এআই কেনার শর্ত শিথিল, ক্রেতা পেতে অল্প ঋণ, পুরো সংস্থার ‘টোপ’

‘মহারাজা’-কে বেচতে দ্বিতীয়বার বাজারে নেমে ইচ্ছুকদের এ ভাবেই ডাক দিল কেন্দ্র। জানাল, এয়ার ইন্ডিয়ার (এআই) পুরো অংশীদারি কিনলে পরিচালনার রাশ তো মিলবেই। দেওয়া 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২০ ০৬:১৩
Share:

মিলবে ১০০% মালিকানা। পরিচালনার পুরো রাশও। কিন্তু পুরো ঋণ বইতে হবে না।

Advertisement

‘মহারাজা’-কে বেচতে দ্বিতীয়বার বাজারে নেমে ইচ্ছুকদের এ ভাবেই ডাক দিল কেন্দ্র। জানাল, এয়ার ইন্ডিয়ার (এআই) পুরো অংশীদারি কিনলে পরিচালনার রাশ তো মিলবেই। দেওয়া

হবে তার শাখা, কম খরচের বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসকে। কেনা যাবে আর এক শাখা, বিমানবন্দরের কাজকর্ম দেখাশোনার সংস্থা এআইএসএটিএসে কেন্দ্রের অংশীদারিও। সেই সঙ্গে যে দেনার বোঝা আগের বার সংস্থা বিক্রির পথে কাঁটা হয়েছিল, তা নিয়েও সতর্ক কেন্দ্র। ক্রেতাকে এ বার পুরো ধার বইবার আশঙ্কা থেকে মুক্তি দিয়েছে তারা।

Advertisement

এআই এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের মোট ধার ৬০,০৭৪ কোটি টাকা। তবে যারা সংস্থা দু’টি কিনবেন, বইবেন ২৩,২৮৬ কোটির বোঝা। বাকি ঋণের দায় কেন্দ্রের। অর্থ মন্ত্রকের বিলগ্নিকরণ দফতরের সচিব তুহিনকান্ত পাণ্ডে বলেন, ‘‘ক্রেতাকে যতটুকু দেনার দায় নিতে হবে, তা বিমানের দাম। ঋণ বাড়বেও না।’’

যদিও বিজেপি-র অন্দরেই আপত্তি উঠেছে। দলের সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর হুঁশিয়ারি, তিনি আদালতে যাবেন। কারণ সিদ্ধান্তটি রাষ্ট্র-বিরোধী। স্বামী বলেন, ‘‘পরিবারের সোনাদানা বেচে দেওয়া যায় না।’’ কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলের কটাক্ষ, ‘‘কেন্দ্রের ঘরে টাকা না-থাকলে কী করবে? ১০০ দিনের কাজে বিপুল বকেয়া। তাই দামি সম্পত্তিগুলি বেচছে।’’ এই অর্থবর্ষে অবশ্য এআই বিলগ্নির টাকা রাজকোষে ঢুকবে না। কারণ ১৭ মার্চের মধ্যে আগ্রহপত্র দিতে হবে। ফল ৩১ মার্চ। এআইয়ের সিএমডি অশ্বিনী লোহানির আশ্বাস, ‘‘নতুন মালিকের কাছে সব কর্মীই কাজ করবেন। সংস্থায় বাড়তি কর্মী নেই।’’

প্রথমবার এআইয়ের ৭৬% বিক্রির চেষ্টা হয়েছিল। ক্রেতা মেলেনি। তবে এ বার মিলবে, আশাবাদী বিমানমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী। তাঁর যুক্তি, ‘‘এআই ও তার শাখার যৌথ মালিকানা লোভনীয় সম্পত্তি। অবশ্য হস্তান্তরের পরে এয়ার ইন্ডিয়া ব্র্যান্ডই ব্যবহার করতে হবে।’’ তবে দেশি-বিদেশি সংস্থা মিলে কিনলে বিদেশি সংস্থা সর্বোচ্চ ৪৯% মালিকানা নিতে পারবে। সিংহভাগ মালিকানা ও কার্যকরী

নিয়ন্ত্রণ থাকবে ভারতীয়ের হাতেই।

তবে এ বারও বেচা যাবে কি না, প্রশ্ন উঠছেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, এত বড় সংস্থা একলপ্তে কেনা কঠিন। তার আয়ের তুলনায় মূল্য প্রায় ১১.৬ গুণ বেশি। যেখানে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের মতো লাভজনক সংস্থার তা ৫.৮ গুণ। ফলে যারাই কিনুক, খরচ কমানো নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। সূত্রের খবর, এ বারও বিক্রি না-হলে, এআই, তার শাখা, সংস্থার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিমান, ছোট বিমান ইত্যাদি সব আলাদা করে বেচতে হতে পারে, কম দামেই। তবে বিমান মন্ত্রকের কর্তাদের আশা, বিদেশি বিমান সংস্থার পাশাপাশি ইন্ডিগো, হিন্দুজা, এমনকি টাটারাও এই দফায় উৎসাহী হতে পারে। টাটা সন্সের শীর্ষ কর্তারাও সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন