ঝিমুনিতে দেশের অর্থনীতি, বৃদ্ধির হার ৫%, ছ’বছরে সর্বনিম্ন

বাজারে বিক্রি নেই, নতুন লগ্নি আসছে না, কৃষি ক্ষেত্রেও অবস্থা ভাল নয়— এত দিন অর্থনীতির নানা অসুখের লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল। আজ সরকারি পরিসংখ্যান স্পষ্ট করে দিল, অর্থনীতি ঝিমিয়ে পড়ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৯ ০৪:১২
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নরেন্দ্র মোদী আরও পাঁচ বছরের জন্য গদিতে ফিরে পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির স্বপ্ন দেখিয়েছেন। কিন্তু নতুন সরকারের শুরুতেই আর্থিক বৃদ্ধির হার নেমে এল পাঁচ শতাংশে!

Advertisement

বাজারে বিক্রি নেই, নতুন লগ্নি আসছে না, কৃষি ক্ষেত্রেও অবস্থা ভাল নয়— এত দিন অর্থনীতির নানা অসুখের লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল। আজ সরকারি পরিসংখ্যান স্পষ্ট করে দিল, অর্থনীতি ঝিমিয়ে পড়ছে।

চলতি অর্থ বছরের প্রথম তিন মাস, অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুনে বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশ। গত অর্থ বছরের শেষ তিন মাস, জানুয়ারি থেকে মার্চে বৃদ্ধির হার ছিল ৫.৮ শতাংশ। সেই হিসেবে এই প্রথম পরপর দু’টি ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ৬ শতাংশ নীচে রইল।

Advertisement

২০১৩-র জানুয়ারি-মার্চের পর থেকে আর্থিক বৃদ্ধির হার এত খারাপ কখনও হয়নি। তখন বৃদ্ধির হার ৪.৩ শতাংশে নামায় মনমোহন সিংহের সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছিল বিজেপি। দ্বিতীয় মোদী সরকারের শুরুতেই বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নামায় একে ‘অর্থনীতির জরুরি অবস্থা’ বলে সরব হয়েছে কংগ্রেস।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

বিজেপি বোঝানোর চেষ্টা করছে, অর্থনীতিতে ওঠানামা চলেই। এটা তারই নমুনা। কিন্তু ফিচ্ গোষ্ঠীর ইন্ডিয়া রেটিংস-এর মুখ্য অর্থনীতিবিদ দেবেন্দ্র পন্থের মতে, শুধু ওঠানামা নয়। এর পিছনে কাঠামোগত সমস্যাও রয়েছে। কী ভাবে?

অর্থনীতিবিদদের ব্যাখ্যা, গৃহস্থের সঞ্চয়ের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। ফলে কাঠামোগত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রকের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কে ভি সুব্রহ্মণ্যনও আজ মেনে নিয়েছেন, বৃদ্ধির হারে ঝিমুনি এসেছে। তাঁর দাবি, সরকার গাড়ি, ব্যাঙ্ক, বিদেশি লগ্নিতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেক দেবরায় জানান, অর্থনীতির ওঠানামার সমস্যা ও কাঠামোগত সমস্যা দূর করতে সরকার পদক্ষেপ করছে। সূত্রের খবর, আরএসএস গোটা আর্থিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে।

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আজ ফের জানান, আবাসনের মতো ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করতে আরও কিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করা হবে। সুব্রহ্মণ্যনের বক্তব্য, এর ফলে বেসরকারি লগ্নি বাড়বে। তার সঙ্গে বৃদ্ধির হারও। কিন্তু কবে? সুব্রহ্মণ্যনের যুক্তি, কিছু আশার আলো ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে। যেমন, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে বৃদ্ধি বেড়েছে। কারখানার উৎপাদন ক্ষমতার ৭৬ শতাংশ ব্যবহার হচ্ছে। লগ্নি আবার উঠতে শুরু করেছে। অর্থনীতিবিদেরা অবশ্য মনে করছেন, ঝিমুনি কাটিয়ে অর্থনীতি চাঙ্গা হতে যথেষ্ট সময় লাগবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন