নোট বাতিলের ধাক্কায় ওষ্ঠাগত হয়েছিল ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পের প্রাণ। অনেক সংস্থা ঝাঁপ ফেলতে বাধ্য হয়েছিল। কাজ খুইয়েছিলেন অনেকে। সেই ক্ষত এখনও শুকোয়নি। ক্ষোভ যায়নি জিএসটি চালুর সময়ে ভোগান্তি নিয়েও। অথচ দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছে লোকসভা ভোট। এই অবস্থায় সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতে এক গুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা এবং ঢাক পিটিয়ে তা প্রচারের জোড়া কৌশল নিতে চলেছে কেন্দ্র। শুক্রবারই ওই শিল্পের মন জয়ের লক্ষ্যে এক গুচ্ছ সুরাহা ঘোষণা করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকারি সূত্রের খবর, সহজে ঋণ, বাজারে পণ্য বিপণনের সুবিধা, সরকারি সাহায্য এবং ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পের কর্মীদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প ঘোষণা হবে। ১০০ দিন ধরে তা নিয়ে প্রচার চলবে ১০০টি জেলায়। খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা জেলায়-জেলায় গিয়ে ছোট শিল্পপতি, কারখানার মালিকদের বোঝাবেন যে, সরকার তাদের জন্য কী কী প্রকল্প চালু করেছে এবং সেই সুবিধা কী ভাবে কাজে লাগাতে পারেন তাঁরা।
সরকারি সূত্রের খবর, দেশে প্রায় ৬.৩ কোটি ছোট-মাঝারি সংস্থা আছে। সেখানে কাজ করেন ১০ কোটিরও বেশি জন। নোট বাতিলে এই সংস্থাগুলির সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু এর সঙ্গে যুক্তরা বিজেপির অন্যতম ভোটব্যাঙ্ক। এই ক্ষেত্র কর্মসংস্থানের বড় জায়গা। তাই এখন ক্ষোভে প্রলেপ দিয়ে ফের এই শিল্পকে কাছে টানার চেষ্টা করছে কেন্দ্র।
সরকারি সূত্রে খবর, মূলত ৮০টি ক্লাস্টারে এই ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলি ছড়িয়ে রয়েছে। প্রতি ক্লাস্টারের জন্য এক জন কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। তাঁরাই ব্যাঙ্ক, রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে এই শিল্পের কর্মীদের অন্তর্ভুক্তির জন্যও ইপিএফও, ইএসআইয়ের সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকবেন তাঁরা।
হালে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে আলোচনার পরে ছোট-মাঝারি শিল্পকে এক ঘন্টার কম সময়ে ঋণ মঞ্জুরের লক্ষ্যে পোর্টাল চালু করেছে কেন্দ্র। ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলি যাতে সরকারকে পণ্য বেচতে পারে, তার ব্যবস্থা হচ্ছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে লড়াইয়েরও অন্যতম কারণ তাদের সহজে পুঁজি জোগানোর প্রবল চেষ্টা। এখন লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করে সেই ছোট-মাঝারি শিল্পের মন জয়েই মরিয়া মোদী সরকার।