এই সেই বাংলো। ছবি: পিটিআই।
মুম্বইয়ের মালাবার হিলে সমুদ্রের ধারের বাংলোটা আচমকাই ইতিহাস গড়ে ফেলল ৪২৫ কোটি টাকায় বিকিয়ে গিয়ে। আপাদমস্তক আভিজাত্যে মোড়া, প্রায় ৩২ হাজার বর্গফুট জুড়ে ছড়িয়ে থাকা জাটিয়া হাউস। পিরামল গোষ্ঠীর অজয় পিরামলের মতো ব্যবসা জগতের বহু রথী-মহারথীকে টপকে যাকে নিলামে কিনে নিয়েছেন আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর কর্ণধার কুমারমঙ্গলম বিড়লা। এর আগে ভারতের কোথাও কখনও এত দামে কোনও বাড়ি বিক্রি হতে দেখা যায়নি।
এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সব থেকে দামি বাড়ির শিরোপা যদিও এই মুম্বইতেই রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তা মুকেশ অম্বানীর বাসস্থান, অ্যান্টিলিয়ার দখলে। কিন্তু অ্যালটামাউন্ট রোডের ওই ২৭ তলা টাওয়ার তিনি কেনেননি, ১০০ কোটি ডলার খরচ করে তৈরি করিয়েছিলেন গত ২০১১ সালে।
গোষ্ঠীর তরফে মুখে কুলুপ আঁটা হলেও, সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, জাটিয়া হাউস ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্যই মনে ধরেছে বিড়লা কর্তার। তাই বর্তমানে মুকেশের পড়শি এখন রাজকীয় বাংলোটি কিনে মালাবার হিলমুখো। সত্তরের দশকে এম সি ভকিলের কাছ থেকে যেটি কিনে নিয়েছিল এমপি জাটিয়া গোষ্ঠী। এখন সেখানে থাকেন জাটিয়াদের দুই ভাই অরুণ ও শ্যাম। প্রাথমিক ভাবে কাগজ সংক্রান্ত পণ্যের ব্যবসা করা পুদুমজি ইন্ডাস্ট্রিজ চালান তাঁরা।
তাক লাগানো সব বাংলো বিপুল দামে কেনার সুবাদে আরব সাগরের তীরের শহরে অবশ্য আগেও শিরোনামে এসেছেন কোটিপতি ব্যবসায়ীরা। যেমন, এই মালাবার হিলেই ২০১১ সালে নিলামে ৪০০ কোটি টাকায় মাহেশ্বরী হাউস কিনেছিলেন শিল্পপতি সজ্জন জিন্দল, জেএসডব্লিউ গোষ্ঠীর কর্ণধার। এত দিন এটাই ছিল সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হওয়া বাংলো।
এ ছাড়া, গত বছর শিল্পপতি জামশেদ গোদরেজের বোন স্মিতা কৃষ্ণা-ও ৩৭২ কোটি হেঁকেছিলেন মেহেরঙ্গির হাতে নিতে। জাটিয়া হাউস থেকে যা দু’পা দূরে। ভারতে পরমাণু শক্তি প্রকল্পের জনক হোমি জে ভাবার বাংলো ছিল এটি। এই চুক্তিতে অবশ্য পরে ফাঁপরে পড়েন স্মিতা। কারণ সেটি বিক্রির বিরোধিতা করে ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারের কর্মী সংগঠনগুলি। তাদের দাবি, ঐতিহাসিক গুরুত্বের বিচারে ভাবার বাসস্থানকে ‘হেরিটেজ’ স্বীকৃতি দিয়ে মিউজিয়াম করা হোক। ফলে এই লেনদেনে এখনও শিলমোহর পড়েনি।
তবে এ বার সমস্ত কিছুকেই টেক্কা দিয়েছে লিটল গিব্স রোডের ৪২৫ কোটির বাংলো। এখন কুমারমঙ্গলম বিড়লার জাটিয়া হাউস।