অ্যাপল ও স্যামসাঙের সঙ্গে যুঝে দামি ফোনের বাজার ধরতে এ বার আধ-লাখি স্মার্ট ফোন আনল এলজি ইলেকট্রনিক্স। সত্তর পেরিয়েও সতেজ অমিতাভ বচ্চনের মুঠোবন্দি করে।
সোমবার মুম্বইয়ের মেহবুব স্টুডিওয় চির সবুজ ম্যাটিনি আইডলের হাতেই আত্মপ্রকাশ করল জি-থ্রি। যার ১৬ জিবি সংস্করণের দাম ৪৭,৯৯০ টাকা আর ৩২ জিবি প্রায় ৫১ হাজার। ভারতে এলজি-র অন্যান্য বৈদ্যুতিন পণ্যের তুলনায় ফোনের বিক্রি বেশ কম। এ বার সেই ছবি বদলাতেই মরিয়া দক্ষিণ কোরীয় সংস্থাটি। এলজি ইন্ডিয়ার প্রধান সুন কোনের দাবি, এ বছরের মধ্যেই ভারতে স্মার্ট ফোনের বাজারের ১০% কব্জা করতে চান তাঁরা। সেই লক্ষ্যে অন্যতম হাতিয়ার জি-থ্রি।
বাজার দখলের এই টক্করে শুধু প্রযুক্তি নয়, কৌশলী বিপণনেও জোর দিচ্ছে এলজি। ফোন আনার ঘোষণায় অমিতাভকে বাছা থেকে শুরু করে অনুষ্ঠানের প্রায় প্রতিটি ধাপ পরিকল্পনায় তা স্পষ্ট। এই আঁটোসাঁটো পরিকল্পনা চোখ টেনেছে সংশ্লিষ্ট মহলেরও। তাঁরা বলছেন, সাধারণত এ ধরনের ফোন আনার কথা ঘোষণা হয় কোনও পাঁচতারা হোটেলে। সেখানে এই অনুষ্ঠানের জন্য এলজি বেছে নিয়েছিল ৬০ বছরের পুরনো মেহবুব স্টুডিওকে। অমিতাভ শুধু জি-থ্রির আত্মপ্রকাশেই ছিলেন না, এ দিন ফোনের বৈশিষ্ট্যও সকলের সামনে তুলে ধরেন তিনি। এলজি জানাচ্ছে, প্রথম ১৫ হাজার ক্রেতা তাঁর সই করা ফোনই হাতে পাবেন। প্রাথমিক ভাবে বাজারে সাড়া ফেলার ক্ষেত্রে যে-কৌশল কার্যকর হতে পারে বলে অনেকের মত।
অবশ্য যাঁকে ঘিরে বিপণন কৌশল ধারালো করার এই প্রয়াস, সত্তর পেরিয়েও তাঁর নিজেকে নিখুঁত করে তোলার চেষ্টা চোখ কপালে তোলার মতো। রুপোলি পর্দায় প্রাপ্তির ঘড়া কানায় কানায় পূর্ণ। দেশ-বিদেশে অগণিত ভক্ত। স্টার-সুপারস্টারের তকমা ছাড়িয়ে তিনি সেই কবেই জীবন্ত কিংবদন্তি। এ হেন অমিতাভ ফোন আনার ঘোষণায় শুধু আসবেন আর মঞ্চ আলো করে দিয়ে চলে যাবেন, এটাই প্রত্যাশিত।
কিংবা হয়তো প্রত্যাশিত নয়ও। তিনি অমিতাভ বলেই। এ দিনও অনুষ্ঠানের অনেক আগে তিনি এলেন। হলে তখন হাতে গোনা লোক। উঠে গেলেন স্টেজে। অনুষ্ঠানে যা যা বলবেন, তার পুরোটার মহড়া দিলেন! যাচাই করলেন মাইক্রোফোন “হ্যালো, টেস্টিং। ওয়ান-টু-থ্রি...।” এই অসম্ভব খুঁতখুঁতে, নিখুঁত হতে নিজেকে নিংড়ে দেওয়া অমিতাভ বুঝিয়ে গেলেন এই বাণপ্রস্থের বয়সেও আজও তিনি কেন এত টাটকা।