প্রবেশ: সভায় ঢোকার মুখে মুকেশ ও নীতা অম্বানী। ছবি: পিটিআই
বাইশ মাস আগে ‘ডেটাগিরি’র মন্ত্রে দেশে টেলি পরিষেবার বাজারের নক্শা আমূল বদলে দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সংস্থা রিলায়্যান্স জিয়োর হাত ধরে শুরু হয়েছিল মোবাইলে দ্রুত গতির নেট পরিষেবা দেওয়ার লড়াই। মাসুলের কুস্তি। এ বার ব্রডব্যান্ড পরিষেবাতেও একই রকম পরিবর্তনের ঢেউ আনার ইঙ্গিত দিলেন রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর কর্ণধার মুকেশ অম্বানী।
বৃহস্পতিবার রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজের বার্ষিক সাধারণ সভায় মুকেশ জানালেন, ১,১০০ শহরে দ্রুত গতির তারযুক্ত ব্রডব্যান্ড (ফাইবার টু দ্য হোম বা এফটিটিএইচ) নিয়ে ঢুকে পড়তে চায় তাঁর সংস্থা। সেঁধিয়ে যেতে চায় ছোট সংস্থা, ব্যবসায়ীর বিপণি এমনকি বাড়ির ড্রইংরুমে। যাতে ব্যবসা করার ধরন থেকে শুরু করে বাড়িতে বিনোদন— প্রায় সব কিছুই বদলে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। যখন তিনি এ কথা বলছেন, তখন সামনে পুরো পরিবার। স্ত্রী, দুই পুত্র, কন্যা, প্রথম বার সভায় আসা হবু পুত্রবধূ শ্লোক মেটাও।
ভো়ডাফোন, এয়ারটেল, বিএসএনএলের পরে রিলায়্যান্সও যে এই বাজারে পা রাখবে, সেই জল্পনা ছিলই। তাই এই ঘোষণা চমক নয়। কিন্তু যে বিপুল লগ্নিতে এবং কলেবরে রিলায়্যান্স বরাবর কোনও ব্যবসায় পা রাখে, এ ক্ষেত্রেও সেটিই পার্থক্য গড়ে দিতে পারে বলে ধারণা অনেকের। খোদ মুকেশও বলেছেন, ডিজিটাল পরিকাঠামোয় ২.৫ লক্ষ কোটি টাকা ঢেলে তবে এই ব্যবসায় আসার কথা।
জিয়োর ফাইবার ব্রডব্যান্ডের সঙ্গে টিভির জন্য সেট-টপ বক্স দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, ছোট কেব্ল সংস্থার দিন কি তবে শেষ? মোবাইলের মতো মাসুল যুদ্ধ হলে কি টিকতে পারবে তারা? অনেকের আশঙ্কা, নতুন লড়াইয়ে ক্ষতির আরও ধাক্কা সামাল দিতে হবে টেলি শিল্পকে।
রিটেল ও বিনোদনের ক্ষেত্রকেও বদলানোর ইঙ্গিত মুকেশের কথায়। তাঁর ‘নিউ কমার্স প্ল্যাটফর্ম’ তৈরির ঘোষণায় তাই জল্পনা, এ বার লড়াই কি অ্যামাজন, ওয়ালমার্টের সঙ্গেও?
বছর কয়েক আগে এফটিটিএইচ চালু হলেও, তা তেমন জনপ্রিয় হয়নি। সেই ছবিও কি পাল্টাবে?
ফের বদলের সুনামি? রক্তক্ষয়ী মাসুল যুদ্ধ? শুরু রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা।