Falcon Invoice Discounting Scam

সারা জীবনের সঞ্চয় গায়েব, উল্টে ঘাড়ে ক্রেডিট কার্ডের বিশাল ঋণ! ‘ফ্যালকন-ঝড়ে’ তছনছ লগ্নিকারীরা

জালিয়াতির অভিযোগ ওঠায় রাতারাতি বন্ধ হয়েছে ‘ফ্যালকন ইনভয়েস ডিসকাউন্টিং’-এর ঝাঁপ। ফলে বিপুল সঞ্চয় হারাতে চলেছেন বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি, অনেকের মাথার উপর চেপেছে ক্রেডিট কার্ডের ঋণের বিশাল বোঝা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:২২
Share:

—প্রতীকী ছবি।

জালিয়াতির অভিযোগ ওঠায় হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্বল্পমেয়াদি তহবিলে লগ্নির প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্যালকন ইনভয়েস ডিসকাউন্টিং’ বা এফআইডি। আর সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিনিয়োগকারীদের মাথায় হাত। কারণ, সেখানে সঞ্চিত অর্থের পুরোটাই হারিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। পাশাপাশি, ক্রেডিট কার্ডের জন্য বিশাল অঙ্কের ঋণের বোঝা চেপেছে তাঁদের কাঁধে।

Advertisement

উদাহরণ হিসাবে বেঙ্গালুরুভিত্তিক প্রযুক্তিবিদ তথা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মী বি প্রকাশের (নাম পরিবর্তিত) কথা বলা যেতে পারে। গত দু’বছরে ‘ফ্যালকন’-এ ৩.৫ কোটির বেশি টাকা লগ্নি করেছেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, স্বল্পমেয়াদি চুক্তির জন্য ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করছিলেন বি প্রকাশ।

এফআইডি প্ল্যাটফর্মটি হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেঙ্গালুরুর সাবেক সেনাকর্মীটির ঘাড়ে চেপেছে ক্রেডিট কার্ডের ছ’লক্ষ টাকার ঋণ। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছেন প্রকাশ। তাঁর কথায়, ‘‘জীবনের প্রায় সমস্ত সঞ্চয় ফ্যালকনে বিনিয়োগ করেছিলাম। রাতারাতি আমি নিঃস্ব। এখন কী করব বুঝতে পারছি না।’’

Advertisement

একই কথা বলতে শোনা গিয়েছে উত্তর ভারতের এক জন চিকিৎসকের গলায়। তিনি বলেন, ‘‘রিওয়ার্ড পয়েন্টের আশায় ফ্যালকনে বিনিয়োগ করে ক্রেডিট কার্ড নিয়েছিলাম। এতে সর্বোচ্চ দু’লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করেছি। পরিবারের এক সদস্যকেও অ্যাপটি ব্যবহার করতে বলি। সে লগ্নি করেছে ৫০ লক্ষ টাকা।’’

‘ফ্যালকন’-এর প্রায় সমস্ত গ্রাহকই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করায় ঋণের জালে আটকা পড়েছেন। সেই তালিকায় আছেন প্রযুক্তিবিদ, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চিকিৎসক, ছোট-বড় ব্যবসায়ী, সংস্থার প্রোমোটার এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনা ও সশস্ত্র বাহিনীর কর্মীরা।

স্বল্পমেয়াদি তহবিল চাওয়া ব্যবসার সঙ্গে লগ্নিকারীদের সংযোগ স্থাপনে সাহায্য করত ‘ফ্যালকন’। এর পর ইনভয়েসের বিপরীতে নগদ অর্থ প্রদান করত এই সংস্থা। এ হেন এফআইডির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ ওঠায় তদন্তে নামে হায়দরাবাদের সাইবারাবাদ পুলিশ। সংস্থাটির চেয়ারম্যান অমরদীপ কুমারের বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে দায়ের হয়েছে মামলা। পাশাপাশি, বিনিয়োগকারীদের তহবিল পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা।

‘ফ্যালকন’-এর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সমাজমাধ্যমে উঠেছে ঝড়। সেখানে এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘‘অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর ৩০ দিন বা ৪৮ দিনের চুক্তি ছিল। এই সংস্থা ক্রেটিড কার্ডের লোভ দেখিয়ে তাঁদের অর্থ পাচার করেছে।’’ এফআইডির ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন নিয়ে ব্যাঙ্কের সঙ্গেও বিতর্ক তৈরির চেষ্টা হয়েছে। যদিও শেষ পর্যন্ত সেটা মেটাতে সক্ষম হন গ্রাহকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement