সেভিংস অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম টাকা জমা (মিনিমাম ব্যালান্স) না রাখলে গুনতে হওয়া জরিমানার অঙ্ক ৭৫% পর্যন্ত কমিয়ে দিল স্টেট ব্যাঙ্ক। এখন জরিমানা মাসে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু আগামী ১ এপ্রিল থেকে তা কমিয়ে ৫ থেকে ১৫ টাকার মধ্যে রাখছে তারা। তবে শহর, আধা শহর বা গ্রাম— কোথাও ওই ন্যূনতম জমার পরিমাণ কমায়নি দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্কটি। উল্লেখ্য, গত এপ্রিল থেকে এ বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মাসে গড় ন্যূনতম জমা না থাকায় ৪১.১৬ লক্ষ সেভিংস অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে তারা।
গত বছর ১ এপ্রিল থেকে সেভিংস অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম টাকা জমা রাখার ওই শর্ত আরোপ করে স্টেট ব্যাঙ্ক। ঠিক হয়, অঞ্চলের ভিত্তিতে মাসে ওই গড় জমার অঙ্ক হবে ১,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত। অন্তত ওই পরিমাণ টাকা অ্যাকাউন্টে না রাখলে, গ্রাহকদের থেকে জরিমানা নেওয়ার কথাও ঘোষণা করে তারা। কিন্তু গোড়া থেকেই তা নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। চাপ তৈরি হতে থাকে নিয়ম শিথিল করার। শেষ পর্যন্ত গত সেপ্টেম্বরে সেই জমার অঙ্ক কিছুটা কমানো হয়।
কিন্তু ক্ষোভ কমেনি। এখন মেট্রো সমেত বিভিন্ন শহর, আধা শহর এবং গ্রামে ওই জমার অঙ্ক যথাক্রমে তিন হাজার, দু’হাজার, এক হাজার টাকা। গ্রাহকদের বক্তব্য, একে ওই ন্যূনতম জমা অনেকের পক্ষে যথেষ্ট বেশি। তার উপর তা না মানলে জরিমানাও চড়া। ক্ষোভ আরও মাথাচাড়া দেয় অর্থ মন্ত্রকের হিসেবে। দেখা গিয়েছিল, গত বছর এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে শুধু ওই জরিমানা বাবদ ব্যাঙ্কের আয় হয়েছে ১,৭৭১.৬৭ কোটি টাকা। যা দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে তাদের মুনাফার থেকে বেশি। অনেকে মনে করছেন, সব মিলিয়ে গ্রাহকদের ক্রমশ বাড়তে থাকা ক্ষোভ আর প্রবল চাপের মুখে অবশেষে জরিমানা কমাল তারা।
স্টেট ব্যাঙ্কের অবশ্য দাবি, গ্রাহক স্বার্থ ও তাঁদের চাহিদা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত। তবে এখন অঙ্ক কমালেও গত মাসেই জরিমানার পদ্ধতি বহাল রাখার পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন চেয়ারম্যান রজনীশ কুমার। তাঁর মতে, একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট পরিচালনার খরচ অনেক। কেউ তার ডেবিট কার্ড অন্য ব্যাঙ্কের এটিএমে এক বার ব্যবহার করলেই স্টেট ব্যাঙ্ককে গুনতে হয় ১৭ টাকা। তাই বছরে শুধু এটিএম কার্ডেই খরচ ১,৫০০ কোটি। এই পরিস্থিতিতে সবাই সব পরিষেবা নিখরচায় চাইলে, গুণমান কী ভাবে ঠিক রাখা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি।