আগামী ১ এপ্রিল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে মাসুলের ‘কুস্তি শুরু’র কথা আগেই ঘোষণা করেছিল রিলায়্যান্স জিও। সেই পথে আর এক ধাপ এগিয়ে বুধবার নিজেদের মাসুলের খুঁটিনাটি জানিয়ে দিল তারা। প্রতিশ্রুতি মতো নিখরচায় কথা বলা আর ঢালাও ডেটার সুবিধা সেখানে রয়েছে। কিন্তু তা দেখে টেলিকম শিল্পের একাংশের বক্তব্য, দীর্ঘ মেয়াদে এই মাসুলে ব্যবসা করা যে কোনও সংস্থার পক্ষেই শক্ত। আসলে প্রতিযোগীদের বাজার থেকে ছিটকে দিতেই এই পথে হাঁটছে জিও।
২১ ফেব্রুয়ারি জিও জানিয়েছিল, যাঁরা ইতিমধ্যে তাদের সংযোগ নিয়েছেন কিংবা ৩১ মার্চের মধ্যে নেবেন, একগুচ্ছ সুবিধা তোলা থাকবে তাঁদের জন্য। তার জন্য চলতি মাসের মধ্যে ৯৯ টাকা দিয়ে এক বছরের জন্য সদস্য হতে হবে ‘জিও-প্রাইম’ প্রকল্পে। এ দিন মুকেশ অম্বানীর সংস্থার ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে, ওই প্রকল্পের সদস্য হওয়া-না হওয়ার মধ্যে ফারাক অনেকখানি। ১৯ থেকে ৯,৯৯৯ টাকার যে সমস্ত রিচার্জ-প্যাকেজ জিও ঘোষণা করেছে, তার প্রতিটিতেই দু’ধরনের গ্রাহক পরিষেবার মধ্যে পার্থক্য যথেষ্ট।
যেমন, ২৮ দিনের জন্য ৩০৩ টাকার রিচার্জে জিও-প্রাইমের সদস্যরা পাবেন দিনে ১ জিবি করে ৪জি ডেটা (মোট ২৮ জিবি)। দেশের যে কোনও জায়গায় মোবাইলে কথা বলা যাবে নিখররচায়। সেখানে যাঁরা সদস্য না হয়ে ওই একই টাকার রিচার্জ করবেন, তাঁরা পাবেন মোট ২.৫ জিবি ৪জি ডেটা। ৪৯৯ টাকার রিচার্জে এই ফারাক ৫৬ ও ৫ জিবির।
গতকালই এয়ারটেল কর্ণধার সুনীল ভারতী মিত্তল বলেছিলেন, জিও যে ধরনের মাসুলের কথা বলছে, যে কোনও সংস্থার পক্ষেই দীর্ঘ মেয়াদে তা দিয়ে পরিষেবা চালিয়ে যাওয়া কঠিন। এ দিন মুকেশের সংস্থার মাসুল ঘোষণার পরে সরাসরি তা নিয়ে মন্তব্য করেনি ভোডাফোন, এয়ারটেল, আইডিয়া। কিন্তু কয়েকটি বিষয় তাদের নজর কেড়েছে।
যেমন, টেলিকম শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অনেকে বলছেন, জিও-প্রাইমের সদস্য যাঁরা হবেন না, তাঁদেরও ভাল পরিমাণ ডেটা দেওয়ার কথা বলেছে জিও।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা বাকি সংস্থাগুলির থেকে বেশি। কিন্তু তেমনই প্রাইম সদস্যদের সঙ্গে তার ফারাক বিপুল। তাঁদের প্রশ্ন, তবে কি ২০১৮ সালে ওই সদস্যপদের মেয়াদ শেষ হলে, তাঁদেরও বাকিদের মতোই ডেটা দেবে জিও? অনেকের আবার অভিযোগ, আসলে মাসুলের লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীদের একেবারে রিংয়ের বাইরে ছিটকে দিতে চাইছে জিও। ইঙ্গিত, তারপরে মাসুল বাড়াবে তারা।
এখনও দেশে ৪জি মোবাইল বেশ কম। আর ২০১৮ সালে বোঝা যাবে দীর্ঘ মেয়াদে মাসুল আসলে কেমন রাখবে জিও। মূলত এই দুই চিন্তা মাথায় রেখেই নিজেদের চাল ভাবছে বাকি সংস্থাগুলি।