হিসেবেই প্রশ্ন, আটকে গেল বৃদ্ধির রিপোর্ট

আর্থিক বৃদ্ধি, চাকরির সংখ্যা, আয় মাপার পদ্ধতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে খসড়া রিপোর্ট তৈরি করেছিল মুরলী মনোহর জোশীর এস্টিমেটস কমিটি।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৫৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

আর্থিক বৃদ্ধি, চাকরির সংখ্যা, আয় মাপার পদ্ধতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে খসড়া রিপোর্ট তৈরি করেছিল মুরলী মনোহর জোশীর এস্টিমেটস কমিটি। কিন্তু সেই রিপোর্ট প্রকাশ হলে নরেন্দ্র মোদী সরকার অস্বস্তিতে পড়বে বুঝতে পেরে আপত্তি তুললেন বিজেপি সাংসদরা। ফলে রিপোর্ট চূড়ান্ত হল না। এর আগে নোট বাতিলের সমালোচনা করে বীরাপ্পা মইলির নেতৃত্বাধীন অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আনা রিপোর্টও ঠিক এ ভাবেই আটকে দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদরা।

Advertisement

বৃদ্ধির হারে ভারত বিশ্বে সেরা বলে হামেশাই ঢাক পেটায় মোদী সরকার। কিন্তু তারা ক্ষমতায় এসে বৃদ্ধি মাপার পদ্ধতি বদলে দেওয়ার পরে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আগেও। অন্য দিকে আবার বছরে অন্তত এক কোটি কাজ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তখ্‌ত দখল করলেও, এই পাঁচ বছরে তা রাখতে না পারার অভিযোগে নরেন্দ্র মোদীকে বিঁধছেন বিরোধীরা। এমনকি খোদ শ্রম মন্ত্রকের দেওয়া চাকরির হিসেবই তাঁর প্রতিশ্রুতির থেকে অনেক কম হওয়ায় কেন্দ্র সেই পরিসংখ্যান প্রকাশ বন্ধ করে দিয়েছে।

মোদী সরকার চাষিদের আয় দ্বিগুণের প্রতিশ্রুতি দিলেও, সেই আয় নিয়ে তথ্য অমিল। এই প্রেক্ষিতেই বিজেপির ‘মার্গদর্শক মণ্ডলী’-র সদস্য মুরলী মনোহর জোশীর নেতৃত্বে এস্টিমেটস কমিটি আলোচনা শুরু করেছিল। কমিটির সামনে প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন, অর্থ মন্ত্রক, শ্রম মন্ত্রক ও পরিসংখ্যান মন্ত্রকের কর্তারা মতামত জানিয়েছিলেন। সুব্রহ্মণ্যন অবশ্য প্রকাশ্যেই জিডিপি মাপার নতুন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।

Advertisement

সূত্রের দাবি, তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে খসড়া রিপোর্টে বলা হয়, চাকরি বা আয় নিয়ে এখন যে সব পরিসংখ্যান তৈরি হয়, তা অনেক পুরনো। ২০১৭-’১৮ সালে কাজ হচ্ছে ২০১১-’১২ সালের হিসেবের ভিত্তিতে। এখন অর্থনীতিতে কী ঘটছে, সেই হিসেব নেই। জিডিপি ও অন্যান্য হিসেবের পদ্ধতি ঢেলে সাজানোর সুপারিশ করে প্রশ্ন তোলা হয়, রুটি-রোজগার নিয়ে সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলে সরকারের নীতি তৈরি হচ্ছে কী ভাবে? সরকার সাফল্যে দাবিই বা করছে কিসের ভিত্তিতে?

আজ এস্টিমেটস কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে জোশীর সঙ্গে বিজেপিরই নিশিকান্ত দুবে, রমেশ বিদুরিদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় বলে সূত্রের দাবি। ভোটের জন্য কংগ্রেসের অনেকে অনুপস্থিত ছিলেন। তাই উল্টো দিকে পাল্টা সরব হন সিপিএমের মহম্মদ সেলিম। কমিটির বৈঠকের আগে তিনি টুইট করেন, ‘‘এই রিপোর্ট চূড়ান্ত হলে অনেক ধারণা ভেঙে যাবে।’’

সূত্রের দাবি, বিজেপি সাংসদরা খসড়া রিপোর্টে আপত্তি জানিয়ে ‘ডিসেন্ট নোট’ দেওয়ার প্রস্তাব দিলে কমিটির চেয়ারম্যান জোশী জানান, এস্টিমেটস কমিটির রিপোর্টে তা দেওয়া যায় না। ভোটের জন্য ব্যস্ত বলে রিপোর্ট পড়ার সময় পাননি বলে যুক্তি বিজেপি সাংসদদের। প্রশ্ন ওঠে, রিপোর্ট না পড়ে আপত্তি কী ভাবে? ঠিক হয়, এক সপ্তাহ পরে বিজেপি সাংসদরা লিখিত মতামত জানাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন