প্রথমে নোটবন্দি। আর তার পরে জিএসটি চালু। এই জোড়া ধাক্কা যে ব্যবসার কোমর ভেঙে দিয়েছে, সেই অভিযোগ বার বার তুলেছে আবাসন শিল্প। ভোটের মুখে তাদের ক্ষোভে জল ঢালতে গিয়ে নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময়ে কার্যত সে কথা কবুল করলেন ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীষূয গয়াল।
বৃহস্পতিবার নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাইয়ের অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে গয়াল বলেন, আবাসন শিল্পকে চাঙ্গা করতে পুঁজি ঢালার পরিমাণ বাড়ানো জরুরি। প্রকল্পের মূল্যায়ন ও দ্রুত কাজ চালু করার দিকে নজর দিতে হবে ব্যাঙ্কগুলিকে। জিএসটিতে যে আবাসন শিল্প বেকায়দায়, তা আঁচ করে তাঁর আশ্বাস, শীঘ্রই আবাসনের ক্ষেত্রে পরিবর্তিত জিএসটি হারের বিষয়টি ঠিক হবে। আর সেই সূত্রেই তাঁর স্বীকারোক্তি, ‘‘এই শিল্প সত্যিই সমস্যার মধ্যে দিয়ে চলেছে। এ (জিএসটির হার) বিষয়ে মন্ত্রিগোষ্ঠীর চূড়ান্ত সুপারিশ শিল্পকে হতাশ করবে না। জিএসটি পরিষদের আগামী বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা হবে।’’
দিল্লির মসনদে ফিরতে ‘সবার জন্য বাড়ি’র স্লোগান যে প্রচারে তাঁর অন্যতম হাতিয়ার হবে, বুধবার এই অনুষ্ঠানের মঞ্চেই তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই সেই লক্ষ্যপূরণে গতি আনতে নির্মাণ শিল্পের সঙ্গে ব্যাঙ্কগুলিকে আলোচনায় বসার পরামর্শ দিলেন গয়াল। তার জন্য সময় বেঁধে দিলেন ৭ থেকে ১৫ দিন। ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক অ্যাসোসিয়েশনকে বললেন ওই সময়ের মধ্যে আবাসন শিল্পের সঙ্গে অবশ্যই আলোচনায় বসতে।
আবাসন শিল্পকে চাঙ্গা করার প্রসঙ্গে উঠেছে জিএসটির কথাও। উল্লেখ্য, চড়া জিএসটির হার নিয়ে আবাসন শিল্পের ক্ষোভের কথা মাথায় রেখে সম্প্রতি তা পরিবর্তনের জন্য একটি মন্ত্রিগোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, তারা নির্মীয়মান বাড়িতে জিএসটি ৫% করার পক্ষে। বর্তমানে যে সমস্ত বাড়ি নির্মীয়মান বা যে সব বাড়ি তৈরি হওয়ার পরেও ‘কমপ্লিশন সার্টিফিকেট’ পায়নি, সেগুলিতে জিএসটি ১২%। সূত্রের খবর অনুযায়ী, মন্ত্রিগোষ্ঠী চায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তের জন্য কম দামি বাড়িতে ৩% জিএসটি নেওয়া হোক। এখন যা ৮%। শিল্পের আশা, এই সমস্ত সুখবরের ইঙ্গিতই এ দিন দিতে চেয়েছেন মন্ত্রী।
ক্রিসিল রিসার্চের রিপোর্টে দাবি, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় শহরে ১ কোটি বাড়ি তৈরিতে ৭ বছরে কেন্দ্রকে ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা দিতে হবে। কিন্তু ডিসেম্বর পর্যন্ত তার ২২% দেওয়া হয়েছে। শিল্পমহলের মতে, এই পরিস্থিতিতে প্রকল্পে গতি আনতেই ব্যাঙ্কগুলিকে আবাসন শিল্পের সঙ্গে বসার নিদান দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।