ব্যাঙ্কের স্বার্থ বলি দিয়ে ঋণ নয় পরিকাঠামোয়, সওয়াল রাজনের

পরিকাঠামো নির্মাণে জোর দেওয়া অবশ্যই জরুরি। কিন্তু একই সঙ্গে দেখা দরকার যে, তার জন্য বিপুল ঋণ জোগাতে গিয়ে দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় যেন চিড় না-ধরে। টাল না-খায় আর্থিক স্থিতি। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ৮০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে এই বার্তাই কেন্দ্রের ঘরে পৌঁছে দিলেন গভর্নর রঘুরাম রাজন। মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির উপস্থিতিতে করা তাঁর এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৫৩
Share:

পরিকাঠামো নির্মাণে জোর দেওয়া অবশ্যই জরুরি। কিন্তু একই সঙ্গে দেখা দরকার যে, তার জন্য বিপুল ঋণ জোগাতে গিয়ে দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় যেন চিড় না-ধরে। টাল না-খায় আর্থিক স্থিতি। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ৮০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে এই বার্তাই কেন্দ্রের ঘরে পৌঁছে দিলেন গভর্নর রঘুরাম রাজন। মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির উপস্থিতিতে করা তাঁর এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে।

Advertisement

রাজন বলেন, পরিকাঠামো গড়তে যে বিপুল লগ্নি প্রয়োজন, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু ইতিমধ্যেই এই ক্ষেত্রে প্রচুর টাকা ধার দিয়েছে এখানকার অধিকাংশ ব্যাঙ্ক। বিপুল ঋণ নিয়েছে পরিকাঠামো নির্মাণ সংস্থাগুলি। তাঁর মতে, পরিকাঠামো পোক্ত করতে গিয়ে দেশের ব্যাঙ্কিং পরিষেবা যাতে নড়বড়ে হয়ে না-পড়ে, সে কথা মাথায় রাখতে হবে। শুধু ব্যাঙ্ক ঋণের ভরসায় না-থেকে টাকা জোগাড়ের বিকল্প রাস্তা খুঁজতে হবে পরিকাঠামো নির্মাতাদের।

দিল্লির মসনদে বসার পর থেকেই পরিকাঠামোয় জোর দেওয়ার কথা বারবার বলেছেন মোদী। ২০১৭ সালের মধ্যে ওই ক্ষেত্রে প্রায় ৬২ লক্ষ কোটি টাকা লগ্নি টানার কথা বলেছে তাঁর সরকার, যার অর্ধেক আসার কথা বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে। বাজেটে এ বিষয়ে জোর দিয়েছেন জেটলিও। তাই এই পরিস্থিতিতে পরিকাঠামো নির্মাতাদের ঢালাও ঋণ দিতে গিয়ে ব্যাঙ্কগুলির হাল যাতে খারাপ না-হয়, তা নিয়ে রাজনের সাবধানবাণীকে গুরুত্ব দিচ্ছেন সকলে। বিশেষত যেখানে অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা চেপে রয়েছে অধিকাংশ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ঘাড়ে।

Advertisement

অনুষ্ঠানে অবশ্য রাজনের ঢালাও প্রশংসা করেছেন মোদী। সুদ কমানো থেকে শুরু করে ঋণপত্রের নিয়ন্ত্রণ— বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কেন্দ্র ও শীর্ষ ব্যাঙ্কের মতান্তরের নানা খবর মাঝেমধ্যেই সামনে এসেছে। এ দিন সে সব কার্যত উড়িয়ে দিতেই রাজনকে কখনও ‘অনবদ্য’, কখনও ‘ভাল শিক্ষক’-এর তকমা দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে সওয়াল করেছেন, দেশের প্রতিটি প্রান্তে সমস্ত মানুষের দরজায় ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ঠিক করুক নির্দিষ্ট সময়সীমা। আরও বেশি ধার দিক গরিব মানুষ, বিশেষত চাষিদের। মোদীর প্রশ্ন, ‘‘কৃষকের আত্মহত্যা কি ব্যাঙ্কের বিবেক আর হৃদয়কেও নাড়া দেয় না?’’

প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে দেশে তৈরি কাগজ-কালিতেই নোট ছাপুক শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তাঁর কথায়, ‘‘যে গাঁধীজি স্বদেশি আন্দোলনের সাধক, নোটে তাঁর মুখই কি না ছাপা হয় আমদানি করা কাগজে!’’ শীর্ষ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর এস এস মুন্দ্রা অবশ্য পরে জানান, এই কাগজ তৈরির কারখানার কাজ অনেকটা এগিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন