ইস্পাতে চড়া আমদানি শুল্ক নিয়ে এ বার ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)-র দ্বারস্থ জাপান।
এ ধরনের আমদানি শুল্ক বসিয়ে ভারত ডব্লিউটিও আইন ভেঙেছে বলেই দাবি জাপানের। সেই লক্ষ্যে এবং ইস্পাত আমদানি নিয়ে ভারতের সঙ্গে টানাপড়েনে ইতি টানতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে একটি কমিটি গড়তে বলেছে জাপান। দেশি শিল্পকে সুরক্ষিত রাখতে ভারত ওই শুল্ক বসিয়েছে বলেই অভিযোগ জাপানের।
জাপানের অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের বাণিজ্য নীতি সংক্রান্ত ব্যুরো-র ডিরেক্টর ওসামু নিশিওয়াকি অভিযোগের সুরে বলেন, ‘‘ভারত সরকারের বদ্ধমূল ধারণা, স্থানীয় শিল্পের ক্ষতি করছে জাপান থেকে আসা ইস্পাত। অথচ তাদের উৎপাদন বা বিক্রি আদৌ কমেনি।’’
প্রসঙ্গত, গত ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ইস্পাতের চাদর ও অন্য কিছু পণ্য আমদানিতে ২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসায় ভারত। ২০১৬ সালে ইস্পাত পণ্য আমদানির জন্য বেঁধে দেয় ন্যূনতম দরও। সংশ্লিষ্ট শিল্প সূত্রের খবর, জাপান, চিন, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করা ইস্পাত যাতে ভারতের বাজার ছেয়ে ফেলতে না-পারে, তার জন্যই চড়া শুল্ককে হাতিয়ার করে ভারত। ফেব্রুয়ারি মাসে ওই দাম বেঁধে দেওয়া থেকে সরে এলেও এখনও বহাল রয়েছে চড়া আমদানি শুল্ক। জাপানের অভিযোগ, ভারতীয় ইস্পাত সংস্থাগুলিকে বিশ্ব বাজারের প্রতিযোগিতা থেকে আড়াল করাই এই শুল্ক বসানোর উদ্দেশ্য। কিন্তু এই শুল্ক ডব্লিউটিও আইনের সঙ্গে খাপ খায় না। এর জেরে ভারতে তাদের রফতানি মার খাচ্ছে বলেই অভিযোগ জাপানের। ২০১৬ সালে জাপানি ইস্পাতের ক্রেতার তালিকায় ভারত নেমে এসেছে আট নম্বরে। ২০১৫ সালে তারা ছিল তৃতীয় স্থানে।
সমস্যাটি আপসে মিটিয়ে নিতে দু’পক্ষের আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে ফেব্রুয়ারির গোড়াতেই। তাই দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার পথ থেকে সরে এসে ডব্লিউটিও-র কাছে নালিশ করেছে জাপান। সেই সঙ্গেই একটি কমিটি গড়ে রফাসূত্র খুঁজতে বলেছে। এ প্রসঙ্গে ওই ব্যুরো-র ডিরেক্টর তাকানারি ইয়ামাশিতা বলেন, ‘‘অন্য কোনও দেশও যাতে চাইলেই এ রকম চড়া শুল্ক বসানোর পথে হাঁটতে না-পারে, সে জন্যও আর্জি জানিয়েছি ডব্লিউটিও-তে।’’
২০১১ থেকে অবাধ বাণিজ্য চুক্তির আওতায় রয়েছে ভারত ও জাপান। তবে ইস্পাতকে এর বাইরেই রাখতে চায় ভারতীয় শিল্পমহল, যাতে আমদানি শুল্ক নিয়ে সমস্যা না-হয়। মুক্ত বাণিজ্যের জমানায় দু’পক্ষের সায় ছাড়া অবশ্য তা সম্ভব নয়।