মাস দেড়েকের মধ্যে আরও চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণের জন্য আগ্রহপত্র চাইবে কেন্দ্র। শনিবার কলকাতায় এ কথা জানান কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অধীন লগ্নি ও রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পদ পরিচালন দফতরের সচিব নীরজ কুমার গুপ্ত। তবে সংস্থাগুলির নাম জানাননি তিনি। এ দিন মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্সের সভায় তাঁর আশ্বাস, বাজেটে বিলগ্নিকরণ খাতে ৭২,৫০০ কোটি টাকা ঘরে তোলার যে-লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল, তা পূরণ করতে চেষ্টা করবেন তাঁরা।
বস্তুত, রাজকোষ ঘাটতিকে লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাখতে বিলগ্নিকরণেই ভরসা করতে হবে বলে বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি। ওই ঘাটতি জিডিপি-র ৩.২ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখার লক্ষ্য নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু অক্টোবরের হিসেবে, তা প্রায় ৫.২৪ লক্ষ কোটি টাকা ছুঁয়েছে, যা ইতিমধ্যেই বাজেটের হিসেবের প্রায় ৯৬ শতাংশের বেশি। তাই চলতি অর্থবর্ষের বাকি সময়ের মধ্যে আয় না-বাড়ালে ঘাটতির লক্ষ্য পূরণ করা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে। কারণ, পেট্রোল-ডিজেলে উৎপাদন শুল্ক ছাঁটাই, জিএসটি-তে কর বাবদ আয় কমার পাশাপাশি স্পেকট্রাম নিলামে প্রত্যাশিত দর ওঠেনি। ফলে বিলগ্নিকরণ মারফত আয়ের লক্ষ্য পূরণ জরুরি।
মার্চেন্টস চেম্বারের সভার পরে এই প্রশ্নে গুপ্ত বলেন, ‘‘নভেম্বর পর্যন্ত আমরা ৫২,৫০০ কোটি টাকা আয় করেছি। লক্ষ্যমাত্রা পূরণেও সব রকম ভাবে চেষ্টা করব।’’ উল্লেখ্য, আগে এই দফতরটি বিলগ্নিকরণ দফতর বলে পরিচিত ছিল। গত বছর তা বদলে লগ্নি ও রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পদ পরিচালন দফতর করা হয়।
গুপ্ত এ দিন জানান, ১৬টি সংস্থার সিংহভাগ মালিকানা বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এর মধ্যে আটটির জন্য আগ্রহপত্র চাওয়া হয়েছে। আরও তিন-চারটির জন্যও চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে সম্ভাব্য লগ্নিকারীদের কাছে আগ্রহপত্র চাইবেন তাঁরা।
এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন ওঠে এয়ার ইন্ডিয়া বিলগ্নিকরণ নিয়েও। শুক্রবার বিমান পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিন্হার মন্তব্য টাটাদের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থাটি হাতে নেওয়া নিয়ে জল্পনা উস্কে দিয়েছিল। পরে অবশ্য তিনি জানান, টাটারা লিখিত কিছু জানায়নি। সংস্থার শীর্ষ কর্তা এন চন্দ্রশেখরনের কথা থেকে এমন ইঙ্গিত পেয়েছেন তিনি। এ নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি গুপ্তও।
রাজ্যের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বেঙ্গল কেমিক্যালস বিলগ্নিকরণের সম্ভাবনা নিয়েও জল্পনা চলছে। আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন কর্মীরা। গুপ্ত জানান, এ নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।