রাজ্যে অঙ্গদান নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে এ বার এগিয়ে এল শিল্পমহল।
বণিকসভা বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স পশ্চিমবঙ্গে অঙ্গদান ও প্রতিস্থাপন সম্পর্কে আগ্রহ তৈরি করার ডাক দিয়েছে নিজের সদস্যদের। যাতে অন্যদের এ কাজে আহ্বান জানানোর আগে নিজেরা অঙ্গীকারবদ্ধ হতে পারেন। তালিকায় রয়েছেন শিল্প-কর্তা, চিকিৎসক-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের পেশাদার।
এই কর্মসূচির দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক অমিত ঘোষ জানান, এ ভাবে দৃষ্টান্ত তৈরি করে এগোতে পারলে সাধারণ মানুষের কাছে বিষয়টি সহজেই গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে। সচেতনতা গড়ে তোলা কঠিন হয় না। তাঁর দাবি, এ ব্যাপারে দেশে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা রাজ্য তামিলনাড়ুতেও মানুষ এ রকম উদাহরণ দেখেই এগিয়েছেন।
দেশ জুড়ে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষার লাইন দীর্ঘতর হচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, দেশে এখন এ ধরনের রোগী ১.৬০ কোটি। সংখ্যাটা দিনকে দিন বাড়ছে। অথচ চাহিদার সঙ্গে অঙ্গ জোগানে বিস্তর ফারাক। মাত্র ১২ হাজার মানুষ অঙ্গদানে অঙ্গীকারবদ্ধ। অমিতবাবু জানান, শুধু কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্যই বছরে ২ লক্ষ নতুন রোগী তালিকায় যুক্ত হচ্ছেন। প্রতিস্থাপনের অভাবে ডায়ালিসিস ও অন্যান্য খরচসাপেক্ষ চিকিৎসা করাতে হচ্ছে তাঁদের। আর এই ফারাক কমাতেই পথ দেখিয়েছে তামিলনাড়ু। রাজ্যটিতে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দানের আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। যার কৃতিত্ব লাগাতার সচেতনতা কর্মসূচিকেই দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট মহল।
অমিতবাবুর দাবি, ব্রেন ডেথ (মস্তিষ্কের মৃত্যু) ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা গেলে বেশি জীবন বাঁচানো যায়। তাঁর কথায়, ‘‘পথ দুর্ঘটনার সংখ্যার নিরিখে রাশিয়ার পরেই ভারত। গত বছর এক লক্ষেরও বেশি মানুষ এতে মারা গিয়েছেন। বহু ক্ষেত্রে প্রতিস্থাপনের সুযোগ ছিল। কিন্তু সচেতনতার অভাবে তা কাজে লাগেনি।’’
তবে ছবিটা একটু একটু করে বদলাচ্ছে। তামিলনাড়ুর পথ ধরে তৈরি হচ্ছে এ রাজ্যও। একেই আরও দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী শিল্পমহল।
যেমন, বসিরহাটে দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন সেখানকার জামরুলতলা এলাকার বাসিন্দা স্বর্ণেন্দু রায়। বসিরহাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার পরে স্বর্ণেন্দুকে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা ওই তরুণের ব্রেন ডেথ হয়েছে জানানোর পরেই স্বর্ণেন্দুর বাবা চন্দ্রশেখর রায় জানিয়েছিলেন, সন্তানের বিভিন্ন অঙ্গদানে আগ্রহী তাঁরা।