সংসদে হিন্দুস্তান অ্যান্টিবায়োটিক্স-কে পুনরুজ্জীবিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সার ও রসায়নমন্ত্রী অনন্ত কুমার। কথা দিয়েছেন, কর্মীদের বকেয়া বেতন মেটাতে ১১ কোটি টাকা মঞ্জুর করারও। কিন্তু সেই আশ্বাস সত্ত্বেও এখনও তেমন ভরসা পাচ্ছেন না সংস্থার কর্মীরা। তাদের দাবি, ওষুধ তৈরি ফের পুরোদমে চালু হলে, তুলনায় কম দামে ওষুধ পাবেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু তবুও তিন বছর ধরেই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র উদাসীন।
গত ১১ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না দীর্ঘ দিন বিআইএফআরে পড়ে থাকা হিন্দুস্তান অ্যান্টিবায়োটিক্সের কর্মীরা। দেশের প্রথম রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ তৈরির ওই কারখানায় কাজ করেন প্রায় ১,১০০ কর্মী। বছর তিনেক আগে একটি পুনরুজ্জীবন প্রকল্প কেন্দ্রের কাছে জমা পড়লেও, তা বাস্তবায়িত করতে কেন্দ্র পদক্ষেপ করেনি বলে কর্মীদের অভিযোগ। অথচ প্রায় ৬০ বছরের পুরনো ওই সংস্থার এক সময় পেনিসিলিন তৈরিতে প্রসিদ্ধি ছিল।
শুধু বেতন নয়, গত সাত বছরে যে সব কর্মী অবসর নিয়েছেন, গ্র্যাচুইটি-সহ অবসরকালীন পাওনাও পাননি তাঁরা। হিন্দুস্তান অ্যান্টিবায়োটিক্স মজদুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুনীল পাটসকরের অভিযোগ, ‘‘অবসরকালীন পাওনা দেওয়া হয়নি। কর্মীদের বেতন থেকে পিএফ, আয়কর, সমবায় সমিতির টাকাও কেটে নেওয়ার পরে জমা দেননি কর্তৃপক্ষ।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বিআইএফআরের নির্দেশ মতো অপারেটিং এজেন্সি আইডিবিআই ব্যাঙ্ক ২০১২ সালে একটি পুনরুজ্জীবন প্রকল্প সার ও রসায়ন মন্ত্রকের কাছে জমা দেয়। নিয়ম অনুযায়ী, খতিয়ে দেখার পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রকল্পটিকে মন্ত্রিসভার কাছে পাঠানোর কথা। কিন্তু তিন বছর ধরে সেই খতিয়ে দেখার কাজই করতে পারেনি মন্ত্রক।’’
অথচ কর্মীরা মনে করেন, সংস্থার তৈরি ওষুধের বাজার এখনও ভাল। এবং সংস্থায় ওষুধ তৈরি হলে, কম দামে তা পাবেন মানুষও। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘সংস্থা চালু আছে। ওষুধের বাজারও রয়েছে। শুধু কার্যকরী মূলধনের অভাবে উৎপাদন বন্ধ। ৪৫ কোটি টাকা পেলেই তা ফের চালু করা যাবে। কিন্তু সরকার কেন ওই টাকা দিচ্ছে না, তা বুঝতে পারছি না।’’ ইউনিয়নের অন্যতম নেতা শমীন্দু চাকী বলেন, ‘‘১১ মাসের বকেয়া বেতন মেটাতেই লাগবে ৩৩ কোটি। তা ছাড়া, সংস্থা পুনরুজ্জীবনের কথা দীর্ঘকাল ধরেই বলা হচ্ছে।’’ তাই মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও না-আঁচালে বিশ্বাস নেই বলে মনে করছেন তাঁরা।