ঘোষণার আগেই সেনসেক্স পড়ল ১১৪ পয়েন্ট

অবশেষে সুদ বাড়ানোর ভিত গড়ল ফেড রিজার্ভ

প্রায় এক দশকে এই প্রথম সুদ বাড়ানোর ভিত তৈরি করল মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ। বুধবার গভীর রাতে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) ব্যাঙ্কের কর্ণধার জেনেট ইয়ালেন জানালেন, ‘‘আগামী দিনে সুদ বৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী। তবে তা কখন এবং কী গতিতে হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মার্কিন অর্থনীতির দিকে নজর রাখবেন তাঁরা।’’ শেষমেশ আমেরিকায় সুদ বাড়লে, ভারত থেকে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির লগ্নির একটা বড় অংশ পাড়ি দিতে পারে বারাক ওবামার দেশে। ইয়ালেনের ঘোষণার আগে বুধবার মূলত এই আশঙ্কাতেই ১১৪ পয়েন্ট খুইয়েছে সেনসেক্স। দিনের শেষে দাঁড়িয়েছে ২৮,৬২২.১২ অঙ্কে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৫ ০২:৫০
Share:

বৈঠকের পর ইয়ালেন। ছবি: এএফপি।

প্রায় এক দশকে এই প্রথম সুদ বাড়ানোর ভিত তৈরি করল মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ। বুধবার গভীর রাতে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) ব্যাঙ্কের কর্ণধার জেনেট ইয়ালেন জানালেন, ‘‘আগামী দিনে সুদ বৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী। তবে তা কখন এবং কী গতিতে হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মার্কিন অর্থনীতির দিকে নজর রাখবেন তাঁরা।’’ শেষমেশ আমেরিকায় সুদ বাড়লে, ভারত থেকে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির লগ্নির একটা বড় অংশ পাড়ি দিতে পারে বারাক ওবামার দেশে। ইয়ালেনের ঘোষণার আগে বুধবার মূলত এই আশঙ্কাতেই ১১৪ পয়েন্ট খুইয়েছে সেনসেক্স। দিনের শেষে দাঁড়িয়েছে ২৮,৬২২.১২ অঙ্কে।

Advertisement

সেই ২০০৬ সালের জুন মাসের পর থেকে কখনও সুদ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেনি ফেড রিজার্ভ। মাঝের এক দশকে বিশ্বজোড়া মন্দা গিয়েছে। বেহাল হয়েছে মার্কিন অর্থনীতি। আবার গত বছর দুই ধরে একটু-একটু করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ওবামার দেশ। কিন্তু এই পুরো সময়ে বদলায়নি মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্কের একটি বয়ান। তা হল, সুদ বাড়ানোর আগে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য ‘ধৈর্য’ ধরতে চায় তারা। এ দিন ইয়ালেন জানিয়েছেন, এ বার বয়ান থেকে ওই ‘ধৈর্য’ শব্দটি ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। বার্তা স্পষ্ট। এ বার সুদ বাড়তে পারে যে কোনও সময়ে।

ইয়ালেন বলছেন, ‘‘এপ্রিলের ঋণনীতিতেই সুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। তবে তা বাড়তে পারে তার পরের যে কোনও ঘোষণায়।’’ তবে একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘তার মানে এই নয় যে, জুনে সুদ বাড়বেই।’’ আগামী দিনে মার্কিন অর্থনীতিতে আর্থিক বৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং মূল্যবৃদ্ধির হার কেমন দাঁড়ায়, তার উপর নির্ভর করেই সেই সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা।

Advertisement

ভারত-সহ প্রায় সব দেশের শেয়ার বাজারই এ দিন তাকিয়েছিল ফেড রিজার্ভের দিকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইয়ালেনের ঘোষণার আগে এ দিন কিছুটা সাবধানী হয়ে হাতের তাস উপুড় করেছেন ভারতের বাজারের লগ্নিকারীরা। শেয়ার কেনার দিকে ঝুঁকেছেন কম। বরং মুনাফার সুযোগ থাকলে তা বেচে দিয়েছেন। সূচকের পতনের যা অন্যতম কারণ।

ফেড রিজার্ভ কবে সুদ বাড়ানো শুরু করতে পারে, তা নিয়ে অবশ্য নানা মত আছে। কেউ মনে করছেন, তা জুন থেকে হতে পারে। কারও মতে, সেপ্টেম্বরের আগে সুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনা কম। এই জল্পনা বৃহস্পতিবারও ঘুরপাক খাবে ভারতের বাজারে। বিশেষত যেখানে আইএমএফ প্রধান ক্রিস্তিন ল্যাগার্দই বলেছেন, ফেড সুদ বাড়ালে, উন্নয়নশীল দেশগুলি থেকে লগ্নির বড় অংশ আমেরিকায় সরাতে পারে বিদেশি আর্থিক সংস্থা। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর রঘুরাম রাজনের অবশ্য দাবি, ভারত এই চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরি।

তবে আমেরিকা কত তাড়াতাড়ি সুদ বাড়াবে, তা নিয়ে ধন্দ বিস্তর। কারণ, ইয়ালেনই জানান, মার্কিন অর্থনীতিতে গতি ফিরছে। কিন্তু আগামী দিনে তা কিছুটা শ্লথ হতে পারে। বেড়েছে কর্মসংস্থান। ঊর্ধ্বমুখী চাহিদাও। কিন্তু বেতন তেমন বাড়েনি। সুবিধার নয় বাকি উন্নত দুনিয়ার দশাও। এই পরিস্থিতিতে সুদ বাড়লে, আরও দাম উঠবে ডলারের। রফতানির বাজার খোয়াবে আমেরিকা। সেই চ্যালেঞ্জ সামলে ইয়ালেন কী ভাবে সুদ বাড়ান, সে দিকেই নজর সকলের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন