পণ্য পরিষেবা করের (জিএসটি) সর্বোচ্চ হার ৪০% পর্যন্ত বাড়ানোর রাস্তা খুলে রাখতে চায় জিএসটি পরিযদ। যাতে ভবিষ্যতে প্রয়োজনে তেমনটা করতে আলাদা ভাবে সংসদের অনুমোদন না লাগে। এই সংক্রান্ত খসড়া বিলে তাই বিষয়টি ঢোকাতে চায় তারা। এ নিয়ে আলোচনা চায় ৪-৫ মার্চের বৈঠকে।
পরিষদে সর্বসম্মতিতে জিএসটি-র ৪টি হার (৫, ১২, ১৮ ও ২৮ শতাংশ) ঠিক হয়েছে আগেই। তাতে বদলের পরিকল্পনা এখন নেই। কিন্তু বিলের খসড়ায় সর্বোচ্চ হার ১৪ শতাংশের পরিবর্তে ২০% রাখতে চাইছে তারা। অর্থাৎ, এখন ১৪% করে কেন্দ্রীয়-জিএসটি (সিজিএসটি) এবং রাজ্য-জিএসটি (এসজিএসটি) মিলিয়ে মোট ২৮% পর্যন্ত কর চাপানোর কথা ঠিক হয়েছে। কিন্তু পরে দু’তরফে ২০% করে মোট ৪০% পর্যন্ত কর বসানোর রাস্তা যাতে খোলা থাকে, এখনই সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে চায় তারা।
মোদী সরকারের জমানায় জিএসটি নিয়ে দর কষাকষির সময়ে কংগ্রেসের দাবি ছিল, জিএসটির সর্বোচ্চ হার ১৮ শতাংশে বাঁধা হোক। এবং লিখিত ভাবে তার উল্লেখ থাকুক বিলে। কিন্তু সে কথা মানতে রাজি হয়নি কেন্দ্র। তাদের যুক্তি ছিল, সে ক্ষেত্রে করের হার সামান্য অদল-বদল করতেও প্রতি বার সংসদের অনুমোদন লাগবে। পরিষদ সূত্রের খবর, ওই একই কারণে সর্বোচ্চ হার ৪০% পর্যন্ত বাড়ানোর রাস্তা খোলা রাখতে চাইছে তারা।
তা ছাড়া জিএসটি চালু হলে, ২৮ শতাংশের থেকেও বেশি ‘কর’ দিতে হবে দামি গাড়ির মতো বিলাস সামগ্রী ও সিগারেট-তামাক-পানমশলা-কোল্ড ড্রিঙ্কের মতো ক্ষতিকর পণ্যে। কারণ, সেখানে ২৮% করের উপরে গুনতে হবে বাড়তি সেস। জিএসটি চালুর পরে প্রথম পাঁচ বছর রাজস্ব কমলে, রাজ্যগুলিকে তা পুষিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কেন্দ্র। এই ক্ষতিপূরণ গুনতে বছরে লাগবে ৫০ হাজার কোটি। সেই টাকা জোগাড় করতেই ওই সেস বসানোর সিদ্ধান্ত বলে দাবি করেছিল কেন্দ্র।
রাজ্যগুলিকে ৫ বছর ক্ষতিপূরণ দেবে কেন্দ্র। তারপরে সেস আর রাখা হবে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। ফলে বিশেষজ্ঞদের মতে, তখন সর্বোচ্চ হার বাড়াতে হতে পারে, যাতে ওই সব পণ্যে করের চড়া হার বহাল থাকে। তা ছাড়া, সেসের টাকা রাজ্যের সঙ্গে ভাগ হয় না। জমা হয় কেন্দ্রের রাজকোষে। তাই ক্ষতিপূরণের সময় চুকলে, সেসের বদলে করের হার বাড়ানোর দাবি তুলতে পারে রাজ্যগুলি। এ সব বিষয় মাথায় রেখেও সর্বোচ্চ হার বাড়ানোর পথ পরিষদ খুলে রাখতে চাইছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।