প্রতীকী ছবি।
জামাইষষ্ঠী পেরোতেই হু-হু করে কমছে আমের দাম। নামতে নামতে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে হিমসাগর থেকে ল্যাংড়া। এ বছর ফলন ভাল হওয়ায় বাজারে আমের সরবরাহে কোনও ঘাটতি নেই। ফলে মরসুমি ফলটির দর আরও হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর তাই মাথায় হাত পড়েছে আম চাষি থেকে ব্যবসায়ীদের।
ভারতে সর্বাধিক আমের ফলন হয় উত্তরপ্রদেশে। গত বছর সেখানকার জনপ্রিয় দশেরি আমের দাম ছিল কেজি প্রতি ৬০ টাকা। এ বার সেটা ৪২ থেকে ৪৮ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। ফলন বেশি হওয়ার কারণেই দাম নিম্নমুখী হয়েছে বলে জানিয়েছেন ‘আম চাষি সমিতি’র সভাপতি এস ইনসরাম আলি। আগামী দিনে দর ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার কোনও আশা নেই বলে স্পষ্ট করেছেন তিনি।
আম চাষি সমিতির দাবি, চলতি বছরে উত্তরপ্রদেশে ৩৫ লক্ষ টনে পৌঁছোতে পারে আমের ফলন। কারণ, রসালো ফলটির গাছগুলিতে খুব ভাল বোল এসেছে। গত বছর (পড়ুন ২০২৪) এই রাজ্যে আমের ফলনের পরিমাণ ছিল ২৫ লক্ষ মেট্রিক টন। আলি বলেছেন, ‘‘ফি বছর অতি বৃষ্টির জেরে চাষিরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হন। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ বার জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বেশি বৃষ্টি হবে। সেই কারণে এ বছর আম বাগানগুলির তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি।’’
এ ছাড়া প্রতি বছর মে-জুন মাসে হওয়া কালবৈশাখীতেও আম চাষের ব্যাপক লোকসান হয়। ঝড়ের দাপটে নষ্ট হয় প্রচুর আমের বোল। আলির কথায়, ‘‘এ বার সেটা কম হওয়ায় বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে চাষিরা আম পেড়ে নিতে পেরেছেন। এখনও কিছু আম গাছে রয়ে গিয়েছে। সেগুলি নামিয়ে এনে বাজারে পাঠানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। ফলে চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও সরবরাহে ঘাটতি হবে না। কিন্তু বাম্পার ফলন হওয়ায় দামের সূচক নেমে গিয়েছে।’’
উত্তরপ্রদেশের পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি এবং চিত্তুর জেলায় হওয়া তোতাপুরি আমের জনপ্রিয়তা রয়েছে। এই আমের দামও এ বছর বেশ কম। বাংলার মূল আম উৎপাদনকারী জেলা হল মালদহ এবং মুর্শিদাবাদ। সেখানকার আম ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলার আম সাধারণত কেজিতে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়। এ বার সেটা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে কিনতে পারছে আমজনতা।
গত বছর (পড়ুন ২০২৪) সারা বিশ্বে আমের ফলন ছিল ২ কোটি ৫০ লক্ষ মেট্রিক টন। এর অর্ধেক ফলন হয় ভারত। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে ছিল চিন এবং ইন্দোনেশিয়া। এই দুই দেশে আমের ফলনের পরিমাণ ছিল ৩৮ লক্ষ এবং ৩৬ লক্ষ মেট্রিক টন।