Lok Sabha Election 2024 Vote Percentage

২০১৯ বনাম ২০২৪: প্রথম দু’দফার মতো তৃতীয় দফাতেও বাংলায় ভোটদানের হার কমল

নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, মালদহ উত্তর, মালদহ দক্ষিণ, জঙ্গিপুর এবং মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে ২০১৯ সালে ভোট পড়েছিল গড়ে ৮১.৮ শতাংশ। ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা কমল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৪ ১৭:২৬
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

প্রথম এবং দ্বিতীয় দফার মতোই তৃতীয় দফাতেও বাংলায় ভোটদানের হারে ২০১৯ সালের থেকে পিছিয়েই রইল ২০২৪ সাল। মঙ্গলবার বাংলার চার আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে। মালদহ উত্তর, মালদহ দক্ষিণ, জঙ্গিপুর এবং মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ পর্ব সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার নির্বাচন কমিশন ভোটদানের হারের যে হিসাব দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, তৃতীয় দফায় চার আসনে ভোট পড়েছে ৭৭.৫৩ শতাংশ। যা ২০১৯ সালের থেকে প্রায় চার শতাংশ কম। পাশাপাশি, ভগবানগোলায় ভোট পড়েছে ৮০.০৭ শতাংশ।

Advertisement

নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, মালদহ উত্তর, মালদহ দক্ষিণ, জঙ্গিপুর এবং মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে ২০১৯ সালে ভোট পড়েছিল গড়ে ৮১.৮ শতাংশ। ২০২৪ সালে সেই হার কমল। প্রথম এবং দ্বিতীয় দফাতেও একই ধারা দেখা গিয়েছিল। ২০১৯ সালের তুলনায় এ বার কম ভোট পড়েছে।

শুধু মোট হিসাব নয়, আসন ভিত্তিক ভোটদানের হারও প্রকাশ করেছে কমিশন। সূত্রের খবর, মালদহ উত্তরে মঙ্গলবার ভোট পড়েছে ৭৬.০৩ শতাংশ। যা ২০১৯-এর তুলনায় ৪.৪৬ শতাংশ কম। এ বার এই কেন্দ্রে ছিল ত্রিমুখী লড়াই। ২০১৯ সালে এই আসন থেকে বিজেপির টিকিটে জিতেছিলেন খগেন মুর্মু। এ বারও বিজেপি তাঁকেই প্রার্থী করেছে। তাঁর বিপক্ষে তৃণমূল প্রার্থী করেছে প্রাক্তন আইপিএস অফিসার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এ ছাড়াও এই কেন্দ্রে লড়ছেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী মোস্তাক আলম।

Advertisement

মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রে ভোটদানের হার ৭৬.৬৯ শতাংশ। ২০১৯ সালে এই আসনে ভোট পড়েছিল ৮১.৪৯ শতাংশ, বলে কমিশন সূত্রে খবর। এই আসনে গত বার জয় পেয়েছিল কংগ্রেস। সে বার হাত শিবিরের প্রার্থী ছিলেন আবু হাসেম খান চৌধুরী। ২০০৯ সাল থেকে এই কেন্দ্র থেকে লড়ে জয় পেয়েছেন তিনি। কংগ্রেস এ বার এই আসনে তাঁর পুত্র ইশা খান চৌধুরীকে প্রার্থী করেছিল। বিজেপির হয়ে লড়েছিলেন শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীকে। গত বারও তাঁকেই প্রার্থী করেছিল পদ্মশিবির। এই আসনে প্রার্থী বদল করেছিল তৃণমূল। মোজ্জেম হোসেনের পরিবর্তে তৃণমূল এ বার শাহনাজ় আলি রাইহানকে প্রার্থী করেছে।

কমিশন সূত্রে খবর, জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রে মঙ্গলবার ভোট পড়েছে ৭৫.৭২ শতাংশ। ২০১৯ সালে এই আসনে ভোটদানের হার ছিল ৮০.৮৩ শতাংশ। চার কেন্দ্রের মধ্যে এই আসনেই সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে। গত বার এই আসন নিজেদের দখলে রেখেছিল বাংলার শাসকদল তৃণমূল। এই কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ খলিলুর রহমানের উপর এ বার ভরসা রেখেছে ঘাসফুল শিবির। বিজেপির টিকিটে এই আসন থেকে লড়েছেন ধনঞ্জয় ঘোষ। আর কংগ্রেস প্রার্থী করেছিল মোর্তাজা হোসেন বকুলকে।

কমিশনের থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার চার আসনের মধ্য সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে মুর্শিদাবাদেই। শেষ পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই লোকসভা কেন্দ্রে ভোটদানের হার ৮১.৫২ শতাংশ। কমিশন সূত্রে খবর, এই সংখ্যাটা সম্পূর্ণ নয়। ফলে ভোটদানের হার আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৯ সালে এই লোকসভা আসন থেকে লড়ে জয় পেয়েছিলেন তৃণমূলের আবি তাহের খান। বাংলার শাসক দল এ বারও তাঁকেই টিকিট দিয়েছে। বিজেপির প্রার্থী গৌরীশঙ্কর ঘোষ। কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিম প্রার্থী হয়েছিলেন এই আসন থেকে। ২০১৯ সালে মুর্শিদাবাদ আসনে ভোট পড়েছিল ৮৪.৪১ শতাংশ।

উল্লেখ্য, প্রথম এবং দ্বিতীয় দফার ভোটদানের হার নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। গত ৩০ এপ্রিল প্রথম এবং দ্বিতীয় দফায় সারা দেশে কত শতাংশ ভোট পড়েছে তার পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছিল কমিশন। প্রথম দফার ভোট হয়ে যাওয়ার প্রায় ১১ দিন পর এই চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করা হয়েছিল। দেশে প্রথম দফার নির্বাচন হয় ১৯ এপ্রিল। সে দিন বাংলার তিন কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়েছিল। কমিশন সূত্রে ২০ তারিখ জানা গিয়েছিল, প্রথম দফায় দেশে ভোট পড়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। এর পর দ্বিতীয় দফার ভোট হয় ২৬ এপ্রিল। সে দিনও বাংলার তিনটি কেন্দ্রে ভোট হয়। কমিশন সূত্রে পর দিন জানানো হয়, দেশে গড়ে ভোট পড়েছে ৬০.৯৬ শতাংশ। কিন্তু গত মঙ্গলবার কমিশনের তরফে নতুন বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, প্রথম দফায় দেশে ৬৬.১৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় দফায় ৬৬.৭১ শতাংশ ভোট পড়েছে। অর্থাৎ, আগে যা জানা গিয়েছিল, তার চেয়ে প্রায় ছয় শতাংশ বেড়ে গিয়েছে কমিশনের হিসাব। এই ভোট বৃদ্ধি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বাংলার শাসকদল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন