গত বছর গুগ্লের কাছ থেকে কিনে নেওয়া মোবাইল হ্যান্ডসেট সংস্থা মোটোরোলার বিক্রি এক তৃতীয়াংশ পড়ে গিয়েছে। আর মূলত এই কারণেই চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে নিট মুনাফা আগের বারের তুলনায় কমে অর্ধেক হয়ে গিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম পিসি (পার্সোনাল কম্পিউটার) প্রস্তুতকারক লেনোভো গোষ্ঠীর। তাই আগামী দিনে খরচ বাঁচিয়ে ফের ঘুরে দাঁড়াতে প্রায় ৩,২০০ অফিস কর্মীকে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিনা সংস্থাটি। অন্য দিকে, দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে লোকসানে পড়ার পর কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটার কথা জানিয়েছে আর এক মোবাইল হ্যান্ডসেট তৈরির সংস্থা এইচটিসি-ও। তাইওয়ানের এই সংস্থাটি বিশ্ব জুড়ে প্রায় ২,০০০ কর্মী কমাচ্ছে।
পিসি-র ব্যবসায় সারা বিশ্ব জুড়ে মন্দা চলছে। ফলে সম্ভাবনাময় স্মার্ট ফোনের বাজারে পা রাখতে গত বছর প্রায় ৩০০ কোটি ডলারে গুগ্লের হাত থেকে মোটোরোলা-কে কিনে নেয় বেজিংয়ের লেনোভো। লক্ষ্য ছিল অ্যাপল ও স্যামসাঙকে টেক্কা দেওয়া। কিন্তু এ বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় মোটোরোলার হ্যান্ডসেট বিক্রি কমেছে ৩১%। ফলে লেনোভোর মোবাইল বিভাগকে লোকসান গুনতে হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি ডলার। এই সমস্যা যুঝতেই সংস্থার কর্মী কমানোর এই সিদ্ধান্ত। লেনোভোর দাবি, এই পদক্ষেপে বাঁচানো যাবে এককালীন ৬০ কোটি ডলার খরচ।
তবে এক দিকে মোবাইল বিক্রি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়া ও অন্য দিকে বিশ্ব জুড়ে পিসি-র বাজার মন্দা থাকা— এই দুইয়ের সাঁড়াশি চাপে সংস্থা যে সাম্প্রতিক কালে সব থেকে খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তা মেনে নিয়েছেন সংস্থার চিফ এগ্কিউটিভ ইয়াং ইউয়ানকিং। যদিও ইয়াং-এর দাবি, ‘‘আমি এখনও বিশ্বাস করি মোবাইল এমন একটি নতুন ব্যবসা, যেখানে আমাদের সফল হতেই হবে।’’
ভরসা পাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট মহলও। মোটোরোলার মতো দুর্বল ব্র্যান্ডে ভর করে কম্পিউটার তৈরিতে বৃহত্তম এই সংস্থা স্মার্ট ফোনের বাজারে তার এক নম্বর হওয়ার স্বপ্ন আদৌ কতটা সফল করতে পারবে, এ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে তারা।
অন্য দিকে, দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ৮০০ কোটি তাইওয়ানিজ ডলার লোকসান করার পর ব্যবসা ঢেলে সাজার কথা জানিয়েছে এইচটিসি। যার অন্যতম অঙ্গ দৈনন্দিন খরচ প্রায় ৩৫% কমিয়ে আনা। এই খরচ কমানোর জন্যই কর্মী ছাঁটাই করতে হবে বলে দাবি সংস্থাটির।