পশ্চিমবঙ্গে মাসে রান্নার গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে প্রায় ৩০%। তার উপর রাজ্যে দারিদ্রসীমার নীচে থাকা (বিপিএল) পরিবারের মহিলাদের জন্য কম খরচে রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু হলে তা আরও বাড়বে। তাই অবস্থা মোকাবিলায় প্রায় ৫৪০ কোটি টাকা খরচ করে রাজ্যে সিলিন্ডারে রান্নার গ্যাস ভরার ক্ষমতা (বটলিং প্লান্টের উৎপাদন ক্ষমতা) বাড়াচ্ছে তেল সংস্থাগুলি।
অন্য কয়েকটি রাজ্যের মতো রবিবার পশ্চিমবঙ্গেও ‘প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বল যোজনা’ (পিএমইউওয়াই) চালু হবে। বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়ান অয়েলের জিএম তথা তিনটি তেল সংস্থার স্টেট লেভেল কোঅর্ডিনেটর রঞ্জন কুমার মহাপাত্র তা জানানোর পাশাপাশি উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির কথাও বলেন। এখন রাজ্যে ইন্ডিয়ান অয়েল, হিন্দু্স্তান পেট্রোলিয়াম ও ভারত পেট্রোলিয়ামের মোট ১০টি বটলিং-প্লান্টে সিলিন্ডারে গ্যাস ভরার ক্ষমতা বছরে ৯.৯০ লক্ষ টন। তিনি জানান, গত বছর এ রাজ্যে গ্যাসের নতুন গ্রাহক বেড়েছিল প্রায় ১৭ লক্ষ। গত মাসে বৃদ্ধির হার ছিল ৩০%। দারিদ্রসীমার নীচে থাকা পরিবার পিছু একজন মহিলাকে গ্যাসের নতুন সংযোগ দিলে সেই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা তাঁদের।
দ্রুত সিলিন্ডার সরবরাহের জন্য আগামী ২-৩ বছরে রাজ্যে অতিরিক্ত ৫ লক্ষ টন গ্যাস সিলিন্ডারে ভরার পরিকল্পনা করেছে তেল সংস্থাগুলি। রঞ্জনবাবু জানান, এ জন্য ভারত পেট্রোলিয়াম (৩০ হাজার টন) একটি ও হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম দু’টি বটলিং প্লান্ট (মোট ৩.৭০ লক্ষ টন) গড়ছে। ইন্ডিয়ান অয়েলের চালু প্লান্টেরও ক্ষমতা বাড়বে ৯০ হাজার টন। সব মিলিয়ে খরচ হবে ৫৪০ কোটি টাকা।
রাজ্যে পিএমইউওয়াই প্রকল্পে ২০১৯ সালের মধ্যে বিপিএল তালিকাভুক্ত প্রায় ১.০৬ কোটি মহিলাকে নতুন রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেবে কেন্দ্র। তার জন্য গোড়ায় বিভিন্ন খাতে যে ১,৬০০ টাকা দিতে হয়, তা মকুব করে দিচ্ছে কেন্দ্র। তাঁদের গ্যাসের ওভেন ও সিলিন্ডারের জন্য যে প্রায় ১,৫০০ টাকা প্রয়োজন, তা সংযোগ নেওয়ার সময় দিতে হবে না। কিন্তু পরে প্রাপ্ত ভর্তুকির টাকা থেকে কিস্তিতে তাঁদের কাছ থেকে সেই টাকা কেটে নেবে তেল সংস্থাগুলি।
তবে এই সংযোগ পাওয়ার জন্য গ্রাহকদের আধার নম্বর থাকা বাধ্যতামূলক। রঞ্জনবাবুদের দাবি, এ ধরনের গ্রাহকদের অধিকাংশেরই আধার নম্বর থাকায় সমস্যা হবে না। কারণ তাঁরা প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনার আওতায় রয়েছেন। এই সংযোগ পাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই তাঁরা ৬.৮৯ লক্ষ বিপিএল তালিকাভুক্ত মহিলাকে চিহ্নিত করেছেন। তাঁদের মধ্যে ৪.৬ লক্ষেরও বেশি এখনই এই সুযোগ পাওয়ার যোগ্য। বাকিদের যাবতীয় তথ্যও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।