ফোক্সভাগেনকে পরিবেশ ট্রাইবুনাল

দূষণ কমিয়ে দেখানোর সফটওয়্যার থাকা ডিজেল গাড়ি বিক্রি করা যাবে না ভারতে

ভারতের বাজারে দূষণ কমিয়ে দেখানোর সফটওয়্যার ব্যবহৃত ডিজেল গাড়ি বিক্রি করতে ফোক্সভাগেনকে নিষেধ করল কেন্দ্রীয় পরিবেশ ট্রাইবুনাল। আগামী ১১ জানুয়ারির মধ্যে জার্মান সংস্থাটি এ নিয়ে ব্যবস্থা নিতেও বলেছে তারা। পাশাপাশি, ফোক্সভাগেনকে জরিমানা করার বিষয়টি নিয়েও চিন্তা-ভাবনা শুরু করা হয়েছে বলে ট্রাইবুনালকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রক।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি ও বার্লিন শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৭:৪৮
Share:

ভারতের বাজারে দূষণ কমিয়ে দেখানোর সফটওয়্যার ব্যবহৃত ডিজেল গাড়ি বিক্রি করতে ফোক্সভাগেনকে নিষেধ করল কেন্দ্রীয় পরিবেশ ট্রাইবুনাল। আগামী ১১ জানুয়ারির মধ্যে জার্মান সংস্থাটি এ নিয়ে ব্যবস্থা নিতেও বলেছে তারা। পাশাপাশি, ফোক্সভাগেনকে জরিমানা করার বিষয়টি নিয়েও চিন্তা-ভাবনা শুরু করা হয়েছে বলে ট্রাইবুনালকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রক। যদিও দেশে অডি, স্কোডা-সহ তাদের গাড়িতে কোনও বিশেষ সফটওয়্যার বসানো নেই বলেই দাবি করেছে সংস্থা।

Advertisement

প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বরে মার্কিন মুলুকে সামনে এসেছে ফোক্সভাগেনের দূষণ কেলেঙ্কারি। জানা গিয়েছে, সেখানে দূষণের আসল মাত্রা পরীক্ষায় যাতে ধরা না-পড়ে, তার জন্য কারচুপি করেছে সংস্থা। ডিজেল গাড়ি তৈরির সময়েই তাতে বসিয়ে রেখেছে এমন সফটওয়্যার, যাতে তা চলার সময় আসলে যা দূষণ হচ্ছে, সেটি কমিয়ে দেখানো যায়। পরীক্ষা করতে গেলেই চালু হয়ে যায় ওই সফটওয়্যার। আর তার ফলে দূষণের মাত্রা নেমে আসে আসলের তুলনায় অনেক নীচে।

এর পর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই শুরু হয়েছে ফোক্সভাগেনের বিরুদ্ধে তদন্ত। ভারতেও অটোমোবাইল রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (এআরএআই)-কে এ নিয়ে তদন্তের ভার দেয় কেন্দ্র। সম্প্রতি তারা এর রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর দেশে গাড়ি ফেরাতে ফোক্সভাগেনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে ভারী শিল্প মন্ত্রক। যার সংখ্যা হতে পারে প্রায় ৩.২ লক্ষ। তবে এখনই ভারতে ফোক্সভাগেনের গাড়ি বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি ট্রাইবুনাল। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি এ নিয়ে ফের শুনানিতে বসবে তারা। সে দিনই নিজেদের চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেবে এআরএআই।

Advertisement

যদিও ট্রাইবুনালে সংস্থার দাবি, দূষণ কমিয়ে দেখানোর ঘটনাটি মূলত ঘটেছে মার্কিন মুলুকে। আমেরিকা এবং ইউরোপের কোনও দেশ এখনও পর্যন্ত তাদের কোনও জরিমানা করেনি। পাশাপাশি, ভারতে তারা সম্পূর্ণ অন্য প্রযুক্তিতে গাড়ি তৈরি এবং বিক্রি করে। এ ক্ষেত্রে ভারত স্টেজ ফোরের সব নিয়ম নেমেই সেগুলি উৎপাদন করা হয় বলেও তাদের দাবি। সম্পূর্ণ বিষয়টি নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ট্রাইবুনালে উত্তর দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে ফোক্সভাগেন।

এ দিকে, আমেরিকায় এই কেলেঙ্কারিতে চলতি সপ্তাহেই মামলার মুখে পড়েছে সংস্থা। যেখানে জার্মান গাড়ি নির্মাতাটিকে দিতে হতে পারে ২,০০০ কোটি ডলারেরও (প্রায় ১,৩৪,০০০ কোটি টাকা) বেশি জরিমানা। অডি, পোর্শে-সহ ফোক্সভাগেনের সব ব্র্যান্ডের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন আইন মন্ত্রক। ২ লিটার এবং ৩ লিটারের বেশি ইঞ্জিনের প্রায় ৬ লক্ষ ডিজেল গাড়িতে দূষণ কমিয়ে দেখানোর জন্য বিশেষ সফটওয়্যার বসানো হয়েছিল বলে জানিয়েছে তারা। সরকারি ভাবে জরিমানার মোট অঙ্ক না-জানালেও, প্রতিটি গাড়ির ক্ষেত্রে ৩৭,৫০০ ডলার এবং প্রতি সফটওয়্যার পিছু ২,৭৫০ ডলার ধরেছে মন্ত্রক। ফলে সব মিলিয়ে মোট জরিমানা ছাড়াতে পারে ২ হাজার কোটি ডলার।

কিন্তু এই অবস্থাতেও কোনও ভাবে সেখানে নিজেদের ডিজেল গাড়ি বন্ধের কোনও সিদ্ধান্ত নেই বলেই স্পষ্ট জানিয়েছেন ফোক্সভাগেনের সিইও ম্যাথিয়াস মুলার। তাঁর দাবি, আগামী ১০ বছরে বৈদ্যুতিন গাড়ির বাজার বাড়তে পারে ঠিকই, কিন্তু তত দিন পর্যন্ত ডিজেল গাড়ির উপরই ভরসা রাখতে হবে তাঁদের। ফলে উৎপাদন কমানো বা বন্ধের কোনও প্রশ্ন নেই বলে মুলারের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন