৬ দিনে ১৫,৯১১ কোটি লগ্নি বিদেশি আর্থিক সংস্থার, সূচক ফের ৩৮ হাজারে

১০ দিনে নিট হিসাবে সেনসেক্স বেড়েছে ২,১৫৬.৮৮ পয়েন্ট। গত এক সপ্তাহে ১,৩৫২.৮৯।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০২:০০
Share:

১০ দিনে নিট হিসাবে সেনসেক্স বেড়েছে ২,১৫৬.৮৮ পয়েন্ট। গত এক সপ্তাহে ১,৩৫২.৮৯।

নরেন্দ্র মোদী যখন দিল্লির মসনদে বসেছিলেন তখন সেনসেক্স ঘোরাফেরা করছিল ২৪ হাজারের ঘরে। প্রায় পাঁচ বছর পরে অর্থনীতির বিভিন্ন হিসেব-নিকেশ তাঁকে যতই অস্বস্তিতে ফেলুক, হতাশ করেনি শেয়ার বাজার। অনিশ্চয়তার ওঠানামা চললেও, ভোটের মুখে শুক্রবার সেনসেক্স ফের পেরিয়ে গিয়েছে ৩৮ হাজার। শুক্রবার, সপ্তাহের শেষ লেনদেনের দিনে সূচক ২৬৯.৪৩ পয়েন্ট উঠে দাঁড়িয়েছে ৩৮,০২৪.৩২ অঙ্কে। গত বছর অগস্টে পা রাখা ৩৮,৮৯৬ অঙ্ক রেকর্ডের কাছাকাছি। ছ’মাসের মধ্যে এতটা উপরে উঠতে দেখা যায়নি তাকে। ৮৩.৬০ পয়েন্ট বেড়ে নিফ্‌টি থেমেছে ১১,৪২৬.৮৫ অঙ্কে।

Advertisement

১০ দিনে নিট হিসাবে সেনসেক্স বেড়েছে ২,১৫৬.৮৮ পয়েন্ট। গত এক সপ্তাহে ১,৩৫২.৮৯। বিশেষজ্ঞদের দাবি, বাজার বাড়ছে মূলত বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির পুঁজির জোরেই। এ দিন তারা শেয়ার কিনেছে ৪,৩২৩.৪৯ কোটি টাকার। এই নিয়ে মাত্র গত ছ’দিনে ওই অঙ্ক ছুঁল ১৫,৯১১ কোটি টাকারও বেশি।

অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, কীসের টানে ভারতে বিনিয়োগের এই ঝুলি নিয়ে ঢুকছে ওই লগ্নিকারী সংস্থাগুলি? জবাবে ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর এস কে কৌশিকের দাবি, ওই সব সংস্থার আশা সামনের লোকসভা নির্বাচনে এ দেশে ফের স্থায়ী সরকারই তৈরি হবে। আর সত্যি যদি সেটা হয়, শেয়ার বাজার দ্রুত উপরের দিকে উঠবে। কারণ, সংখ্যা গরিষ্ঠের সরকার তৈরি হল সব সময়ই দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা কমার সম্ভবনা থাকে। আর্থিক সংস্কারের চাকায় গতি আসে। সিদ্ধান্ত নিতে কারও মতের উপরে নির্ভর করতে হয় না। যা আখেরে দেশের আর্থিক উন্নতির পথ সুগম করে। শিল্প মহলকে লগ্নি বাড়াতে উৎসাহ জোগায়। তখন লগ্নি ভাঙিয়ে বড় অঙ্কের মুনাফা ঘরে তোলার সুযোগ পাবে ওই সব লগ্নিকারীরা।

Advertisement

হালে শিল্প বা পরিকাঠামো বৃদ্ধির নেমে যাওয়া থেকে শুরু করে বেকারত্ব বা মূল্যবৃদ্ধির ফের কিছুটা মাথা তোলা কিংবা গত ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির পাঁচ ত্রৈমাসিকের তলানি ছোঁয়া বেকায়দায় ফেলেছে মোদী সরকারকে। অনেকেরই প্রশ্ন অর্থনীতির যে রিপোর্ট কার্ড নিয়ে ভোটে যাবে এনডিএ সরকার, তাতে চিঁড়ে ভিজবে তো? এই পরিস্থিতিতে শেয়ার বাজারের এই উত্থান তাদের কিছুটা স্বস্তি দেবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

অনেকেই বলছেন, আগামী দিনে ভারতের বাজার আরও চাঙ্গা হবে, এটা ভেবে আগেভাগেই বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি লগ্নির বহর বাড়িয়েছে। বিশেষ করে বর্তমানে বিশ্বের অন্য সব দেশের তুলনায় ভারতের আর্থিক অগ্রগতির হারও যেখানে বেশি।

তবে এতে যে বাজারে ঝুঁকি বা়ড়ছে, সে কথাও বলছেন বিশেষজ্ঞেরা। কৌশিক বলছেন, ‘‘বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ধরে নিলেও, স্থায়ী সরকার তৈরি হবে কি না হলফ করে বলা কঠিন। এটা যে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি জানে না, তা মনে হয় না। তাই আমার আশঙ্কা, বাজার যে ভাবে উঠেছে তাতে সরকার গঠনের আগেই সংস্থাগুলি শেয়ার বিক্রি করে বেরিয়ে যেতে পারে। কারণ এই মুহূর্তে তারা ভাল মুনাফা করার জায়গায় রয়েছে। তখন বাজার আচমকা পড়বে। আগামী সপ্তাহেই বাজারে বড় মাপের সংশোধন হলে আমি অবাক হব না।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন