব্যাঙ্ক ও সংস্থার মাধ্যমে। দু’লক্ষেরও বেশি পরিষেবা সংস্থা যুক্ত তাদের সঙ্গে। তবে বিবিপিএস-এর মূল পরিকাঠামোর দায়িত্বে থাকবে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন (এনপিসিআই)। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে তারাই ভারত বিল পেমেন্ট সেন্ট্রাল ইউনিট (বিবিপিসিইউ) হিসেবে কাজ করবে। তাদের সঙ্গে গাঁটছড়া থাকবে সব বিবিপিওইউ-র। উল্লেখ্য রান্নার গ্যাসের ভর্তুকির টাকাও গ্রাহকদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার মূল দায়িত্বে এনপিসিআই।
এনপিসিআই-এর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান স্বরজিৎ মণ্ডল জানান, আপাতত ১৩টি রাষ্ট্রায়ত্ত, ১২টি বেসরকারি, তিনটি বিদেশি ও ৭টি সমবায় ব্যাঙ্ক ছাড়পত্র পেয়েছে। এর মধ্যে কলকাতা থেকে রয়েছে শুধু ইউকো। জুনের শেষেই এই পরিষেবা চালুর চেষ্টা চলছে। ৪২টি বিবিপিওইউ-এর কর্তাদের নিয়ে আগামী ২৫ মে মুম্বইয়ে বৈঠকে বসবেন তাঁরা।
বিদ্যুৎ, পুরসভার কর বা টেলিফোনের বিল অনলাইনে বা ব্যাঙ্কের ‘ইসিএস’ পদ্ধতিতে মেটানোর ব্যবস্থা চালু থাকলেও সব ক্ষেত্রেই কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এক জায়গাতেই সব বিল মেটানোর সুযোগ সব সময়ে মেলে না। স্বরজিতবাবুর দাবি, বিবিপিএস ব্যবস্থায় সেই সুবিধা পাবেন গ্রাহক। বিশেষ করে বয়স্কদের বিল মেটানো অনেক সহজ হবে। তাঁদের হিসেবে, এখন মাসে প্রায় ৩০ লক্ষ গ্রাহক সশরীরে গিয়ে বিল মেটান। তাই বাইরে গেলে তাঁরা সমস্যায় পড়েন, বিশেষ করে যাঁদের নেট ব্যাঙ্কিং বা ব্যাঙ্কের ইসিএস পরিষেবা নেই। এনপিসিআই-এর দাবি, বিবিপিএস চালু হলে এই সব সীমাবদ্ধতা কার্যত উধাও হয়ে যাবে। দেশের যে-কোনও প্রান্ত থেকে যে-কোনও সময়েই বিল মেটানো যাবে।
ধরা যাক, কলকাতার এক বাসিন্দা বিল মেটানোর সময়ে ভিন্ রাজ্যে রয়েছেন। বিবিপিএস চালু হলে ওই রাজ্যেরই কোনও বিবিপিওইউ-র যে-কোনও শাখায় গিয়ে তিনি তা মেটাতে পারবেন। এ জন্য পরিষেবা সংস্থাটির যে-কোনও একটি বিবিপিওইউ-এর সঙ্গে গাঁটছড়া থাকলেই হবে।