ডায়াবেটিকদের কোন শারীরিক সমস্যা অবহেলা করলেই বিপদ? ছবি: সংগৃহীত।
ডায়াবিটিসের রোগী এখন ঘরে ঘরে। যাঁরা নিয়মিত এই রোগের ওষুধ খান, তাঁদের অনেক সময়েই রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যেমন খারাপ, তেমনই তা মাত্রাতিরিক্ত কমে যাওয়াও কিন্তু বিপজ্জনক। রক্তে শর্করার পরিমাণ অনেকটা কমে গেলে তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় ‘হাইপোগ্লাইসেমিয়া’ বলা হয়। এই সমস্যায় কেউ আক্রান্ত হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হয়। না হলে যখন তখন বড় বিপদ ঘটে যেতে পারে।
হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সমস্যা থেকে হৃদ্রোগ থেকে শুরু করে, আরও বড় শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এমনকি, কেউ কোমাতেও চলে যেতে পারেন। তাই নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রার দিকে খেয়াল রাখা দরকার। দিল্লি নিবাসী চিকিৎসক বৃজমোহন অরোরা বলেন, ‘‘যাঁদের সুগার থাকে, তাঁদের সবার ক্ষেত্রেই হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি থাকে। শর্করার মাত্রা ৭০ একক বা তার নীচে নেমে গেলেই সাবধান হতে হবে। সুগারের রোগীরা অনেক সময়েই এই সমস্যাকে অবহেলা করেন। তবে এর ফল কিন্তু মারাত্মক হতে পারে। যে সব ডায়াবেটিক রোগী ইনসুলিন নেন, ভারী শরীরচর্চা করেন, সঠিক সময় খাওয়াদাওয়া করেন না, তাঁদের হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি বেশি।’’
শারীরিক কিছু লক্ষণ দেখলেই বোঝা যায়, রক্তে শর্করার মাত্রা বেশ কমেছে। জেনে নিন চিকিৎসকের মতে কোন কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন?
১) হাত-পা কাঁপা
২) হঠাৎ শীত করা বা ঘাম হওয়া
৩) হৃদ্যন্ত্রের গতি বেড়ে যাওয়া
৪) খিদে পাওয়া
৫) বমি পাওয়া এবং তার সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হওয়া
৬) দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যাওয়া
৭) মাথা ব্যথা, দুর্বল লাগা
৮) কথা জড়িয়ে যাওয়া
৯) অনেক ক্ষেত্রে রোগী অজ্ঞানও হয়ে যান
রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গেলে কী করবেন?
এ ক্ষেত্রে চিকিৎসক দু’টি নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। চিকিৎসক বলেন, ‘‘হাইপোগ্লাইসেমিয়া সমস্যা শুরু হলে ‘র্যাপিড অ্যাকটিং সুগার’ আর ‘স্লো অ্যাক্টিং সুগার’-এর সাহায্য পরিস্থিতির সামাল দেওয়া সম্ভব। ‘র্যাপিড অ্যাকটিং সুগার’-এর ক্ষেত্রে ফলের টাটকা বানানো রস কিংবা ৩ চামচ গ্লুকোজ় মেশানো জল খেতে হবে। তার পরে ‘স্লো অ্যাক্টিং সুগার’ হিসাবে এক বা দু’ টুকরো পাউরুটি খেতে হবে। একটি পাউরুটিতে ১৫ গ্রাম ‘স্লো অ্যাক্টিং সুগার’ থাকে। পাউরুটি না থাকলে রুটিও খাওয়া যেতে পারে। ‘র্যাপিড অ্যাক্টিং সুগার’-এর প্রভাব শরীরে থাকবে ১৫ মিনিট মতো আর ‘স্লো অ্যাক্টিং সুগার’-এর প্রভাব শরীরে থাকবে দু’থেকে তিন ঘণ্টা। এই সময় আপনি চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেন।
এ সব মেনেও যদি লাভ না হয়, তখন দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।