সারা দেশে সাড়া ফেলে দেওয়া এটিএম কার্ড জালিয়াতির বিষয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলির কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করল কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। জানতে চাইল, সাইবার নিরাপত্তা টপকে কী ভাবে টাকা এবং কার্ডের তথ্য হাতিয়ে নিল হ্যাকাররা। একই কথা জানতে চেয়ে বেশ কিছু ব্যাঙ্ক-কে চিঠি দিয়েছে মহারাষ্ট্র পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন বিভাগও। জানিয়েছে, এ নিয়ে কোনও ব্যাঙ্ক তাদের কাছে সরাসরি অভিযোগ জানালে, তদন্ত করতে তারা তৈরি।
শুক্রবার অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, ‘‘কার্ডের ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছি। প্রথম লক্ষ্য, ক্ষতি আর বাড়তে না দেওয়া।’’ আর্থিক বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাসের দাবি, ‘‘আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। ব্যাঙ্কগুলির তথ্যপ্রযুক্তি নেটওয়ার্ক মজবুত। প্রয়োজনে পদক্ষেপ করবে কেন্দ্রও।’’ তিনি বলেন, অপরাধীদের রেখে যাওয়া চিহ্ন ধরে সহজেই তাদের খোঁজ মিলবে। বিষয়টি নিয়ে ফরেন্সিক তদন্ত শুরু করেছে পেমেন্ট কার্ড ইন্ডাস্ট্রি সিকিউরিটি স্ট্যান্ডার্ড কাউন্সিলও। মে থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই নেট-নিরাপত্তা ভেঙে টাকা ও তথ্য খোওয়া গিয়েছে বলে অনুমান।
কার্ড জালিয়াতি নিয়ে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন জানিয়েছে, এ ভাবে ১.৩০ কোটি টাকা খুইয়েছেন ১৯টি ব্যাঙ্কের ৬৪১ জন গ্রাহক। আশঙ্কা, ৩২ লক্ষেরও বেশি কার্ডের তথ্য গিয়েছে হ্যাকারদের হাতে। পুলিশ ও ব্যাঙ্ককর্তাদের ধারণা, এটিএম নেটওয়ার্কে ঢুকিয়ে দেওয়া ম্যালওয়ারের (চলতি কথায় ভাইরাস) মাধ্যমে গ্রাহকদের এটিএম কার্ডের তথ্য গিয়ে থাকতে পারে দুষ্কৃতীদের হাতে। যা কাজে লাগিয়ে বিদেশে বসেই অ্যাকাউন্ট সাফ করছে তারা।
বিষয়টি নিয়ে কোনও রকম ঝুঁকি না-নিয়ে ৬ লক্ষ কার্ড বদলে দেওয়ার কথা বৃহস্পতিবারই জানিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্কটির দাবি, তাদের নিজেদের নেটওয়ার্ক সুরক্ষিত। কিন্তু আগাম সতর্কতা হিসেবেই এই ব্যবস্থা। একই পথে হেঁটেছে ব্যাঙ্ক অব বরোদা, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কও। পিন পাল্টানোর পরামর্শ দিয়েছে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, কানাড়া ব্যাঙ্ক, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক। এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, স্টেট ব্যাঙ্ক আবার পরামর্শ দিচ্ছে তাদের নিজেদের এটিএম থেকেই টাকা তুলতে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম নেটওয়ার্কে ভাইরাস হানার পরেই এ ভাবে নড়েচড়ে বসেছে দেশের অধিকাংশ ব্যাঙ্ক।
সুযোগ বুঝে আসরে নেমেছে কংগ্রেসও। তাদের মুখপাত্র অজয় কুমারের কটাক্ষ, নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন তিনি দেশের চৌকিদার। কিন্তু তাঁর নাকের ডগা দিয়েই দেশের মানুষের টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে। প্রতিশ্রুতিমতো কালো টাকা তো ভারতে ফেরেইনি। বরং দেশের টাকাই চলে যাচ্ছে বিদেশে।