কেউ বারণ শোনেনি, হওয়ার ছিল এটাই

নোট বাতিলের কুপ্রভাব নিয়ে খসড়া রিপোর্টে অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বলেছে, ‘এতে বৃদ্ধির হার ১ শতাংশ বিন্দু কমেছে।’ বিজেপি সাংসদরা একজোট হয়ে সেই রিপোর্ট আটকে দিয়েছেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৩৪
Share:

নোট বাতিলে কাজের কাজ যে কিছুই হবে না, সে কথা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই বলেছিলেন অর্থনীতিবিদদের বড় অংশ। অমর্ত্য সেন তুলেছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা হারানোর প্রসঙ্গ। এমনকি আপত্তি এসেছিল প্রশাসনের অন্দর থেকেও। বুধবার শীর্ষ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান সামনে আসার পরে তাই ফের সরব হয়েছেন তাঁদের অনেকে। যেমন, অর্থনীতির অধ্যাপক প্রভাত পট্টনায়কের মন্তব্য, ‘‘নোট বাতিলের যে কোনও উপকারিতা মেলার নয়, তা জানাই ছিল। সেটাই প্রমাণ হল।’’

Advertisement

নোট বাতিলের কুপ্রভাব নিয়ে খসড়া রিপোর্টে অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বলেছে, ‘এতে বৃদ্ধির হার ১ শতাংশ বিন্দু কমেছে।’ বিজেপি সাংসদরা একজোট হয়ে সেই রিপোর্ট আটকে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। যাতে লোকসভা ভোটের আগে সরকারের মুখ না পোড়ে। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টে শেষ পর্যন্ত অস্বস্তিতে পড়তেই হল কেন্দ্রকে।

শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, মার্চের শেষে বাজারে নগদ ছিল ১৮.০৩ লক্ষ কোটি টাকা। এক বছরে প্রায় ৩৮% বৃদ্ধি। তা হলে নগদের ব্যবহার কমল কোথায়? অর্থ বিষয়ক সচিব সুভাষচন্দ্র গর্গের মন্তব্য, ‘‘কোনও তর্কাতর্কিতে যেতে চাই না।’’

Advertisement

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হিসেব, মার্চের শেষে মোট নগদের ৮০.২ শতাংশই ছিল ৫০০ ও ২০০০-এর নোট। এর মধ্যে ২০০০ টাকার ভাগ ৫০ শতাংশ থেকে এক বছরে কমে হয়েছে ৩৭ শতাংশ। এই ২০০০ টাকার নোটের বেশির ভাগটাই কালো টাকা হিসেবে জমানো হচ্ছে বলে অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অবশ্য জানিয়েছে, ২০০০ টাকার নোট ছাপানোও ৯৫ শতাংশ কমেছে।

নোট বাতিলে লাভের থেকে খরচ বেশি হল কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। কারণ নতুন ৫০০ ও ২০০০ টাকার নোট ছাপতেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ৮ হাজার টাকা খরচ করেছিল। গত বছর আরও প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ করেছে।

এ দিকে নতুন ৫০০, ২০০০-এর নোটও জাল হচ্ছে, জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট। ২০১৭-’১৮-তে ৯,৮৯২টি জাল ৫০০ এবং ১৭,৯২৯টি জাল ২০০০-এর নোট ধরা পড়েছে। গর্গের অবশ্য যুক্তি, এই সব জাল নোটের মান খুবই খারাপ।

নোটবন্দিতে দেশকে যে মূল্য চোকাতে হল, তা নিয়েও সরব বিরোধীরা। পি চিদম্বরমের মন্তব্য, ‘‘এই নোট বাতিলের ফলেই একশোর বেশি প্রাণ গিয়েছে। ১৫ কোটি দিনমজুর রুটিরুজি হারিয়েছেন। হাজার হাজার ছোট-মাঝারি কারখানা বন্ধ হয়েছে। ধাক্কা খেয়েছে বৃদ্ধি। শুধু তাতেই ক্ষতি ২.৫ লক্ষ কোটি টাকা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন