হাওড়ার ৭৮ বছরের নন্দদুলাল বিশ্বাসের আঙুলের ছাপ আধার নথির সঙ্গে মেলেনি। এই বয়সে এমন অনেকের হয়। বিকল্প হিসেবে চোখের মণির স্ক্যান মেলানোর কথা। কিন্তু সেই মেশিন সেখানে নেই। তাই পিএফ অফিসে গিয়েও ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট জমা দিতে পারেননি তিনি। অথচ ৩১ মার্চের মধ্যে তা জমা দেওয়ার ফরমান জারি করেছে কেন্দ্র। ফলে ডিসেম্বর থেকে পিএফের পেনশন আটকে যাবে কি না, সেই চিন্তা ঘুম কেড়েছে তাঁর।
ডিজিটালের ঘোড়াতেই অর্থনীতির রথ টানার পণ করেছে মোদী সরকার। তার অঙ্গ হিসেবে পেনশনের জন্য ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট জমার কথা বলেছে তারা। অথচ তার পরিকাঠামোই এখনও তৈরি নয়। পিএফ পেনশন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার পরিতোষ কুমার বলছেন, ‘‘সার্টিফিকেট দিতে জরুরি নেট পরিষেবা বহু জায়গায় নেই। যেমন, আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে আন্দামান, নীল ও হ্যাভলক ছাড়া বাকি দ্বীপে নেট পরিষেবা নেই। এক বছরের মধ্যে পৌঁছবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ আছে। অথচ সেখানে অনেক পেনশনভোগী রয়েছেন।’’
পরিতোষবাবুও মানছেন, মণির স্ক্যান মেলানোর মেশিন তাঁদের কাছে, সব ব্যাঙ্কে এবং গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে নেই। রাজ্যে গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রগুলির সার্কেল হেড অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেশিন বসানো খরচসাপেক্ষ। এক-একটির দাম প্রায় ১০ হাজার। সব কেন্দ্রে বসাতে খরচ প্রচুর। প্রতিটি লাইফ সার্টিফিকেটের জন্য ১০ টাকা চার্জ নিতে পারি। কিন্তু তাতে কি মেশিন বসানো লাভজনক হবে?’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘সার্টিফিকেট জমার প্রাথমিক দায়িত্ব ব্যাঙ্কের। কিন্তু অধিকাংশের কাছে মেশিন নেই।’’
পরিকাঠামো নেই। অথচ সার্টিফিকেট জমা দিতে সময় মাত্র দিন কুড়ি। কী করণীয়, ভেবে কূল পাচ্ছেন না নন্দদুলালবাবুরা।