Indian Railways

Indian Railways: সিমরনকে ট্রেনে তুলতে ভাড়া লেগেছিল কত! প্ল্যাটফর্মে সিনেমার শ্যুটিংয়ে খরচ কম নয়

‘ছাইয়া ছাইয়া’ গানে নাচের দৃশ্য শ্যুটিংয়ে ‘দিল সে’ ছবিতে যে খরচ তার চেয়ে বেশি খরচ ‘বরফি’ ছবিতে। কারণ, পাহাড়ি এলাকার বেশি খরচ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২১ ১৭:২৮
Share:

দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে। তখন খরচ অনেক কম ছিল। গ্রাফিক: সৌভিক দেবনাথ

ভারতে ট্রেন লাইনের যে বিস্তৃতি এবং ভারতীয় সমাজ জীবনে রেলের যে প্রভাব তাতে এ দেশকে ‘ট্রেন-মাতৃক’ বলা অত্যুক্তি হবে না। আর ভারতীয় সমাজে রেলের ভূমিকা কতটা তা বুঝিয়ে দেয় চলচ্চিত্রকারদের ট্রেন-প্রীতি দেখলে। উত্তমকুমার অভিনিত ‘ভ্রান্তি বিলাস’ থেকে ‘ধন্যি মেয়ে’ কত ছবিতে যে ট্রেন আর স্টেশন রয়েছে তা গবেষণার বিষয়। সত্যজিত রায়ের ‘নায়ক’ তো ট্রেন সফরেই শুরু। ‘সোনার কেল্লা’ থেকে ‘জয়বাবা ফেলুনাথ’ বার বার ট্রেনে উঠেছেন ফেলুদা। হালফিলের ‘প্রাক্তন’ ছবিতেও তো ট্রেন আলাদা করে বিষয়।

Advertisement

দেশের বাকি ভাষার কথা বাদ দিয়ে শুধু হিন্দির কথা ভাবলেই গুনে শেষ করা যাবে না। ‘শোলে’ থেকে ‘জব উই মেট’-এ ট্রেন আর ট্রেন। একটা গোটা ছবির নাম যদি ভাবতে হয় তবে ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ আর ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’-এর নাম নিতেই হবে। তবে ট্রেন আর সিনেমা বললেই যে দৃশ্যের কথা সবার আগে মনে এসে যায় তা হল— ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’। মনে পড়ে ট্রেন থেকে হাত বাড়িয়ে শাহরুখ, লেহঙ্গা সামলে ছুটছেন কাজল আর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে গুরুগম্ভীর গলায় অমরিশ পুরী বলছেন, ‘‘যা সিমরন যা, জি লে আপনি জিন্দেগি।’’

কিন্তু এত যে শ্যুটিং হয় ট্রেনে তার খরচ কত? কী হিসেবে টাকা নেয় ভারতীয় রেল? এর খ‌‌োঁজ নিলে জানা যায় শেষ বার রেলের তরফে শ্যুটিং ভাড়া ঠিক হয়েছিল ২০১৫ সালে। মানে প্রথম নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে। তার আগে বেশ কমই ছিল খরচ। কিন্তু ২০১৫ সালের ১ অগস্ট থেকে দৈনিক সর্বনিম্ন খরচ হয়ে যায় ৪.৪৭ লাখ টাকা। যেটা তার আগে ছিল দৈনিক ২.৩১ লাখ টাকা। ফলে ১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’-র শ্যুটিংয়ের জন্য রেলকে এখনকার তুলনায় অনেক কম টাকাই দিতে হয়েছিল যশ চোপড়াকে।

Advertisement

রেলের হিসেবে সর্বনিম্ন যে খরচ তাতে যে ‘ফিল্ম স্পেশাল ট্রেন’ পাওয়া যায় তার সঙ্গে থাকে চারটি সাধারণ বগি এবং একটি এসএলআর (সিটিং কাম লাগেজ ভ্যান)। শ্যুটিংয়ের জন্য ট্রেনটিকে সর্বাধিক ২০০ কিলোমিটার নিয়ে যাওয়া যায়। সব মিলিয়ে খরচ ধরা হলেও নানা ভাগ রয়েছে। ট্রেন দাঁড় করিয়া রাখা থেকে পরিবহণ সবের জন্যই টাকা গুনতে হয় চলচ্চিত্র প্রযোজকদের। এ ছাড়াও ‘প্যান্ট্রি কার’ আলাদা করে ভাড়া নেওয়া যায়। ইঞ্জিন থেকে বগি প্রতিটি শ্যুটিংয়ের সময়ে দাঁড় করিয়ে রাখার জন্যও খরচ আছে। প্রতিটি বগির নিরাপত্তা বাবদ ৫০ হাজার টাকা করে দিতে হয়। যেটা সর্বনিম্ম ২.৫ লাখ টাকা। এর উপরে রয়েছে পরিষেবা কর এবং খালি ট্রেন নিয়ে যাওয়ার খরচ।

আবার ‘ছাইয়া ছাইয়া’ গানে নাচের শ্যুটিংয়ে ‘দিল সে’ ছবিতে যে খরচ তার চেয়ে বেশি খরচ ‘বরফি’ ছবিতে। কারণ, পাহাড়ি এলাকায় ন্যারো গেজ লাইনে শ্যুটিংয়ের জন্য অতিরিক্ত ২০ শতাংশ সারচার্জ দিতে হয়। আবার এসি ফার্স ক্লাস বগি নিলে তার জন্য অতিরিক্ত ৩.৭ শতাংশ টাকা দিতে হয়। এ সবের বাইরেও রেল চত্বরে শ্যুটিং করতে লাইসেন্স ফি দিতে হয়। তার অঙ্ক আবার শহর অনুযায়ী আলাদা আলাদা। এ-ওয়ান এবং এ ক্যাটাগরি শহরের জন্য এক লাখ, বি-ওয়ান, বি ক্যাটাগরির ক্ষেত্রে ৫০ হাজার এবং বাকি ক্ষেত্রে ২৫ হাজার টাকা। সব শেষে শ্যুটিংয়ের প্রয়োজনে রেলের কোনও সম্পত্তি এ দিক, ও দিক করতে হলে তার জন্য দিতে হয় ৩০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে এক দিনের শ্যুটিং করতে রেলকে দিতে হয় মোট ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৩৪৫ টাকা।

শ্যুটিংয়ের জন্য রেলের কাছ থেকে যে অনুমতি নিতে হয় তা-ও বেশ ঝকমারি ছিল এত দিন। অনেক জায়গায় অনুমতির আবেদন ও নানা ছাড়পত্র লাগত। সম্প্রতি সেই নিয়মে একটা বড় বদল এনেছে ভারতীয় রেল। রেল মন্ত্রক এবং ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগে ফিল্ম ফেসিলিটেশন অফিস তৈরি হয়েছে। যাতে চলচ্চিত্র প্রযোজক সংস্থা এক জায়গা থেকেই সব রকম ছাড়পত্র পেয়ে যায়। অনলাইনে আবেদনের সুযোগ দিতে একটি পোর্টালও (www.ffo.gov.in) তৈরি হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন