Unemployment

স্বস্তি দিয়েছে আনলক, তবু শহরে কাজের ছবি বিবর্ণই

সঙ্গের সারণি থেকে স্পষ্ট, লকডাউনের সময়ে বেকারত্বের হার যেমন রকেট গতিতে বেড়েছে, তেমনই ঘরবন্দিত্ব শিথিল হতেই তা নেমেছে দ্রুত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২০ ০৬:০৫
Share:

প্রতীকী ছবি

মাঝে ঠিক ১২ সপ্তাহের ব্যবধান। লকডাউন শুরুর আগে বেকারত্বের হার যেখানে দাঁড়িয়েছিল, ‘আনলক’ পর্বে এই প্রথম তা নেমে এল প্রায় সেই উচ্চতায়।

Advertisement

উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র হিসেব, লকডাউন ঘোষণার আগে ২২ মার্চ ফুরনো সপ্তাহে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৮.৪১%। আর ২১ জুন শেষ হওয়া সপ্তাহে ৮.৪৮%। গ্রামে বেকারত্বের হার এখন (২১ জুন শেষ হওয়া সপ্তাহে) লকডাউন শুরুর ঠিক আগের সময়ের থেকে কম! যদিও শহরে কর্মহীনতার ছবি তুলনায় বিবর্ণ।

সঙ্গের সারণি থেকে স্পষ্ট, লকডাউনের সময়ে বেকারত্বের হার যেমন রকেট গতিতে বেড়েছে, তেমনই ঘরবন্দিত্ব শিথিল হতেই তা নেমেছে দ্রুত। মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে মে পর্যন্ত যেখানে তা ২০.১৯% থেকে ২৭.১১ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে, সেখানে জুনের তিন সপ্তাহে তা নেমেছে দ্রুত পায়ে। ১৭.৫১%, ১১.৬৩% এবং এ বারের ৮.৪৮%।

Advertisement

আরও পড়ুন: চিনা পণ্যে ক্ষোভ, ধোঁয়াশা বিকল্পের প্রশ্নে

যে দেশের কাজের বাজারে অন্তত ৯০% জন অসংগঠিত ক্ষেত্রে যুক্ত, সেখানে এই ছবি অপ্রত্যাশিত নয়। লকডাউনে কারখানা, অফিসের দরজা বন্ধ থাকা রুজি-রুটি কেড়েছে অনেকের। শ্রমিক কাজ পাননি। কাজের বরাত জোটেনি দিনমজুরের। বন্ধ ছিল অধিকাংশ দোকান, প্রায় সব শপিং মলের ঝাঁপ। তাই কাজ ছিল না সেই বিক্রিবাটার সঙ্গে যুক্তদের। টোটো-অটো-বাসচালক থেকে মালপত্র বয়ে দেওয়ার ঠেলাগাড়ির চালক— কাজের চাকা থমকেছিল অধিকাংশের। লকডাউন যত শিথিল হচ্ছে, তত বেশি করে কাজে ফিরছেন এঁদের অনেকে। ফিরছেন স্বনির্ভরেরাও। এই ছবিই জুনের পরিসংখ্যানে ক্রমাগত স্বস্তি জোগাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের দাবি।

কিন্তু তাঁরা মনে করাচ্ছেন বেকারত্ব এখনও অসম্ভব চড়া। সরকারি প্রতিষ্ঠান এনএসএসও-র সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ সালে ওই হার ছিল ৬.১%। তাতেই তা সাড়ে চার দশকে সর্বোচ্চ বলে হৈচৈ পড়ে। এখন সেখানে ৮% ছাপানো হারকে মাঝের ২৫-২৬-২৭ শতাংশের পাশে বামন দেখাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু আসলে কেন্দ্রের রক্তচাপ বাড়ানোর পক্ষে তা যথেষ্ট।

দ্বিতীয়ত, সাম্প্রতিক হিসেবকে সামান্য ভাল দেখাচ্ছে অনেকে হারানো কাজ ফিরে পাওয়ায়। কিন্তু নিট নতুন কাজ তেমন তৈরি হচ্ছে না।

আরও পড়ুন: ওষুধ শিল্পকে ডাক

তৃতীয়ত, লকডাউনে কাজ খুইয়ে ঘরে ফিরেছেন বহু পরিযায়ী শ্রমিক। সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে সেখানে যা কাজ পাচ্ছেন, হয়তো তা-ই করছেন তাঁরা। তাতে গ্রামে কাজের ছবিকে হয়তো তুলনায় চকচকে দেখাচ্ছে। কিন্তু আসলে কম মজুরিতে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। মুম্বই কিংবা চেন্নাইয়ে দিনে যাঁর ৭০০-৮০০ টাকা আয়, তিনি গ্রামে ফিরে ১০০ দিনের কাজে যোগ দিলে, হাতে পাবেন ১৮০ টাকা মতো। সে ক্ষেত্রে বাইরে এবং বড় শহরে থাকার খরচ যেমন নেই, তেমনই আয়ও অনেক কম। কম কাজের সুযোগও। দক্ষতার তুলনায় কম পারিশ্রমিকে কাজ করতে বাধ্য হওয়াও বিশেষজ্ঞদের মাথাব্যথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন