সোনায় কর ৩%, সস্তা বিস্কুট, জুতো

শনিবার সেখানে পাশ হয়ে গেল বাকি বিধিও। যে কারণে আলোচনা শেষে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানালেন, ১ জুলাই থেকে ওই নতুন কর চালু করতে তাঁরা তৈরি। এ বিষয়ে সায় রয়েছে প্রায় সমস্ত রাজ্যেরও। ‘প্রায়’— কারণ, এ দিনও এ বিষয়ে বিরোধিতা বজায় রাখল পশ্চিমবঙ্গ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৭ ০৩:১৭
Share:

নিশ্চিন্ত: বৈঠকে অরুণ জেটলি। শনিবার। পিটিআই

হাতে গোনা যে ক’টি পণ্য-পরিষেবায় করের হার ঠিক হওয়া বাকি ছিল, সেগুলিতেও সায় দিল জিএসটি পরিষদ। শনিবার সেখানে পাশ হয়ে গেল বাকি বিধিও। যে কারণে আলোচনা শেষে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানালেন, ১ জুলাই থেকে ওই নতুন কর চালু করতে তাঁরা তৈরি। এ বিষয়ে সায় রয়েছে প্রায় সমস্ত রাজ্যেরও। ‘প্রায়’— কারণ, এ দিনও এ বিষয়ে বিরোধিতা বজায় রাখল পশ্চিমবঙ্গ।

Advertisement

যে-কয়েকটি পণ্যে করের হার এর আগে অনেক আলাপ-আলোচনার পরেও ঠিক করা যায়নি, এ দিন সেগুলি নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে পরিষদ। যেমন, বিস্তর দড়ি টানাটানির পরে ঠিক হয়েছে সোনা, রুপো ও তাদিয়ে তৈরি গয়নায় করের হার, ৩ শতাংশ। স্বর্ণশিল্পের আশঙ্কা ছিল, বেশি টাকার গয়না কেনায় প্যান নম্বর বাধ্যতামূলক হওয়ার পরে এ বার জিএসটি-ও চড়া হলে, মাথায় হাত পড়বে তাদের। কিন্তু কেন্দ্র সেই উদ্বেগের কথা মাথায় রেখে ৩ শতাংশের বিশেষ হার ঘোষণা করায় তাকে স্বাগত জানিয়েছে তারা। অল ইন্ডিয়া জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি ট্রেড ফেডারেশনের দাবি, তাদের কাছে এটি ঐতিহাসিক দিন।

একই ভাবে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল বিড়িও। এমনিতে স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হওয়ায় তার উপর চড়া কর বসানোর পক্ষে সওয়াল করছিলেন এক পক্ষ। আবার উল্টো পক্ষের দাবি ছিল, এর সঙ্গে জড়িয়ে বহু মানুষের রুজি-রুটি। এ দিন জেটলি জানান, বিড়িতে ২৮% কর বসছে। কিন্তু সিগারেটের মতো তাতে সেস থাকছে না। আর বিড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত তেন্দু পাতায় কর বসবে ১৮%।

Advertisement

আরও দু’টি করের কথা এ দিন ঘোরাফেরা করেছে সাধারণ মানুষের মুখে। একটি হল, ৫০০ টাকার থেকে কম দামের জুতোয় ৫% কর বসা। আর বিস্কুটে তা ১৮% রাখা। সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, এর ফলে সেগুলির দাম কিছুটা কমতে পারে। যদিও পাঁচশোর বেশি দামের জুতোয় কর বসবে ১৮%। এ ছাড়া, অধিকাংশ পূজা-সামগ্রীতে করছাড় মিলছে। কর না-বসানোর কথা এ দিন বলা হয়েছে পাট এবং সিল্কের উপরেও। ১১ জুন ফের বৈঠকে বসবে পরিষদ।

সোনায় কম করকে স্বাগত জানালেও অমিতবাবু বলেন, জুলাই থেকে জিএসটি-র জন্য তাঁরা তৈরি নন। তার রুল ও রিটার্ন ফর্ম বদলাচ্ছে। তৈরি নয় তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামো। কেন্দ্র অবশ্য জুলাইয়েই অনড়।

সালতামামি

• ২০০০: আলোচনা শুরু করল বাজপেয়ী সরকার। তৈরি হল জিএসটি-র ভারপ্রাপ্ত কমিটি

• এপ্রিল, ২০০৭: ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া শুরু হল কেন্দ্রীয় বিক্রয়কর

• ফেব্রুয়ারি, ২০০৮: ঘোষিত হল ২০১০ সালের ১ এপ্রিল থেকে জিএসটি চালু করার পরিকল্পনা

• এপ্রিল, ২০০৮: জিএসটি-র প্রাথমিক রূপরেখা ঠিক করল ভারপ্রাপ্ত কমিটি

• ফেব্রুয়ারি, ২০১০: তৎকালীন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ঘোষণা, ২০১১ সালের এপ্রিল থেকে চালু হবে জিএসটি

• মার্চ, ২০১১: কিছু নির্দিষ্ট পণ্য-পরিষেবা বাদে বাকিগুলিতে জিএসটি বসাতে লোকসভায় পেশ সংবিধান সংশোধনী বিল

• ডিসেম্বর, ২০১৪: জিএসটি আনতে সংসদে পেশ হল সংবিধান সংশোধনী বিল

• জুন, ২০১৬: প্রকাশিত হল মডেল জিএসটি আইন

• সেপ্টেম্বর, ২০১৬: সংবিধান সংশোধনী বিলে সায় রাষ্ট্রপতির। তৈরি হল জিএসটি পরিষদও

• নভেম্বর, ২০১৬: ঠিক হল জিএসটির কর-কাঠামো

• মার্চ, ২০১৭: লোকসভায় পেশ জিএসটি-র বিভিন্ন বিল

• মে, ২০১৭: পণ্য ও পরিষেবাগুলির করের হার ঘোষণা করল পরিষদ

• ৩ জুন, ২০১৭: বাকি প্রায় সমস্ত বিধিতে সায় জিএসটি পরিষদের। ঠিক হল বাকি পণ্যের করের হারও

• ১ জুলাই, ২০১৭: সব কিছু ঠিকঠাক চললে, জিএসটি চালু হওয়ার কথা ওই দিন থেকেই

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement