coronavirus

আরও গুরুতর জীবিকা-সঙ্কটে কাবু হতে পারে ভারত: জঁ দ্রেজ়

দ্রেজ় মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে গত বছর ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২১ ০৫:১০
Share:

ফাইল চিত্র।

গত বছর অতিমারির প্রথম ঝাপটায় পরিযায়ী শ্রমিকদের যে দুর্দশা হয়েছিল, তার স্মৃতি এখনও টাটকা। কাজ হারিয়ে সঙ্কটে পড়েছিলেন দেশের দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। বছর ঘুরতে না-ঘুরতেই অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ফের ধাক্কা দিয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। এই অবস্থায় অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রেজ়ের সতর্কবার্তা, ভারত সম্ভবত জীবিকার গভীর সঙ্কটের দিকে এগোচ্ছে। বস্তুত, শ্রমিক শ্রেণির কাছে এ বারের সঙ্কট আরও মারাত্মক। সমস্যায় কিছুটা লাগাম টানতে দীর্ঘমেয়াদি ত্রাণের ব্যবস্থা করা উচিত কেন্দ্রের। কিন্তু তারা এখনকার মতো সমস্যার গভীরতাকে অস্বীকারের মানসিকতা নিয়ে বসে থাকে, তাতে বিপদ আরও বাড়বে।

Advertisement

এই প্রসঙ্গে অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন-সহ কেন্দ্রের নেতা-মন্ত্রীরা সম্প্রতি একাধিকবার বলেছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অর্থনীতি কিছুটা ধাক্কা খাবে ঠিকই, কিন্তু তার অভিঘাত প্রথমবারের মতো হবে না।

অতিমারির সংক্রমণ রুখতে গত বছর অর্থনীতির দরজা কার্যত বন্ধই করে দিয়েছিল কেন্দ্র। এ দফায় অবশ্য স্থানীয় লকডাউন ও বিধিনিষেধের মাধ্যমে আর্থিক কার্যকলাপ কিছুটা অন্তত চালু রাখার চেষ্টা চলছে। কিন্তু বেলজিয়ামে জন্মানো ভারতীয় অর্থনীতিবিদ মনে করেন, এ বারের সমস্যা আরও গভীর। এক সাক্ষাৎকারে তাঁর বক্তব্য, এ বার সংক্রমণ যে ভাবে ছড়াচ্ছে তাতে ভয় আরও জাঁকিয়ে বসেছে মানুষের মনে। তার উপর পূর্ণ লকডাউন না-হলেও একের পর এক রাজ্য যে ভাবে স্থানীয় লকডাউনের পথে যেতে বাধ্য হচ্ছে, বাস্তবে তার প্রভাব দেশব্যাপী লকডাউনের কাছাকাছি। সব মিলিয়ে এ দফার বিরূপ প্রভাব আরও দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। দ্রেজ়ের কথায়, ‘‘অর্থনীতির উপরে স্থানীয় স্তরের লকডাউনের প্রভাব হয়তো পূর্ণ লকডাউনের মতো হবে না, কিন্তু কোনও কোনও দিক থেকে শ্রমিক শ্রেণির পক্ষে এ বারের পরিস্থিতি আরও খারাপ।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘গণ টিকাকরণ সত্ত্বেও সমস্যা সম্ভবত দীর্ঘস্থায়ী হবে। গত বছরের সঙ্গে তুলনায় টানলে দেখা যাবে, এই সময়ের মধ্যে বহু মানুষের সঞ্চয় কমেছে। বেড়েছে ঋণের বোঝা। গত বারের সঙ্কটের সময়ে যাঁরা ধারকর্য করে চালাচ্ছিলেন, তাঁদের সামনে এ বার সেই পথও বন্ধ। ...কিছু দিনের মধ্যেই স্থানীয় লকডাউনের মিলিত প্রভাব জাতীয় লকডাউনের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে। সব মিলিয়ে জীবিকার গুরুতর সঙ্কটের পথে এগিয়ে চলেছি আমরা।’’

Advertisement

দ্রেজ় মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে গত বছর ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু এ বার সেই প্রসঙ্গটুকুও শোনা যাচ্ছে না। গতবারের ত্রাণ ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাড়তি কিছু করতে হবে সরকারকে। বাড়াতে হবে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের মেয়াদ।’’

কিন্তু কী ভাবে দেশের উপরে জাঁকিয়ে বসতে পারল করোনার দ্বিতীয় দফার সংক্রমণ? দ্রেজ়ের মতে, প্রধান কারণ সরকারের সমস্যাকে অস্বীকার করে এড়িয়ে যাওয়ার অভ্যেস। সেই সঙ্গে বহু যুগ ধরে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, বিশেষ করে জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রেকে অবহেলা করার ইতিহাস তো আছেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন