এককাট্টা ইউরোপীয় ইউনিয়ন

ঋণ ফেরত নিয়ে কথা দিলে তবে ত্রাণ গ্রিসকে

পার্লামেন্টের পরীক্ষায় পাশ করলেন গ্রিক প্রধানমন্ত্রী। তবে এখনও মসৃণ নয় ঋণ পাওয়ার রাস্তা। কারণ, নতুন ঋণ নিলে তা ফেরতের স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি মিললে তবেই গ্রিসকে ত্রাণ দেবে ইউরোপ। গ্রিস ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১৮টি দেশই এ ব্যাপারে একমত।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

আথেন্স শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৫ ০১:৪২
Share:

পার্লামেন্টে সিপ্রাসকে (সামনে ডান দিকে) সমর্থন সতীর্থদের। ছবি: এএফপি।

পার্লামেন্টের পরীক্ষায় পাশ করলেন গ্রিক প্রধানমন্ত্রী। তবে এখনও মসৃণ নয় ঋণ পাওয়ার রাস্তা। কারণ, নতুন ঋণ নিলে তা ফেরতের স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি মিললে তবেই গ্রিসকে ত্রাণ দেবে ইউরোপ। গ্রিস ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১৮টি দেশই এ ব্যাপারে একমত।

Advertisement

সরকারি খরচ কমিয়ে, কর বাড়িয়ে আর্থিক সংস্কারের পথে হাঁটার প্রস্তাবে শনিবার সায় দিল গ্রিসের পার্লামেন্ট। এই শর্তেই গ্রিস অর্থনীতিকে বাঁচাতে আগামী তিন বছরের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউরোপীয় শীর্ষ ব্যাঙ্ক (ইসিবি) এবং আইএমফের কাছে ঋণ চাইবেন প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস। গ্রিসের প্রস্তাবে সায় দিতে ঋণদাতারা কতটা একমত হন, তার উপরই নির্ভর করছে তৃতীয় দফার আর্থিক ত্রাণ খাতে ৫৩৫০ কোটি ইউরো (৫৯০০ কোটি ডলার) সিপ্রাসের হাতে আসবে কি না। সেই সঙ্গেই তিনি ঋণের একাংশ মকুব করারও দাবি তুলবেন। ঋণদাতাদের বৈঠক ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর ব্রাসেল্‌সে।

সন্ধির ব্যাপারে বরাবরই আপত্তি তুলে আসছে এ পর্যন্ত গ্রিসের প্রধান ঋণদাতা (৬৮২০ কোটি ইউরো) জার্মানি। শনিবারও জার্মান অর্থমন্ত্রী ওল্‌ফগাং স্কেব্‌ল বলেন, ‘‘বৈঠকে সমঝোতায় পৌঁছনো অত্যন্ত কঠিন হবে।’’ সিপ্রাসের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে তিনি বলেছেন, ক্ষমতায় আসার পরে গত কয়েক মাসে ঋণ ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে কথা রাখেননি তিনি। ফলে তাঁদের আস্থা টলে গিয়েছে।

Advertisement

আগামী কাল মুখোমুখি বসবেন জার্মান চান্সেলর এঞ্জেলা মার্কেল এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ। বৈঠক শেষে গ্রিসের ভবিষ্যৎ নিয়ে ঋণদাতাদের চূড়ান্ত রায় দেওয়ার কথা। আর তার উপরই নির্ভর করছে গ্রিস ইউরোপীয় ইউনিয়নে থেকে ইউরো মুদ্রা ব্যবহার করতে পারবে কি না। উল্লেখ্য গ্রিসের জাতীয় আয়ের ১৮০ শতাংশই ঋণ।

শনিবার ৩০০ সদস্যের গ্রিক পার্লামেন্টে সিপ্রাসের নতুন প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হয়। সায় দিয়েছেন ২৫১ জন সদস্য, বিপক্ষে ছিলেন ৩২ জন। ৮ জন কোনও পক্ষেই মত দেননি। বাকিরা উপস্থিত ছিলেন না। তবে যাঁরা বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দু’জন, যাঁরা মত দেননি এবং যাঁরা অনুপস্থিত ছিলেন, তাঁরা সকলেই বামপন্থী সিপ্রাসের নেতৃত্বে গড়া সিরিজা পার্টির সদস্য। তা ছাড়া যাঁরা পক্ষে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সিরিজা পার্টির সদস্য সংখ্যা ১৫১-র কম। ফলে ভবিষ্যতে সরকারের স্থিতি সমস্যা হবে কি না, সে ব্যাপারেও কূটনীতিকরা প্রশ্ন তুলেছেন। সিপ্রাস ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগামী সপ্তাহেই মন্ত্রিসভা ঢেলে সাজা হবে।

নতুন প্রস্তাবে সায় পেলে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে গ্রিস। জার্মান চান্সেলর মার্কেল অবশেষে কিছুটা সুর নরম করে বলেছেন, তিনি চান না ইউরোপীয় ইউনিয়ন গ্রিসকে বিদায় জানাক। কারণ, মন্দার পরে এখনও পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়ায়নি ইউরোপীয় অর্থনীতি। গ্রিস বেরিয়ে গেলে তার উপর আবার আঘাত আসবে, যা তিনি চান না। ই ইউ তৈরি হয়েছিল কোনও রাষ্ট্রকে বিচ্ছিন্ন না-করার প্রতিশ্রুতি দিয়েই। তা কার্যত সম্ভব নয় বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি। আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টিন ল্যাগার্দে-ও বলেছেন, আলোচনার পথ সন্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলেই তাঁর আশা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন