অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে বাজার করতে গিয়েই বিপত্তি। ফ্রিজে কী আছে মনে নেই। ফলে আন্দাজই ভরসা। এবং যথারীতি বাড়ি এসে দেখা গেল যা আছে, তা আবার কেনা হয়েছে। বাদ পড়েছে দরকারি জিনিসগুলোই।
ছোট পরিবারে সংসার, অফিস, বাজারহাট, রান্নাবান্না সব কিছু সামাল দিতে গিয়ে এমন সমস্যা আকছার ঘটে। যার থেকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়েই আগামী দিনে ভারতের বাজারে আসতে চলেছে দক্ষিণ কোরীয় সংস্থা এল জি-র নয়া প্রযুক্তির বৈদ্যুতিন পণ্য। ওই দেশে তাদের ‘হোম অ্যাপ্লায়েন্স’-এর কারখানাতেই তৈরি হচ্ছে এই ‘স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্স’। যা হাতে আসার পর বাড়ির বাইরে থেকেই ফ্রিজে কী আছে, কী নেই জানা যাবে বা ওয়াশিং মেশিনে কাচা যাবে জামাকাপড়। আর এ সব কিছুই করবে যন্ত্র। গৃহকর্ত্রী বা কর্তার কাজ শুধু চ্যাটের (বার্তা) মাধ্যমে কী করতে হবে সেটা বলে দেওয়া। কাজকর্ম কী ভাবে এগোচ্ছে সেটাও চ্যাট করেই জানিয়ে দেবে যন্ত্র। ঠিক যেমন করে চ্যাট মারফত দেশ-বিদেশের বন্ধুদের সঙ্গে মোবাইল বা কম্পিউটারে কথাবার্তা চালানো হয়, সে ভাবেই ঘটবে পুরো প্রক্রিয়াটি।
দক্ষিণ কোরিয়ার বাজারে ইতিমধ্যেই এই প্রযুক্তির পণ্য এনেছে সংস্থা। ভারতেও এই স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্স আসবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তবে সময়সীমা চূড়ান্ত করা হয়নি।
বৈদ্যুতিন ভোগ্যপণ্য সংস্থাটির দাবি, এই সব হোম অ্যাপ্লায়েন্সের সঙ্গে ‘লাইন’ নামে একটি চ্যাটের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখা যাবে এবং নির্দিষ্ট কাজ করতে বলা যাবে। যেমন, ফ্রিজে কী কী খাবার রয়েছে, তা ‘লাইন’-এ চ্যাট করেই জানা যাবে। ক্যামেরায় ছবি তুলে নেবে রেফ্রিজারেটর। আর সেই ছবি অফিসে বসেই হাতে চলে আসবে। ফলে পরের ধাপটা অর্থাৎ বাজার করাও সহজ হবে। “কী করছ এখন?”এমন সহজ প্রশ্নেই চালু হবে ফ্রিজের সঙ্গে কথাবার্তা।
২০১৩ সালে বিশ্ব জুড়ে ৫,৩১০ কোটি ডলার ব্যবসা করা সংস্থাটির দাবি, তাদের ব্যবসায়িক মানচিত্রে প্রথম পাঁচটি বাজারের মধ্যে রয়েছে ভারত। এ দেশে নতুন প্রযুক্তির অভিষেক প্রসঙ্গে হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস বিভাগের অন্যতম কর্তা জেমস পার্ক বলেন, “ভারতে নিত্যনতুন প্রযুক্তি আনতে চাই। তাই স্থানীয় চাহিদা বুঝেই এই বাজারের জন্য নির্দিষ্ট পণ্য তৈরি করা হচ্ছে।” ইতিমধ্যেই এ দেশের বিদ্যুতের পরিস্থিতির সঙ্গে মানানসই রেফ্রিজারেটর এনেছে এলজি। সাত ঘন্টা বিদ্যুৎ না-থাকলেও যা কাজ করে।
প্রসঙ্গত, নিত্য ব্যবহার্য যন্ত্রপাতিগুলির সঙ্গে ইন্টারনেটকে যুক্ত করে নেওয়ার চল শুরু হয়েছে এখন। যাকে বলে ‘ইন্টারনেট অব থিংস’। ইন্টারন্যাশনাল ডেটা কর্পোরেশনের তথ্য বলছে ২০২০-এ এ রকম নেটযুক্ত যন্ত্রপাতির বাজার ৭ লক্ষ কোটি টাকা ছোঁবে। এই বাজারে এগিয়ে রয়েছে অ্যাপল ও গুগ্ল। বাজার ধরতে এগিয়ে আসছে এলজি, স্যামসাং, প্যানাসোনিকের ও হায়ারের মতো বৈদ্যুতিন ভোগ্যপণ্য সংস্থাগুলি।